রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার শিশু ধর্ষণ মামলায় মো. শাহজাহান গাজী (৬০) নামের এক ইমামকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ওই বৃদ্ধকে জরিমানা করা হয়েছে ১ লাখ টাকা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ মে) দুপুরে রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতের বিচারক মুহা. হাসানুজ্জামান এ আদেশ দেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি শাহজাহান চারঘাট উপজেলার কানগাড়ির পাশের গ্রামেই ২০/২২ বছর থেকে বসবাস করতেন এবং স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন। এছাড়া শাজাহান অন্য সময় একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় শিশুদের আরবি শিক্ষা দিতেন।
রায়ের পর রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শামসুন নাহার মুক্তি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ওই শিশু শাহজাহানের কাছে মাদ্রাসায় আরবি শিক্ষা নিত। ২০১৮ সালে চারঘাট উপজেলার ১২ বছরের এক শিশুকে ইমাম তার বাড়ির পেছনে নিয়ে যায়। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে শাজাহান তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করে এবং কাউকে বললে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে শাসিয়ে দেন।
এর তিন মাস পর সেই শিশুর শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। এরপর তার পরিবার পুঠিয়া উপজেলা ঝলমলিয়া এলাকার স্থানীয় হোমিও চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। হোমিও চিকিৎসকের ওষুধ খেয়েও সে সুস্থ না হওয়ায় স্থানীয় লোকজনের পরামর্শে পরিবার চারঘাট পরিকল্পনা অফিসে নিয়ে যান। সেখানে পরীক্ষা করে জানা যায় সে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
এ ঘটনা জানাজানি হলে শাহজাহান কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে ওই শিশুর বাবা বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চারঘাট থানায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলা আদালত রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯ (১) ধারার আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এছাড়া আসামি গ্রেফতারের পর থেকে হাজতবাসের মূল সাজা থেকে বাদ যাবে বলেও রায়ে উল্লেখযোগ।