সূলভ মূল্যের চাল পাওয়ার কার্ড থাকা শর্তেও ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ৪নং হলিধানী ইউনিয়নের ১৭৯জন হতদরিদ্রের চালের কার্ড চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে সময়মত অনলাইন না করে দেওয়ার কারণে তাদের চাল দেওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। এই অবস্থায় ১৭৯জন হতদরিদ্র ব্যক্তি সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে উপস্থিত হয়ে লিখিত আবেদন করেন। আবেদন পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম শাহীন মোবাইলের মাধ্যমে ইউপি সচিব এবং চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দিলেও তা অগ্রাহ্য করে হতদরিদ্র এই কার্ড অনলাইন করতে অপারগতা স্বীকার করে। পরে ইউএনও নিজে সোমবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হয়ে এসব হতদরিদ্রদের সূলভ মূল্যে চাল পাওয়ার কার্ড অন লাইন করার ব্যবস্থা করে। তিনি বলেন এই নিদের্শনা উপেক্ষা করলে চেয়ারম্যান, সচিব, উদ্যোক্তা এবং এর সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
ভুক্তভোগি একাধিক হতদরিদ্র ব্যক্তি জানান গত চেয়ার্যানের আমলে আমাদের এসব কার্ড হয়েছিল, নতুন চেয়ারম্যান এবং মেম্বররা দায়িত্ব পেয়ে তাদের পছন্দের লোকদের এই কার্ড করে দেওয়ার জন্য আমাদের কার্ড বাজেয়াপ্ত করার চেষ্টা করছে। আমরা যদি এই মাসের মধ্যে কার্ড অনলাইন না করি তাহলে আমাদের কার্ড বাতিল হয়ে যাবে বলেও তারা জানান।
নাটাবাড়িয়া গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক জামাল উদ্দীন বলেন আমি গত নির্বাচনে সাদ মেম্বরের পক্ষে কাজ করিনি বলে আমার কার্ড বাতিল করার চেষ্টা করছে। ইউনিয়নে আসলে তারা বাববার ফিরিয়ে দিচ্ছে এবং বলছে আগামী মাসে আসতে হবে।
এছাড়াও প্রতাপপুর গ্রামের প্রতিবন্ধী আনোয়ার হোসেন জানান আমি ইউনিয়নে বারা বার আসছি তার পরেও আমার কার্ড অনলাইন করে দেওয়া হচ্ছেনা হয়রানি দিচ্ছে। এরকম নাটাবাড়িয়া গ্রামের দিদার আলী, হাসেম রহমান, সোবহান আলী, আঃ গনি, কাশিপুর গ্রামের আনছার খা, মোহর আলী, আবু সুফিয়ান, আজিজুল কোলা গ্রামের ইমারুল মালিতা, মোস্তাক আহম্মেদ, রোকেয়া বেগম, ফারজানা বেগম, প্রতাপপুর গ্রামের শাহাজান ভূইয়া , জজ মিয়া, শহর আলী, আবু বক্কর, হাসান আলীসহ অনেকেই এসব ভোগান্তির কথা বলেন। তারা অনেকেই বলেন আমরা চেয়ারম্যানের ভোট দেয়নি এই অপরাধে আমাদের কার্ড বাতিল করে তাদের লোককে দেওয়ার পায়তারা করছে।
এবিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সাদ আহম্মেদ বলেন ইউনিয়নে অনেক কাজ উদ্যোক্তা খুব ব্যাস্ত অনলাইন করার সুযোগ পাওয়া যাচ্ছেনা না, এখন টিসিবির পন্য বিতরণ হচ্ছে এর পর ভোটের ছবি তোলার কাজ রয়েছে এসব শেষ হলে আগামী মাসের ২/৩ তারিখের পরে এই কার্ড গুলো অনলাইন করে দেওয়া হবে। এদের কার্ড বাতিল করা হয়নি। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজে ব্যস্ত থাকায় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে চায়নি। এবিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা তাইজুল ইসলাম জানান এই মাসের ভিতর অনলাইন না করলে এই কার্ড বতিল হয়ে যাবে। সবশেষে ইউএনও’র হস্তক্ষেপে সূলভ মুল্যে চাল পাওয়ার এই কার্ড গুলো সোমবার বিকাল থেকে অনলাইন কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
উল্লেখ যে, প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সহায়তার আওতায় সূলভ মূল্যের চাল আগে ১০টাকা কেজি দরে দেওয়া হতো এখন সেই চাল ১৫ টাকা কেজি দরে দরিদ্রদের মাঝে দেওয়া হচ্ছে। একজন হতদরিদ্র ব্যক্তি মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবে।