রাজশাহী জেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। শনিবার (৬ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলতাফ হোসেন (৫৮) নামের একজনের মৃত্যু হয়। তিনি সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য বলে জানিয়েছে পরিবার।
এঘটনায় নিহতের ছেলে সজীব হোসেন (২২) বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা করেছেন। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) এই মামলাটি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন, গোদাগাড়ী মডেল থানার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ইসলাম। মামলার পরপরই প্রধান আসামি মৃত আলতাফ হোসেনের ভাতিজা হাসান আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন, মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে এসহাক আলী (৬০), তার স্ত্রী শাহানাজ বেগম (৫০), মেয়ে ইশরাত জাহান (৩০), আবুল হাসনাত (৩৫), আব্দুল হালিম (৩০) সহ অজ্ঞাত আরও ২ জন।
স্থানীয় ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলতাফ হোসেন (৫৮) এবং তার বড় ভাই এসহাক আলী (৬০) এর মধ্যে তর্কবির্তক শুরু হয়। তর্কের একপর্যায়ে তাদের দুই পরিবার দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয়পক্ষের ৭ জন আহত হয়। এরমধ্যে আলতাফ হোসেন গুরুতর আহত হয়েছিলেন। হাসপাতালে ভর্তি করার পরপরই তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়।
আহত অন্যরা হলেন, আলতাফ হোসেনের ছেলে আতিকুর হোসেন (৩২), আরেক ছেলে সজীব হোসেন (২২), ফজলুর রহমানের ছেলে সোহেল পারভেজ (২৮) সহ মোট ৭ জন। বর্তমানে দুই জন রামেকের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মামলার বাদী ও আলতাফ হোসেনের ছেলে সজীব হোসেন বলেন, তার বড় চাচা অন্যায়ভাবে তাদের জমি ভোগদখল করে আছে। পৌরসভায় সেই জমির রায় আমাদের পক্ষে আসায় রাস্তায় বাবার উপর হামলা চালানো হয়।
এসময় মামলার ১ নম্বর আসামি হাসান আলী আমার বাবার মাথায় এলোপাথারিভাবে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করে। বাবার মাথায় ৫০ টার বেশি সেলায় পড়ে। দুই দিন আইসিইউতে মৃত্যু শয্যায় ছিলো। এরপর বিকেলে মারা গেছেন।
এ বিষয়ে কাঁকনহাট পৌরসভার প্যানেল মেয়র আল মামুন জানান, জমি নিয়ে তাদের ভাইদের বিরোধ দীর্ঘ দিনের। কিন্তু তারা উভয়পক্ষই কেউ নিজেদের পক্ষে কোন কাগজপত্র দাখিল করতে পারে নি। একারণে কোন রায়ও দেয়া সম্ভব হয় নি। তবে দুই পক্ষই তার কাছে বিভিন্ন সময় সমাধানের জন্য এসেছেন।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল থেকে কিছু দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়েছিলো। এরপর আলতাফ হোসেনের ছেলে একটি মামলা দায়ের করে। মামলার পরপরই প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। অন্য আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আইন অনুযায়ীই পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।