প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ফেনীর সোনাগাজী থেকে সপ্তম শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে (১৬) ১৩ দিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ইয়াছিন আরাফাত (২০) নামে অভিযুক্ত এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২২ নভেম্বর) রাতে ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মাথিয়ারা এলাকা থেকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধারের পর যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।
পারিবারিক সূত্র জানায়, অপহরণের শিকার ওই কিশোরী একটি বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে উপজেলার বিষ্ণপুর এলাকার ফয়েজ আহাম্মদের ছেলে ইয়াছিন আরাফাত তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করছিলেন। বাড়িতে গিয়ে ছাত্রী বিষয়টি তার মাকে জানায়। তার মা ও পরিবারের সদস্যরা প্রতিকার চেয়ে বিষয়টি বখাটের বাবা-মাকে জানান। পরে ইয়াছিনকে তার মা-বাবা এমন কাজ থেকে বিরত থাকবে বলে। এরপর ইয়াছিন ক্ষিপ্ত হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে ছাত্রীকে বাড়ি গিয়ে অপহরণের হুমকি দেন। আবার ছাত্রীর মা ইয়াছিনের মা-বাবাকে বিষয়টি জানান। তারা ইয়াছিনকে ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করতে নিষেধ করেন।
৮ নভেম্বর দুপুরে বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুই বন্ধুর যোগসাজশে ওই ছাত্রীকে বখাটে ইয়াছিন অটোরিকশায় তুলে অপহরণ করে প্রথমে ফেনীর লালপোলে নিয়ে যান। সেখান থেকে প্রাইভেটকারে চট্টগ্রামের এক বন্ধুর বাসায় নিয়ে যান। ইয়াছিন বন্ধুর সহায়তায় রাতে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। ১৩ নভেম্বর ইয়াছিন ওই ছাত্রীকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে অপর এক বন্ধুর সহায়তায় কক্সবাজার সদর এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যান। পরে সেখানেও আটকে রেখে ধর্ষণ করে ইয়াছিন।
বুধবার সকালে আবারও ওই ছাত্রীকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ইয়াছিন একটি গাড়িতে কক্সবাজার থেকে ফেনীতে আসেন। ইয়াছিন গাড়ি থেকে নেমে ছাত্রীকে নিয়ে পাঁচগাছিয়া হয়ে অন্য জায়গায় চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ছাত্রী চিৎকার দিলে স্থানীয়রা দুজনকে আটক করেন। পুলিশ এসে তাদের থানায় নিয়ে যায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সোনাগাজী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এস আই) মো. জাহিদ হাসান বলেন, বুধবার দুপুরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ওই ছাত্রীর শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। বিকেলে তাকে ফেনীর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাতেমাতুজ্জোহরা মুনার আদালতে হাজির করে ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। জবানবন্দিতে তাকে ১৩ দিন আটকে রেখে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে বন্ধুদের সহায়তায় ইয়াছিন ধর্ষণ করেছে বলে আদালতে জানায়। আদালতের নির্দেশে মেয়েটিকে তার মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
এস আই আরও বলেন, এ ঘটনায় বুধবার সকালে ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ইয়াছিন (২০), তার সহযোগী সোহাগ হোসেন (২৪) ও মনির হোসেনকে (২৩) আসামি করে সোনাগাজী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। অভিযুক্তরা উপজেলার চর মজলিশপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর এলাকার বাসিন্দা।