পবিত্র জিলহজ্ব মাসের চাঁদ দেখার পর থেকে বাঁশখালীর বিভিন্ন হাটবাজারে শুরু হয়েছে পশু বেচাকেনা। উপজেলার ছোট-বড় প্রায় ৩০টির মত পয়েন্টে কোরবানীর পশুর হাট বসেছে। ঈদুল আযহা উপলক্ষে যাত্রীসাধারণের যাতায়ত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে উপজেলা প্রশাসন বাঁশখালীর আঞ্চলিক প্রধানসড়কের উপর হাটবাজার বসানোর বিধি-নিষেধ আরোপ করলেও তা তোয়াক্কা করছেনা ইজারাদাররা। এতে যান ও জন চলাচলে যেমন বিঘ্ন ঘটছে, তেমনি যে কোন সময় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। তবে ইজারাদাররা বলছেন, সরকার লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব আয় করলেও ঐতিহাসিক ও পরিচিত বাজারগুলোর উন্নয়নে কোন পদক্ষেপ না থাকায় সড়কের উপর বাজার বসাতে অনেকেই বাধ্য হচ্ছেন। অন্যদিকে প্রকাশ্যে মাইকিং করে প্রধানসড়কের উপর বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাাঁকি দিয়ে এবং কতিপয় জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ ও প্রশাসন এর অসাধু কর্তাব্যক্তির যোগসাজসে সড়কের দু’পাশ দখল করে বসেছে কোরবানীর পশুর হাট।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও বাঁশখালী-আনোয়ারা-পেকুয়া-মগনামা সংযোগ আঞ্চলিক প্রধানসড়কের উপজেলার গুনাগরি রামদাশ হাট ও শীলকূপ টাইমবাজারের ফুটপাত দখল করে সড়কের উপর বসেছে পশুর হাট। যার দরুণ দীর্ঘ যানযটে নাকাল জনজীবন। অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ-মাদরাসা ও শহরে যাতায়তকারী যাত্রীদের সিডিউল বিপর্যয় ঘটছে। এ যেন সড়কে চরম ভোগান্তি।
চট্টগ্রাম শহর থেকে বাঁশখালীর শেষ সীমান্ত টৈটং পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দূরত্বের সড়কটি যাত্রীবাহী বাস ও মালবাহী যানবাহনের যাতায়াতের প্রধান ও বিকল্প মাধ্যম এই পিএবি রোড। ফলে সড়ক দখল হওয়ায় প্রতিদিনই সীমাহীন যানজটে পড়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। প্রতিনিয়ত এমনিতেই মানুষের হাঁটাচলা করার ফুটপাত পর্যন্ত দখল করে রেখেছেন মাংস ও সবজি বিক্রেতারা। সড়কপথ দখলের কারণে তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে পড়ে থাকতে হয়। কোরবানের ঈদযাত্রায় এ ভোগান্তি আরো চরমে।
বাঁশখালী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘বাঁশখালী প্রধান সড়ক দখল করে বিশেষ করে গুনাগরি রামদাশহাট ও শীলকুপ টাইমবাজারে অবৈধভাবে পশুরহাট বসিয়ে যানযট সৃষ্টির ফলে যেমনি যানযটে নাকাল হচ্ছি তেমনি সিডিউল বিপর্যয়ে পড়ছি। যথাসময়ে গন্তব্যে পৌছাতে না পরার কারণ সড়কের উপর পশুরহাট। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে আমাদের মতো চালকদের ও চট্টগ্রাম শহরগামী সাধারণ মানুষ সহ চাকরিজীবীদের।’
স্পেশাল, সুপার সার্ভিস ও সিএনজি অটোরিকশার বেশ কয়েকজন চালক বলেন, ‘এভাবে সড়ক দখল করে পশুর হাট বসানো এইটা কোন দেশের আইন আমাদের বুঝে আসেনা। কেউ কিছু বলেও না। রাস্তা হয়েছে গাড়ি চলানোর জন্য কিন্তু কতিপয় অসাধু দুষ্টচক্র ও ইজারাদার অবৈধভাবে পশুরহাঁট বসিয়ে রেখেছে খোদ সড়কেই। যার দরুন যানজটের ঠেলায় আমরা বাঁচি না।’
টাইমবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘টাইমবাজারে প্রধান সড়কের উপর কোরবানীর পশুরহাট বসানোর অনুমতি আমাদেরকে উপজেলা প্রশাসন দেয়নি। তবে আমরা বাজারের ইজারাদার। প্রতিবছর আমরা পশুরহাট বসাই। তাই এবারও পশুরহাট বসিয়েছি।’
বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন,বাঁশখালী প্রধান সড়কে সড়কপথ দখল করে কোরবানীর পশুরহাট বসানোর কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি। বরং সড়কে হাট না বসানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া আছে। আমি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজ জেলার একটা প্রোগ্রামে আছি। আমরা বিষয়টি দেখে ব্যবস্থাগ্রহন করবো এমনটিও জানান তিনি।’
বাঁশখালী প্রধানসড়কের শীলকূপ টাইমবাজারের দু’পাশ দখল করে বসেছে পশুরহাট।