জনতা ব্যাংকের সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর শাখার পরিচ্ছন্নতাকর্মী আওলাদ হোসেন রঞ্জু গ্রাহকদের প্রায় ২২ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ব্যাংকে ভিড় জমিয়েছেন ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। রঞ্জু টাকা জমা ও উত্তোলন করে দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের এই টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
তবে রঞ্জুর মায়ের দাবি-রঞ্জুকে ১৫ দিনের ছুটি দিয়ে বাহিরে চলে যেতে বলেছেন ব্যাংকের ম্যানেজার জেহাদুল ইসলাম।
এদিকে এ ঘটনায় শাহজাদপুর থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ব্যাংকটির শাহজাদপুর শাখার ম্যানেজার জেহাদুল ইসলাম। অভিযুক্তকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছে শাহজাদপুর থানা পুলিশ। তবে সোমবার (১০ জুলাই) ব্যাংকের ম্যানেজারকে ব্যাংকে পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় ইতোমধ্যে জনতা ব্যাংকের সিরাজগঞ্জের উপ মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম), রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপকসহ অডিট বিভাগের কর্মকর্তারা ব্যাংকে এসে তদন্ত কাজ শুরু করেছেন’। ঢাকা থেকে স্পেশাল টিমও আসছে বলে জানা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আওলাদ হোসেন রঞ্জু দৈনিক মজুরিভিত্তিতে প্রায় ১৮ বছর আগে জনতা ব্যাংকের শাহজাদপুর শাখায় পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে যোগদান করেন। তিনি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হলেও তার আলাদা ডেস্ক ছিল। ব্যাংকে ঢুকতেই বাম পাশে ছিল তার অন্যান্য অফিসারদের মতো ডেস্ক। সেখানে বসেই ব্যাংকের লেনদেনের প্রায় অনেকটাই একাই করতেন। ব্যাংকে টাকা জমা দিতে বা উত্তোলন করতে কেউ ঢুকলেই তাকে আন্তরিকতার সঙ্গে ডেকে নিতেন রঞ্জু। তাকে বসিয়ে রেখে করে দিতেন সব কাজ। তার আন্তরিকতায় গ্রামের সহজ-সরল মানুষগুলো তাকে বিশ্বাস করতেন। তার আন্তরিকতা আর গ্রাহকদের সরলতাই ছিল তার প্রধান অস্ত্র।
রঞ্জু ব্যাংকের স্টাফ ও গ্রাহকদের কাছে নিজেকে পরিচয় দিতেন ব্যাংকের এক পরিচালকের কাছের আত্মীয় হিসেবে। তিনি গ্রাহকরা ব্যাংকে ঢোকামাত্রই বসতে দিতেন তার ডেস্কে। গ্রাহকদের বসিয়ে রেখে তাদের কাছ থেকে কৌশলে নিয়ে নিতেন কয়েকটা স্বাক্ষর। কারো কারো কাছ থেকে আবার টাকা জমা দেওয়ার সময়েই টাকা উত্তোলনের চেকে স্বাক্ষর নিয়ে নিতেন। বলতেন-এটা নতুন নিয়ম। আর এসব গ্রাহকের বেশিরভাগই অশিক্ষিত ও অসচেতন। এভাবেই নানা কৌশলে লুটে নিয়েছেন গ্রাহকদের কয়েক লাখ টাকা।
উপজেলার বাঘাবাড়ি টিআর বন্দর এলাকার বাসিন্দা শিখা খাতুন। থাকেন সাভারে। চাকরি করেন এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তিনি জানান এই ব্যাংকে ২০১৯ সাল থেকে লেনদেন করে আসছেন তিনি। তাকে বোন বানিয়েছিলেন অভিযুক্ত রঞ্জু। এই সুবাধে শিখার সব লেনদেন রঞ্জুই করতেন। প্রায় প্রতিনিয়ত মুঠোফোনে শিখার কথাও হতো রঞ্জুর সঙ্গে। কিন্তু শিখার মোবাইল ফোনে লেনদেনের কোনো এসএমএস আসতো না। জিজ্ঞাসা করলে রঞ্জু বলতেন পরে আসবে।
এভাবে লেনদেনের একপর্যায়ে শিখা গত রোববার থেকে রঞ্জুর ফোন বন্ধ পান। কয়েকদিন টানা ফোন বন্ধ পেয়ে শিখার সন্দেহ হয়। তিনি ব্যাংকে এসে খোঁজ নেন। পরে তিনি দেখেন তার অ্যাকাউন্টে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র দুই হাজার টাকা। এখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে-তারা দেখছে বিষয়টি। এছাড়া পুলিশও তদন্ত করছে বিষয়টি। তবে এই কাজ রঞ্জুর একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। তার সঙ্গে ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তারাও জড়িত।
শিখা বলেন, আমার জামাতারও একই অবস্থা হয়েছে। তারও ব্যাংকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা জমা ছিল’। এখন দেখা যাচ্ছে তার একাউন্টেও কোনো টাকা নেই। আমরা বাধ্য হয়ে আসি রঞ্জুর বাড়ি, একবার ব্যাংকে দৌড়াদৌড়ি করছি।
শাহজাদপুর পৌরসভার মির্জা আরিফ নামে এক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বলেন, আমার ভাই বিদেশ থাকেন। সেখান থেকে তিনি আমার ভাবির অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠান। শাকিলা ইয়াসমিন নামে ভাবির অ্যাকাউন্টে ১২ লাখ টাকা ছিল। এখন অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বললে তারা বিস্তারিত শুনে কত টাকা গিয়েছে তা লিখে নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, রঞ্জুর ব্যবহার খুব আন্তরিক ছিল। কেউ কখনো বুঝতেই পারেনি এমন হবে। ব্যাংকে ঢোকার পরেই বাম পাশে তার টেবিল ছিল। লোকজন গেলেই তাদের বসতে দিয়ে সে টাকা-পয়সার সব কাজ করে দিত।
উপজেলার পাননাথপুর এলাকার আমির হোসেনের স্ত্রী লালবি খাতুন। তার স্বামী আমির হোসেন থাকেন সৌদি আরব। প্রবাস থেকে স্বামীর পাঠানো সব টাকা আসতো এই ব্যাংকেই। এখন সব খুইয়ে দিশেহারা পুরো পরিবার।
লাইনি বলেন, আমি ব্যাংকে টাকা রেখেছি। কিন্তু টাকা তুলতে গিয়ে দেখি অ্যাকাউন্টে এক টাকাও নেই, অ্যাকাউন্টে ৮ লাখ ৩০ হাজার ৮২২ টাকা ছিল।
তিনি বলেন, স্বামী বিদেশ থেকে প্রতি মাসে টাকা পাঠাতেন। কিন্তু আমার ফোনে মেসেজ আসতো না। স্বামী ফোন দিয়ে বলতো যে টাকা পাঠিয়েছি। পরে আমার যখন টাকা দরকার হতো তা তুলতে আসতাম। আসার পরে ব্যাংকে পা দিতেই রঞ্জু ডেকে নিতো’ বলতো কি করা লাগবে বলেন, আমি করে দিচ্ছি। তারপর আমি বলতাম যে, আমার ২০ হাজার টাকা তোলা লাগবে। কারণে ২০ হাজার টাকাই আমার মাসের সংসার খরচ। সে ২০ হাজার টাকাই লিখতো এবং সেই টাকা তুলে আমাকে দিত। কিন্তু তারপরও সে কীভাবে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিত আমি জানি না।
রঞ্জুর খোঁজে শাহজাদপুর পৌরসভার পাড়কোলা গ্রামে গিয়ে জানা যায়, রঞ্জু পাড়কোলা গ্রামের মৃত নুরুল আকন্দের ছেলে। ৫ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে রঞ্জু ৪ নম্বর। আনুমানিক ১৭-১৮ বছর হলো তিনি জনতা ব্যাংকে চাকরি করেন। তার বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। পাওয়া যায়নি তার স্ত্রী-সন্তানদেরও। সেখানে গিয়ে কথা হয় তার দুই প্রতিবেশী ও রঞ্জুর মা আনোয়ারা খাতুনের সঙ্গে।
রঞ্জুর প্রতিবেশী তাঁত ব্যবসায়ী শাহিন বলেন, শুনছি অনেক মানুষেরই টাকা জমা দেওয়ার কথা বলে সেসব টাকা নাকি আত্মসাৎ করেছে রঞ্জু। অনেকেই টাকা-পয়সা রাখছে, আবার অনেকের বিদেশ থেকে টাকা-পয়সা আসছে। এরা সবাই রঞ্জুর মাধ্যমে লেনদেন করতেন। কয়েকদিন হলো অনেক লোক আসছে রঞ্জুর বাড়িতে। যাদের কয়েক লাখ টাকা নাকি মেরে দিয়েছে রঞ্জু। কিন্তু এতো টাকা মেরে দিয়ে সে কি করলো সেটাই আমরা বুঝতে পারছি না
তিনি বলেন, আমাদের এক প্রতিবেশী সৌদি আরব থাকেন। তিনি ঈদের আগে তার বাড়িতে টাকা পাঠিয়েছেন। তার পরিবারের লোক ঈদের আগে কিছু টাকা তুলেছে। তারপরও তাদের ৫০ হাজার টাকার বেশি নাকি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে ছিল। তারা পরে আবার ব্যাংকে টাকা তুলতে গেলে ব্যাংক থেকে নাকি বলছে-অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নেই। তোমরা স্বাক্ষর দিয়ে চেক দিয়ে টাকা তুলে নিয়ে গেছো। টাকা কীভাবে থাকে।’ তখন তারা রঞ্জুকে এসে ধরেছে। তারা বলছে তারা নাকি রঞ্জুকে চেক দিয়েছে, রঞ্জু চেক ড্রয়ারে রেখে ড্রয়ার থেকে টাকা বের করে দিয়েছে।
শাহিন আরও বলেন, রঞ্জুকে চেক দিল আর রঞ্জু ড্রয়ার থেকে টাকা বের করে দিল, কিন্তু ব্যাংক এসব বিষয়ে কিছুই জানে না! এটা কি হতে পারে’। অবশ্যই ব্যাংকের লোকজনও এর সঙ্গে জড়িত আছে। রঞ্জু কিছু টাকা ঋণ আছে বলেও জানান এই প্রতিবেশী।
আরেক প্রতিবেশী বলেন, রঞ্জুকে এমনিতে ভালো ছেলে হিসেবেই এলাকার লোক জানে। কিন্তু এখন শুনতেছি সে নাকি গ্রাহকদের কাছ থেকে কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। কেউ বলে এক কোটি, কেউ বলে তিন কোটি, কেউ বলে পাঁচ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে। ঈদের পরের দিন থেকে প্রায় প্রতিদিনই তার বাড়িতে লোকজন আসছে। এগুলো নিয়ে কথা বলছে, কিন্তু সে তো বাড়িতে নেই।
রঞ্জুর মা আনোয়ারা খাতুন বলেন, ব্যাংকের এমডি সালাম সাহেব আমার ছেলেকে খুব ভালোবাসতেন। আমার ছেলেও তার বাসায় যেতেন। সে চাকরি করছিল। কিন্তু ঈদের ছুটি শেষে রোববার যখন সে অফিসে যায়, তখন দেখে তার চেয়ার-টেবিল নেই। তখন ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসা করলে ম্যানেজার বলেন তুমি ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে বাহিরে চলে যাও। পরে আমার ছেলে হাসিমুখে অফিসে গেলেও মুখ কালো করে দুপুর ১২টার দিকে বাসায় ফিরে আসে। তখন রঞ্জুর স্ত্রী তাকে জিজ্ঞাসা করে-তুমি অফিস যাওনি, চলে আসলে কেন। তখন রঞ্জু জানায়-আমার চেয়ার টেবিল সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ম্যানেজার আমাকে ১৫ দিনের ছুটি দিয়েছে। আর বলেছে বাহিরে চলে যাও, এরপর সে রোববার বাড়িতে থাকলেও সোমবার বাড়ি থেকে কোথায় যেন চলে যায়।
তিনি বলেন, এর একদিন পরেই জনতা ব্যাংক থেকে নাকি বলছে- রঞ্জু তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। যাদেরকে ম্যানেজার এটা বলছে, তারা বাড়িতে এসে দেখে যে রঞ্জুর স্ত্রী-সন্তান বাড়িতেই আছে। তাদের কাছে এসব কথা শোনার পরেই রঞ্জুর স্ত্রী কান্নাকাটি শুরু করে দেয়।
আনোয়ারা খাতুন আরও বলেন, এর কয়েকদিন পরে একদিন জনতা ব্যাংকের শাহজাদপুর শাখার ম্যানেজার বাড়িতে আসেন। এসে বলেন, রঞ্জু ১৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। তখন রঞ্জুর স্ত্রী ম্যানেজারকে বলেন, আপনিই তো তাকে ১৫ দিনের ছুটি দিয়ে বের করে দিয়েছেন। আপনিই তো তার চেয়ার টেবিল সরিয়ে দিয়েছেন, তাহলে আপনি এখন এ কথা বলেন কেন।
তবে রঞ্জুর স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে গেছেন বলে জানান আনোয়ারা। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় রঞ্জুর কোনো খোঁজ না পেলেও থানায় কোনো জিডি করেননি তার মা।
জনতা ব্যাংকের সিরাজগঞ্জের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) জাহিদুল আলম বলেন, কিছু গ্রাহক অভিযোগ নিয়ে আসেন যে তাদের টাকা নাকি ব্যাংকে জমা হয়নি। বিষয়টি শোনার পর আমি এখানে আসি এবং গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলি। তাদের সঙ্গে কথা বলে যেটা বুঝলাম, যারা আসতো তারা কাউন্টারের বাইরে রঞ্জুর সঙ্গে যোগাযোগ করত, রঞ্জুর সঙ্গে কথা বলতো। কেউ রঞ্জুর পূর্ব পরিচিত, কেউবা আত্মীয়, কেউবা খুব কাছের মানুষ। অনেকে আবার রঞ্জুর কাছে তাদের চেক বইও রেখে যেত। জমার ক্ষেত্রেও জমা স্লিপ এবং টাকা তার কাছেই তারা দিয়ে যেত। দিনশেষে হয়তো রঞ্জু সেগুলো স্বাক্ষর করে তাদের দিত।
তিনি বলেন, এই লোকগুলো সবাই ছিল স্বাক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন, লেখাপড়া খুবই কম জানা, সহজ সরল। তাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে রঞ্জু এই কাজগুলো করেছে।
জাহিদুল আলম বলেন, আমরা পদক্ষেপ হিসেবে এখানকার অ্যাডিশনাল এসপির সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে গ্রেপ্তার করার জন্য অ্যাডিশনাল এসপি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। রঞ্জু তাদের নাগালের মধ্যেই আছেন এবং খুব দ্রুত গ্রেপ্তার হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি রঞ্জু ২০-২২ লাখ টাকার মতো হবে হাতিয়ে নিয়েছেন। বাকিটা আমরা তদন্ত করছি। আমাদের ডিভিশনাল অফিস থেকে জিএম মহোদয় এসেছেন। একটি টিমও এসেছে। তারা তদন্ত করছেন। এছাড়াও প্রধান কার্যালয় থেকে এমডি মহোদয় একটি স্পেশাল টিম পাঠাচ্ছেন।
ভুক্তভোগীদের টাকার দায়ভারের ব্যাপারে জাহিদুল আলম বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে যদি লেনদেন করা হয়ে থাকে সে বিষয়টা ব্যাংক দেখবে। এরপরও যেহেতু তারা আমাদের গ্রাহক তাই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।,
রঞ্জু একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী হলেও কীভাবে ডেস্ক নিয়ে বসতেন-এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সেখানে একটি টেবিল রাখা হতো ভাউচার রাখার জন্য। অনেক গ্রাহক সেখানে এসে লিখতো। এখন সেখানে চেয়ার নিয়ে রঞ্জু বসতো কিনা এটা আমার জানা নেই। বিভিন্ন মিডিয়াতে এসেছে রঞ্জু ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালামের আত্মীয়। এই কথাটা মোটেও ঠিক না। আমি কথাটার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ ছাড়াও রঞ্জু যদি কোনো গ্রাহক বা ব্যাংকের কর্মকর্তাকে সেই পরিচয় দিয়ে থাকে সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) কামরুজ্জামান বলেন, আমরা ব্যাংকের পরিচ্ছন্নতাকর্মী আওলাদ হোসেন রঞ্জুর বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ পেয়েছি যে, সে অনেক অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের কাছ থেকে রশিদ নিয়েছে, কিন্তু টাকা জমা দেয়নি, টাকা নিয়েছে কিন্তু রশিদ সে পরবর্তীতে দিয়েছে। আবার এমনটা হয়েছে কেউ টাকা তুলতে আসলে তার কাছ থেকে সে চেকটা নিয়ে রাখছে আর বলছে আপনি এখন চলে যান পরে টাকা পেয়ে যাবেন। অনেক কাস্টমার যখন আবার বলেছে আমাদের ফোনে মেসেজ আসতেছে না কেন, তখন সে বলতো ৪০ ঘণ্টা বা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মেসেজ চলে যাবে।
তিনি বলেন, এরপর ঈদের পরে যখন অফিস খুলছে তখন সেই অ্যাকাউন্ট হোল্ডাররা দেখেন রঞ্জু নেই। রঞ্জুকে তারা আর পাচ্ছেন না। তখন তারা তাদের অ্যাকাউন্ট চেক করেন’। তারা দেখেন তাদের যে পরিমাণ টাকা থাকার কথা ওখান থেকে অনেক টাকাই নেই। এ বিষয় নিয়ে তারা তখন জনতা ব্যাংকে অভিযোগ দেন। তখন জনতা ব্যাংক আমাদেরকে জানায়। আমরা বিষয়টা আমলে নিই এবং রঞ্জুকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাই। রঞ্জুকে গ্রেপ্তারে আমাদের টিম কাজ করছে। আশা করছি খুব দ্রুতই তাকে আমরা পেয়ে যাব।’