স্টাফরিপোর্টার
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ভুইয়াগাঁতী উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনটি কর্মচারী পদে নিয়োগের আগেই নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আহসান হাবিব আসলাম ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে। এদিকে বুধবার(১৯ জুলাই) অনুষ্ঠিতব্য নিয়োগ পরীক্ষার আগেই সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাদের পছন্দের তিন প্রার্থীর নিকট থেকে চাকরি দেওয়ার বন্দোবস্ত করে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় ওই এলাকার সাধারণ জনগণসহ কাঙ্খীত পদের প্রার্থীদের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এতে পাতানো নিয়োগ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। ফলে সংঘাত এড়াতে এলাকাবাসী পাতানো নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
কাঙ্খীতপদের প্রার্থীসহ স্থানীয়দের অভিযোগে জানাগেছে,আগামী ১৯ জুলাই বুধবার সকাল ১০টায় রায়গঞ্জ উপজেলার ভুইয়াগাঁতী উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক,নিরাপত্তাকর্মী ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর তিনটি পদে পাতানো নিয়োগ পরীক্ষার দিনক্ষণ ধার্য্য করা হয়েছে। এদিকে নিয়োগের আগেই বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আহসান হাবিব আসলাম ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান পরস্পর যোগসাজসে ওই তিনটি পদের বিপরীতে তাদের পছন্দের তিন প্রার্থীকে চুড়ান্ত করেছেন এবং প্রতি পদের জন্য ১৫ লাখ টাকা হিসেবে তিনটি পদের বিপরীতে সেই তিন প্রার্থীর নিকট থেকে ৪৫ লাখ টাকা অগ্রিম নিয়েছেন। সেইসাথে তাদের নিয়োগ দানের জন্য অতিগোপনীয়ভাবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলামকে ম্যানেজ করে তার মাধ্যমে ডিজির প্রতিনিধি মনোনীত করে ১৯ জুলাই বুধবার সকাল ১০টায় বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষার দিনক্ষণ ধার্য্য করেছেন। কিন্তু নিয়োগের তারিখ নির্ধারণের বিষয়ে জানেন না ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যসহ শিক্ষকরা। এদিকে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের জন্য সোমবার (১৭ জুলাই) প্রার্থীদের মাঝে প্রবেশপত্র বিতরণ করার পর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। কিন্তু প্রবেশপত্র বিতরণের আগে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও শিক্ষকবৃন্দসহ এলাকার কেউই জানতেন না নিয়োগ পরীক্ষার কথা। শুধু বিদ্যালয়ের সভাপতি আহসান হাবিব আসলাম ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে সুকৌশলে নিয়োগ পরীক্ষার দিনক্ষণ নির্ধারণ করেছেন। এদিকে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থী চূড়ান্তের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে অগ্রিম হিসেবে তিন প্রার্থীর নিকট থেকে ৪৫ লাখ টাকার বাণিজ্য করে পরীক্ষার আগেই প্রার্থী চুড়ান্ত করায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ফলে আগামী বুধবার(১৯ জুলাই)পাতানো নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করার জন্য স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন বিদ্যালয় হিতৈষী ব্যক্তিবর্গসহ এলাকাবাসী।
এব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কাজি সলিম উল্লাহ’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কর্মচারী পদের নিয়োগে অর্থ বাণিজ্যের কথা শুনে থমকে যান এবং তিনি বলেন নিয়োগে কোন অনিয়ম চলবেনা,নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এব্যাপারে রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান,বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এব্যাপারে স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো.আব্দুল আজিজ বলেন, এঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হবে। তবে বিষয়ে খতিয়ে দেখে তদন্তপুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রায়গঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।