ঢাকার কেরানীগঞ্জের মধুরচরে এক অসহায় পরিবারের জমি কব্জা করার হীন স্বার্থে কূখ্যাত ভূমিদস্যূ ও সুদে কারবারি সিরা সরদারের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছে ওই পরিবারের প্রধান বিধবা ও অসহায় মহিলা সুফিয়া বেগম। ভূমিদস্যূ সিরা সরদার কর্তৃক প্রকাশ্যে সুফিয়া বেগমকে কিল-ঘুষি ও লাথি মারার ভিডিও ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিকার প্রার্থনা করে বিধবা সুফিয়া বেগম ও তার সন্তান সাদ্দাম হোসেন প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
অসহায় এই পরিবারটি বসবাস করেন ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ থানার হযরতপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মধুর চর গ্রামে।
সরেজমিনে জানা যায়, কূখ্যাত এই ভূমিদস্যূ সিরা সরদার মানুষের জমি জোরপূর্বক দখল করা সহ, সুদে টাকা দেয়ার নামে অসহায় মানুষের জমির দলিল নিজের কাছে রেখে তার বসত বাড়িটিকে মিনি সাব রেজিষ্ট্রার অফিসে পরিণত করেছে। অসংখ্য অসহায় মানুষের দলিল সে নিজ ঘরে রেখে নির্মম নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়ে শান্তশিষ্ট মধুরচর এলাকাকে বিভীষিকাময় নরকে পরিণত করেছে।
এ বিষয়ে বিধবা সুফিয়া বেগমের সন্তান সাদ্দাম হোসেন এই প্রতিবেদককে বলেন, এই মধুর চর গ্রামে আমাদের বাড়ি সংলগ্ন রাস্তা বা চলাচলের সুবিধার জন্য ২৩/০৪/২০১৯ ইং তারিখে আমার মা আমাদের দুই ভাইয়ের নামে প্রতিবেশি নূর মোহাম্মদের নিকট থেকে ঢাকা কালেক্টরীর তৌজিভূক্ত সাব রেজিষ্ট্রারী অফিস কেরানীগঞ্জে অধিনে আর এস-১৬ নং খতিয়ানের, আর এস -৪৯৮ দাগের জমি হতে ১ শতাং ক্রয় ও রেজিস্ট্রি দলিল সম্পাদন করি । যার দলিল নং-৪৭৮৫।
এই জমি ক্রয়ের ৭/৮ মাস পরে ওই এলাকার মৃত-আজর সরদার ও মৃতা-জবেদা বেগমের পুত্র এলাকার চিহ্নিত কূখ্যাত ভূমি দস্যূ ও সুদে কারবারী সিরা সরদার আমার জমির পিছনের দিকে একটি পরিত্যক্ত ডোবা ক্রয় করে।সে তার স্থানিয় গুন্ড বাহিনীর প্রভাব ও সুদে টাকার গরমে আমাকে অসহায় ভেবে আমাদের রাস্তা বা চলাচলের জন্য ব্যবহৃত জমিটি কব্জা করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এখানে বলে রাখা দরকার যে, টাকা ও পেশী শক্তির গরমে সে থানা-পুলিশ, বিচার-সালিশ, আইন-আদালত কোন কিছুরই পরোয়া করেনা।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসের ১২ তারিখে সে আমার জমি কব্জ করার জন্য বাঁশ কাঠের বেড়া দিয়ে জোর পূর্বক আমাদের চলাচল বন্ধ করে দিয়ে বিভিন্ন হুমকী ধামকী ও প্রকাশ্যে গালিগালাজ করতে থাকে। অগত্যা নিরুপায় হয়ে আমি আমার মাতা সুফিয়া বেগম কে সাথে নিয়ে কেরানীগঞ্জ থানায় অভিযোগ করতে যায়। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কলাতিয়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আশরাফুল সাহেব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সেই সময় পুলিশ দেখে সিরা সরদার পালিয়ে আত্মগোপন করে। এখানে বিস্তারিত শুনে বুঝে তিনি ভূমিদস্যূ ও সুদে কারবারী সিরা সরদারের চক্রান্তের বিষয়টি বুঝতে পারেন।
এক পর্যায়ে ১৯/০৫/ ২০২৩ ইং তারিখে গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সালিশে বসেন। ওই সালিশে ভূমি দস্যূ ও সুদে কারবারী সিরা সরদার তার ভুল স্বীকার করে এবং ভবিষ্যতে আর কখনো সে কারো জমি আত্মসাৎ করবেনা মর্মে অঙ্গিকার করে সালিশে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গের সামনে কাগজে স্বাক্ষর করে।
কিন্তু দু:খের বিষয় কোনো কারণ ছাড়াই চারদিনের মাথায় ২৩শে মে ২০২৩ ইং তারিখে সে আবার আমাদের বাড়িতে চড়াও হয়ে আমার মাকে প্রকাশ্যে চড় থাপ্পড়, কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। ভূমিদস্যু সিরা সরদার কর্তৃক আমার মাকে মারধরের ওই ঘটনা কে বা কারা নেটে ছড়ি্য়ে দিলে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। ওই ভিডিও দেখে অবগত হয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রিক মিডিয়ার সাংবাদিকরাও আমার মায়ের স্বাক্ষাতকার নিয়ে নিউজ করে।
বর্তমানে ওই কূখ্যাত ভূমি দস্যূ ও সুদে মাহাজন সিরা সরদার আমার মা সহ আমাদেরকে হত্যা করে লাশ গুম করার চক্রান্ত করছে মর্মে লোক মুখে জানতে পারি। ফলে আমি সহ আমার মা এবং আমাদের গোটা পরিবার আমাদের জান মালের নিরাপত্তা হীনতায় অজানা আশঙ্কা ও আতঙ্কে দিনাতিপাত করছি।
এ অজনা আশঙ্কা ও আতঙ্কের জীবন থেকে পরিত্রাণ পেতে বিধবা সুফিয়া বেগম, সুফিয়ার সন্তান সাদ্দামসহ পরিবারের সকলে এই প্রতিবেদকের মাধ্যমে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।