রাজশাহীর তানোরে মাধ্যমিক স্কুল-মাদরাসা ও কলেজের শিক্ষক-কর্মচারিদের অনলাইনে এমপিওর আবেদন করতে বেড়েছে হয়রানি, দিতে হচ্ছে পদে পদে ঘুষ। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান শিক্ষক-কর্মচারিদের জিম্মি করে এসব টাকা আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারিদের মধ্যে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু চাকুরি হরানো বা আরো বেশি হয়রানির ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না।
জানা গেছে, বিগত ২০১৫ সালে দেশের শিক্ষকদের সুবিধার জন্য অনলাইনে এমপিও কার্যক্রম শুরু করা হয়। কিন্তু শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তার অনিয়ম-দূর্নীতি ও নানা ঝক্কি-ঝামেলায় এটি ভোগান্তির হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়ায় সমস্যা তিন পর্যায়ে-কর্মকর্তা-কর্মচারিদের খুশি করা, ব্যর্থ হলে ফাইল আটকে রাখাসহ নানা ধরণের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। ফলে শিক্ষকরা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের পদে পদে ঘুষ দিতে বাধ্য হচ্ছেন। অনলাইনে এমপিও (মান্থলি পে-অর্ডার বা বেতনের মাসিক অংশ) আবেদন করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানকে আবেদন প্রতি ১০ হাজার টাকা ও অফিস সহকারি রাহেজুল ইসলামকে ২ হাজার টাকা করে ঘুষ দিতে হচ্ছে।
তানোরের চাঁদপুর দ্বিতীয় উচ্চ বিদ্যালয় ও হাতিশাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগ পাওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষকরা জানান, অনলাইনে আবেদনের পাশপাশি তিন সেট কাগজপত্রও জমা দিতে হয় উপজেলা শিক্ষা অফিসে।
সেখানে এতো জটিলতা যে শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘুষ না দিলে নানা ক্রুটি ধরা হয় স্বাভাবিক নিয়মে কাজ হয়না তাই তারা বাধ্য হয়েই কর্মকর্তাদের খুশি করার চেস্টা করেন। এছাড়াও আবেদনের তিন সেটের একটি জেলায় আরেকটি আঞ্চলিক দফতরে যায়। তাদের এই দুই দফতরেই ধরনা দিতে হচ্ছে, অথচ আগে মাউশিতে ধরনা দিলেই হতো। তারা নিজেরাও কর্মকর্তাকে ১০ হাজার ও অফিস সহকারিকে ২ হাজার টাকা দিয়ে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন।
তানোরের শ্রীখন্ডা উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্চূক এক শিক্ষক বলেন, শিক্ষক হয়েও শিক্ষা অফিসে কাজ করতে পদে পদে ঘুষ দিতে হয়, এর থেকে বড় লজ্জা আর কি হতে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দাখিল মাদরাসার সুপার বলেন, টাকা না দিলে শিক্ষা অফিসে দিনের পর দিন ধর্না দিয়েও স্বাভাবিক নিয়মে কোনো কাজ হয় না। কাজে ক্রটি থাক বা না থাক তাদের চাহিদা মতো ঘুষ দিতেই হবে নইলে হয়রানির শেষ থাকে না।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।