রাজশাহী রেঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) নিহার রঞ্জন হাওলাদারকে পদাবনতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্যের অভিযোগে ফজলুল হক নামে আরেক পুলিশ কর্মকর্তাকেও একই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। এর আগে গত ২২ জুন এ নিয়ে আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে সই করেন মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সিআইডির সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার থাকাকালে এক বিবাহিত নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন নিহার রঞ্জন। তার স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১০ সালে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। পরে তিনি স্ত্রীর সঙ্গে ১৫০ টাকার স্ট্যাম্পে সদাচারণের অঙ্গীকার করেন। এরপর আবারও ওই কর্মকর্তা পুলিশের এক নারী পরিদর্শকের সঙ্গেসহ একাধিক ‘পরকীয়ায়’ জড়িয়ে পড়েন। ফোনে কথোপকথন, ক্ষুদেবার্তা আদান-প্রদান, বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলের বাইরে থাকা ও ভুয়া ট্যুর ডায়েরি দাখিল করার প্রমাণ পাওয়ায় নিহার রঞ্জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, প্রথম দফায় কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব না দেওয়ায় নিয়মানুযায়ী একজন অতিরিক্ত ডিআইজিকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ করা হয়। পরে তিনি অভিযোগের সত্যতা পান। তদন্ত প্রতিবেদন, দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পর্যালোচনায়ও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এসব কারণে ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর বিধি-৪(৩) এর উপ-বিধি (১)(ক) অনুযায়ী আগামী তিন বছরের জন্য ‘নিম্নপদে অবনমিতকরণ’ এর মাধ্যমে গুরুদণ্ড প্রদান করা হয় বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
পৃথক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাজশাহীতে র্যাব-৫ এ পুলিশ সুপার থাকাকালে ফজলুল হক ২০২১ সালের ১৯ মে রাজশাহী মহানগর পুলিশে কর্মরত এক কর্মকর্তার সঙ্গে ফোনে সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে ‘কুরুচিপূর্ণ, অশালীন ও শিষ্ঠাচার বহির্ভূত স্পর্শকাতর’ ফোনালাপ করেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। এ কারণে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়।
একই বছর ৬ ডিসেম্বর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। পরে ব্যক্তিগত শুনানি ও দালিলিক প্রমাণ পর্যালোচনা করে অতিরিক্ত ডিআইজি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তাকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। তদন্ত কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এজন্য তাকে একই বিধিমালা অনুসারে আগামী তিন বছরের জন্য ‘নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ’ এর মাধ্যমে গুরুদণ্ড প্রদান করা হয়।