কাজী এনায়েত উল্লাহ, রাজশাহী অফিস:
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) শাখা ছাত্রলীগের এক নেতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার বিকেলে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রাজশাহীর ইনস্টিটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বাদী হয়ে বুধবার বিকেলে মামলাটি করেন। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে ৩ জনকে আটক করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক শাহ আলম ওরফে রাতুল (২৪), নূর মোহাম্মদ ওরফে নাবিল (২৩) ও কামরান সিদ্দিক ওরফে রাশেদ (২৩)। তাঁরা তিনজনই রুয়েটের কেমিকেল অ্যান্ড ফুড প্রসেসিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী।
বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে নাজমুল তাঁর বান্ধবীকে নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইবলিশ চত্বরসংলগ্ন আমতলার পুকুরপাড়ে বসে ছিলেন। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে শাহ আলম, নূর মোহাম্মদ ও কামরান নামে তিন তরুণ পুকুরপাড়ে এসে নাজমুলের কাছে পরিচয় জানতে চান। নাজমুল ক্যাম্পাসে ঘুরতে এসেছেন জানালে, ওই তিন তরুণ নাজমুলের বান্ধবীকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে নাজমুলের বান্ধবীকে তাঁরা ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে বলেন।
পরে ওই তিন তরুণ নাজমুলকে জোর করে মোটরসাইকেলে তুলে রুয়েটে নিয়ে যান। সেখানে নাজমুলের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। নাজমুল চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ৩ তরুণ মতিহার থানাসংলগ্ন সুইটের মোড়ে একটি গ্যারেজে নিয়ে যান। সেখানে অজ্ঞাতনামা আরও দুই তরুণ তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হন। তাঁরা বিভিন্নভাবে নাজমুলকে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে।একপর্যায়ে নাজমুল বাধ্য হয়ে তাঁর কয়েকজন বন্ধুকে টাকার জন্য ফোন করেন।
কিন্তু অনেক সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও টাকা না পাঠানোয় নাজমুলকে পাইপ দিয়ে মারধর করা হয়। পরে নাজমুল বাধ্য হয়ে তাঁর বাবাকে ফোন করেন। এ সময় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাঁর বাবার সঙ্গে কথা বলে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এর মধ্যে নাজমুলের বন্ধুরা অপহরণের বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নাজমুলকে উদ্ধার করে এবং রাতুল, নাবিল ও রাশেদকে আটক করে। পরে নাজমুলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে গতকাল বিকেলে মামলা করেন নাজমুল।
এ বিষয়ে নগরের মতিহার থানা পুলিশের ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনাটি জানার পরই পুলিশ ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে উদ্ধার করে সেখান থেকে তিনজনকে আটক করে। পরে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণ তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং দুইজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেছেন। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মাহফুজুর রহমান বলেন, বুধবার শাহ আলমকে রুয়েট শাখা ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাঁকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।