কয়লার দাম বৃদ্ধির অজুহাতে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার সরকার ব্রিক্স ইট ভাটায় পুড়ছে কাঠ ও গার্মেসের জুট। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই ফসলি জমি আর লোকালয়ে গড়ে উঠেছে এই ইট ভাটা। কাঠ ও জুট পুড়িয়ে ইট তৈরি করায় পরিবেশ বিরোধী কালো ধোঁয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে হাজার হাজার মানুষ। স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে জমির ফসল। জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া ইউনিয়নের নলিছা গ্রামে ও ফসলি জমির পাশে গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা।’
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে ৮টিতেই ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৬৬টি ভাটা রয়েছে রায়গঞ্জ উপজেলাতেই। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উল্লাপাড়ায় ৩৮টি এবং সর্বনিম্ন ১টি ভাটা রয়েছে বেলকুচিতে। এর মধ্যে ২০২০-২০২১ অর্থ বছর পর্যন্ত ইট পোড়ানোর লাইসেন্স রয়েছে ১৮টি ভাটার। অপরদিকে লাইসেন্স থাকলেও নবায়ন নেই ৫৯ ভাটার। কোন প্রকার লাইসেন্স ছাড়াই চলছে ৬৩ ভাটা।’
শনিবার (২৫ মার্চ) সকালে স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, কয়লার দাম বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে সরকার বিক্স ইট ভাটায় দেদারছে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ ও জুট। প্রকাশ্যে প্রশাসনের নাকের ডগায় কাঠ, জুট পোড়ানোর উৎসব চললেও জেলা প্রশাসন বা পরিবেশ অধিদফতর থেকে কোনো অভিযান পরিচালনা হচ্ছে না বলে তারা জানান। এলাকাবাসী আরো বলেন, ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় গাছপালায় ফল ধরা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সারা বছরই শ্বাসকষ্টের মত ভয়াবহ রোগে ভুগতে হচ্ছে। ইটভাটার মালিক পক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় বাধা দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। অনেক স্থানে প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের ভয়ে সহ্য করতে হয় এসব অনিয়ম।,
সরকার ব্রিক্স ইট ভাটা মালিক ও রায়গঞ্জ ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি শোভন সরকার বলেন, অবকাঠামো নির্মাণের জন্য তো ইট তৈরি করতেই হবে। আমরা কয়লা-কাঠ, ঘষি ও জুট পোড়াচ্ছি। কিন্তু কয়লার দাম নাগালের বাইরে গেলে তখন বাধ্য হয়ে কাঠ ও জুট পোড়াতে হচ্ছে। তবে আমাদের এগুলো জিগজাগ ইটভাটা হওয়ায় পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে না।,
সিরাজগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল গফুর বলেন, ‘ইটভাটায় কাঠ, জুট পোড়ানোর কোনো সুযোগ নেই’। জুট পোড়ানোর অভিযোগ পেলে আমরা জেলা প্রশাসকের সাথে সমন্বয় করে দ্রুতই অভিযানে নামবো। একযোগে সবগুলো ইটভাটায় এ অভিযান পরিচালনা করা হবে। এরপর প্রচলিত আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, সিরাজগঞ্জে ৪৬টি ইটভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র রয়েছে। ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ৮৮টি ভাটা। বাকি ৬টি ইটভাটার তথ্য নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে।’
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোবারক হোসেন বলেন, ইটভাটায় কাঠ ও জুট পোড়ানোর কোন সুযোগ নেই। যদি কেউ কয়লার পরিবর্তে কাঠ বা জুট পোড়ায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, অনুমোদনহীন ইটভাটা বন্ধে খুব শিগগিরই আমাদের অভিযান শুরু হবে।
এ জাতীয় আরো খবর ....