১১ জুন (রবিবার) রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে অংশীজনের অংশগ্রহণে অবিহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবনের লেকচার থিয়েটারে দুপুর ২টায় এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য মহোদয় বলেন, আমরা মনে করি যে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ নাগরিক ছাড়া সুশিক্ষিত নাগরিক হওয়া সম্ভবপর নয়। তাই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রচলিত শিক্ষার পাশাপাশি আমাদের সংস্কৃতি চর্চার এবং আমাদের মৃত্তিকালগ্ন সংস্কৃতির নির্যাসগুলোকে শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত করতে চাই, এজন্যে আমরা আমাদের ধারাটাকে এমনভাবে নিয়ে যেতে চাই, যাতে প্রতিফলিত হবে বাংলাদেশের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাটি প্রতিফলিত হলে তা প্রকারান্তরে মুজিব আদর্শের বাস্তবায়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়টি সৃষ্টির পেছনে যে উদ্দেশ্য রয়েছে, আমরা সেই উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়ে আমাদের শিক্ষাক্রমকে প্রস্তুত ও সেটাকে বিন্যস্ত করতে চাই। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টির উদ্দেশ্য বিশ্বকবি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্মকে চিরঅম্লান করার লক্ষ্যে গবেষণা ও পঠন-পাঠনের মাধ্যমে পরিবর্তমান বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে চলার সামর্থ্য অর্জন করা।
উপাচার্য মহোদয় বলেন, আমাদের যে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী আছেন তাদের মধ্যে সমন্বয় করে একটি সুসমন্বিত তথা ইন্টিগ্রেটেড পরিবেশ তৈরি করেছি এবং সেটির মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে আমাদের নানা সংকট থাকলেও আমাদের আন্তরিকতা ও সাংস্কৃতিক মমত্ববোধ দিয়ে আমরা এই সংকটগুলো থেকে উত্তরণে সদা সচেষ্ট। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে বিভিন্ন দিকে অগ্রসর হয়েছে যার অনেকটাই দৃশ্যমান। সম্প্রতি ২০২৩ সালের ওয়েব ম্যাট্রিক্সের সূচক অনুযায়ী রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় নবীন বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে ২য় স্থান অধিকার করেছে যেটি আমাদের জন্য একটা বড় প্রাপ্তি।
প্রফেসর ড. শাহ্ আজম বলেন, আমরা কেবল সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ করার মধ্য দিয়ে আমাদের শিক্ষাকে বিস্তার করতে আগ্রহী তা নয়, আমরা শিক্ষা ক্ষেত্রে আরও বড় অবদান রাখতে চাই। শিক্ষার্থীরা যেন আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের সাথে তাদের সম্পর্কটা রাখতে পারে সেজন্য আমরা আমাদের এখানে সেমিনার সংস্কৃতি চালু করেছি। আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা না থাকলেও গত বছর আমরা একটি অ্যাকাডেমিক কনফারেন্স সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। এবছর আমরা একটি আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের আহ্বান করেছি জুনের ১৫ থেকে ১৭ তারিখে এবং এর মাধ্যমে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে বর্তমানে যে জ্ঞান-চর্চা হচ্ছে সেই জ্ঞানের বিনিময় হবে এবং এই বিনিময় আমাদেরকে সমৃদ্ধ করবে; আমাদেরকে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার সামর্থ্য অর্জন করতে আমাদেরকে সহযোগিতা করবে।
তিনি বলেন, এর বাইরেও শিক্ষার্থীরা যেন সঠিকভাবে তাদের পড়াশোনটি করতে পারে সেজন্যে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সময়সীমা বর্ধিত করে রাত ৮.৩০ মিনিট পর্যন্ত খোলা রেখেছি এবং ছুটির দিনেও লাইব্রেরি খোলা রাখার ব্যবস্থা করেছি।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন নয়, আমাদের দেশের যে কোনো সংকটে ও দুর্যোগে অবদান রাখা। সভা শেষে উপাচার্য মহোদয় শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ ও শুভকামনা জানিয়ে তাঁর বক্তব্য শেষ করেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোঃ ফখরুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার জনাব মোঃ সোহরাব আলী উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীগণ এই সভায় অংশীজন হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। উল্লেখ্য বেলা ৩.৩০টায় সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি এবং ৫.৩০ মিনিটে অভিযোগ প্রতিকার বিষয়ে অংশীজনের অংশগ্রহণে অবহিতকরণ বিষয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়।