রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ডিপো থেকে তেল পাচারকালে একটি তেলের ওয়াগান হাতেনাতে ধরা হয়েছে। এ সময় ২৫০ লিটার ডিজেল জব্দ করেছে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী। এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে।
রবিবার (১১ জুন) বিকালে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে এ কমিটিকে। কমিটির সদস্যরা হলেন-রেলের এসিও (দক্ষিণ) মো. ফারহান মাহমুদ, এসি আরএমবি মো. আরিফুল ইসলাম ও এমওবি (পাকশী) গোলাম মোস্তফা।
ঘটনার বিবরণ জানা যায়, গত ৫ জুন আরএমসির মাধ্যমে ঈশ্বরদী থেকে ৪৮৫৫ নং বিটিএমের মাধ্যমে ২৫ হাজার লিটার তেল এসএসএই ই/ লোকো রাজশাহীর অধীনে আসে। সেই তেল ৬ জুন খালাস হয়। এরপর থেকে তেলের ওয়াহানটি খালাস অবস্থাতেই ছিল। পরে এসএসএই ই/লোকোর ইনচার্জ পুনরায় তেল আনার জন্য খালাস গাড়ির মেমো স্টেশন মাস্টারকে দেয়। মেমোতে উল্লেখ আছে, সম্পূর্ণ তেল খালাস হয়েছে। কিন্তু রবিবার (১১ জুন) গাড়িটি যাওয়ার সময় নিরাপত্তা বাহিনীর গার্ড তেলের ট্যাংক সিলগালা করা দেখতে পান। অথচ খালি গাড়ি সিলগালা করার কোনও নিয়ম নেই। এতে সন্দেহ হলে তিনি এ বিষয়ে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন ডিপো ইনচার্জকে জানালে তিনি জানান, গাড়িতে কোনও তেল নেই। বিষয়টি নিরাপত্তা বাহিনীর গার্ড উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের জানালে বিকালেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরপর তদন্ত কমিটির উপস্থিতিতে ট্যাংক থেকে ২৫০ লিটার তেল জব্দ করা হয়।
এ বিষয়ে রাজশাহী স্টেশন ম্যানেজার আব্দুল করীম জানান, তাকে এসএসই লোকোর দায়িত্বরত ব্যক্তি সম্পূর্ণ তেল খালাস হয়েছে বলে মেমো করে দিয়েছিল। কিন্তু তারা সম্পূর্ণ তেল খালাস না করে কিছু তেল আবারও নিয়ে যাচ্ছিল। এই বিষয়ে তদন্ত চলমান।
তিনি আরও জানান, শিপিংয়ের জন্য ১০ বা ১২ লিটার তেল উদ্বৃত্ত থাকতে পারে। কিন্তু সেখানে ২৫০ লিটার জব্দ করা হয়েছে। এটা অস্বাভাবিক। এ কারণেই তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তদন্তে কারও সম্পৃক্ততা থাকলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে।
রাজশাহী রেল স্টেশনের নিরাপত্তা বাহিনীর সাব-ইন্সপেক্টর গোলার রসূল সরকার বলেন, বিটিএম (তেলের ট্যাংক) মাধ্যমে রাজশাহীর লোকো সেটে (ডিপো) তেল আসে। এটি খালাস করে আবারও তেল আনার জন্য ঈশ্বরদী হয়ে খুলনার উদ্দেশে যায়। রবিবার তেল খালাস করে সন্ধ্যা ৬টার দিকে যাচ্ছিল। রেলের নিয়ম অনুযায়ী খালি গাড়ি সিলযুক্ত হয় না। তেল লোড থাকলেই কেবল সিলগালা থাকে। খালি গাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর জেনারেল শাখা থেকে গার্ড মোতায়েন থাকে। সিল দেখে গার্ড স্টেশন মাস্টারকে জানায়। সেখান থেকে আমাদের জানানো হয়। এ সময় লোকো প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলা হলে, ওনারা জানান, তেল নেই এমনিতেই সিল করা আছে। এরপর লোকো সেটের ইনচার্জ প্রতিনিধি পাঠিয়ে সিল খুলে দেন। সেখান থেকে ২৫০ লিটার তেল জব্দ হয়েছে।
এ বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলের জেনারেল ম্যানেজার অসীম কুমার তালুকদার জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন। প্রতিবেদন হাতে পেলেই বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।