নিজস্ব প্রতিবেদক: জীবন জীবিকার তাকিদে তিনি পত্রিকা ফেরি করে বিক্রি করে পয়সা উপার্জন করেন তা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলা খারিয়াকান্দি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ লুৎফর রহমান আকন্দ। পিতা মৃত মোঃ মহিম আকন্দ। মাতা মৃত নুরজাহান। তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে হাওলাদার নফির উদ্দিনের মাধ্যমে যোগদান করেন তিনি মোল্লাপাড়া বর্ডার হয়ে ভারতে প্রবেশ করে ট্রেনিং গ্রহন করেন। পরে তারা পাঁচজনের একটি গ্রুপে চন্ডীপুর ফাঁসিপাড়া পাহারপুর শিবপুরে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন।
তিনি ভারতের ইয়োথক্যাম্পে বেশকিছু দিন ট্রেনিং নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন তিনি কমান্ডিং অফিসার রায় সিংয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপে অংশগ্রহণ করে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন । পাঁচজন মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে মোহাম্মদ ইব্রাহিম। মোহাম্মদ গোলাম মোর্শেদ। খলিল ও হাওলাদার নাফির উদ্দিন। সফির উদ্দিন এর অধীনে মহান মুক্তিযুদ্ধে ৫জনের একটি গ্রুপে অংশ নিয়ে সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে যুদ্ধ করেছেন।
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বরে দেশটি স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণা হবার পরে নওগাঁ জেলার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ২২/১২ /১৯৭১ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমান তৎকালীন কমান্ডিং অফিসার রায় সিংয়ের ও ভারতীয় হাই কমিশনারের উপস্থিতিতে নওগাঁ জেলায় অস্ত্র জমা করেছেন।
মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমান গ্রামের বাড়ি আদমদীঘি উপজেলার নশরৎপুর ইউপির খারিয়াকান্দি গ্রামে এসে আশ্রয় নিলে। সেখানে রাজাকার বাহিনীর পদচারনায তাদের চোখ ফাকি দিয়ে প্রান রক্ষায় আক্রমণ এবং হামলার ভয়ে তিনি দুপচাঁচিয়া উপজেলার আলতাফ নগর বালুকাপাড়া গ্রামে আশ্রয় গ্রহন করেন।
এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আদমদীঘি উপজেলা এবং দুপচাঁচিয়ায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন। কাঙ্খিত টাকা পযসা দিতে না পারার কারনে তালিকাভুক্ত হতে না পেরে আক্ষেপ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক নওগাঁ এর দপ্তরে যোগাযোগ করলে নওগাঁ জেলা প্রশাসক গত ১৬/৬/২০১১ খ্রিস্টাব্দে একটি পত্র ইস্যু করে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে নাম তালিকাভুক্ত করন ও সনদ প্রাপ্তির লক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নওগাঁ সদরকে পত্র প্রেরন করেন। যার স্মারক নং ২০১১( অংশ ১) ৮৪২ তারিখ ১৬/৬/২০১১ ইং।এক্ষুনি ওই মুক্তিযোদ্ধা শুধুমাত্র আদমদিঘী উপজেলার নশরৎপুর ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা হিসাবে জন্ম নিবন্ধন এবং ভোটার তালিকা অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার কারণে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা বঞ্চিত হয়েছেন মর্মে জানা গেছে তার সাথে কথা বলে।
এ বিষয়ে নশরৎপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান আমার এখানে নিবন্ধন ইস্যু করতে হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে তিনি ভোটারের আবেদন করতে পারবেন। ভোটার তালিকাভুক্ত হলে তিনি মুক্তিযুদ্ধের সনদ এবং ভাতা প্রাপ্য হতে পারেন বলে জানিয়েছেন নশরৎপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা।
একজন অসহায় মুক্তিযোদ্ধা জীবন জীবিকার তাগিদে তিনি দুপচাঁচিয়া পত্রিকা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ৫২ বছরেও মুক্তিযোদ্ধা এবং সনদপ্রাপ না হবার কারণে তিনি অসহায় জীবন যাপন করছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর যারা সম্মুখ যুদ্ধ করে স্বাধীন করে একটি পতাকা এনে দিয়েছেন তার প্রতি সম্মান জানিয়ে যথাশীঘ্রই ভাতা প্রদান এবং সনদ গ্যাজেট ভুক্ত করনের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতি আকুল আবেদন জানিয়েছেন।