রাজশাহী নগরীতে এক শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে শাহ মখদুম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার নুর আলম সিদ্দিকী সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় গত ১ জুলাই বিকাল ৪ টার দিকে আন্নিকা আক্তার মায়া (৯) তার বাড়ির নিকটবর্তী দাদীর বাড়ী যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। মায়া বাড়িতে ফিরে না যাওয়ায় তার পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুজি করতে থাকে। ভিকটিমের পরিবার আন্নিকা আক্তার মায়াকে খুঁজে না পাওয়ায় সোমবার ভিকটিমের পিতা আজিম উদ্দীন শাহ মখদুম থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন।
ভিকটিমের পরিবার ও শাহ মখদুম থানা পুলিশ ভিকটিমনে খুঁজতে থাকে। ওইদিন শাহ মখদুম থানার নওদাপাড়া বাজারে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় ১জুলাই রোববার বিকাল অনুমান ৪টা ৫১ মিনিটের সময় বড়বনগ্রাম রায়পাড়ার শাহিন শেখের ছেলে আসামি পলাশ শেখ (৩৫) ভিকটিম আন্নিকা আক্তার মায়া (০৯) কে ফুসলিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে।
এরপর বাদী আসামির বাড়িতে গিয়ে আসামির বাবা, মা ও ভাইকে ঘটনার বিষয়ে বললে তারা জানায় আসামি বাসায় থাকে না। ২ মাস আগে আসামিকে বাড়ি হতে বের করে দিয়েছে। ২রা জুলাই রাত অনুমান ৯ টায় দিকে আসামির ভাই শান্ত (৩০) এর মাধ্যমে জানা যায়, আসামির সাথে তার কথা হয়েছে।
এরই সূত্র ধরে শাহ মখদুম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার নুর আলম সিদ্দিকীর নির্দেশনা এবং শাহ মখদুম থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে এসআই আব্দুল মতিন, এসআই রনি মিত্র এসআই জাহিদ হাসান, এসআই শরিফুল ইসলাম, এসআই নাসির উদ্দিনসহ ঘটনায় জড়িত আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান শুরু করে।
গোয়েন্দা তথ্য ও মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে সংযুক্ত সিসিটিভি ফুটেজ এবং আরএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চলতে থাকে। সোমবার ভোর ৪টায় নাটোর থানাধীন মাদ্রাসা মোড়ের যাত্রী ছাউনী থেকে আসামি পলাশ শেখ (৩৫) কে গ্রেপ্তার করা হয়।
আসামির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এদিন ভোর ৫:৪০ সময় রাজশাহী মহানগরীর চন্দ্রিমা থানাধীন ছোটবনগ্রাম উত্তর পাড়ার নূরে আলম সিদ্দিকির পুকুর হতে ভিকটিম আন্নিকা আক্তার মায়া (০৯) এর মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
এ ব্যাপারে বড়বনগ্রাম রায়পাড়ার শাহিন শেখের ছেলে আসামি পলাশ শেখ (৩৫) শেখের বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণসহ হত্যা মামলা করা হয়।
জানা যায়, আসামী পলাশ ভিকটিম মায়ার কানের দুল বিক্রি করে রাজশাহী থেকে পালিয়ে যায়। নওদাপাড়ায় এক স্বর্ণের দোকানে পলাশ দুল বিক্রি করে ১৫শ’ নেয়। দোকানদার কেনার রিসিভ দেখাতে ব্যর্থ হলে ক্রেতা পুরো টাকা না দিয়ে পলাশকে ১৫ টাকা দেয় এবং পুরো টাকাটা যাচাই শেষে দেওয়ার কথা ছিল। পলাশের বিরুদ্ধে মাদক মামলার রেকর্ড রয়েছে। সে গাঁজার চাষ করার সাথে জড়িত ছিল।