চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা পৌরসভাধীন পুরাতন বাজার নিজ বাড়ী থেকে গত ২৪.০৯.২০২২ খ্রিঃ তারিখ সকাল ১১ টায় হাত-মুখ বাঁধা অবস্থায় ষাটোর্ধ্ব দম্পত্তি নজির উদ্দিন ও ফরিদা খাতুন এর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গত ২৩.০৯.২০২২ খ্রিঃ তারিখ দিবাগত রাতে যেকোন সময় অজ্ঞাতনামা দুবৃর্ত্তরা নজির উদ্দিনকে শৌচাগারের ভিতরে হাত-মুখ বেঁধে শ্বাসরোধ ও গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এবং তাঁর স্ত্রী ফরিদা খাতুন কে ঘরের মেঝেতে ফেলে গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মৃত্যু নিশ্চিত করে বাড়ীর বাইরের গেটে তালাবদ্ধ করে পলিয়ে যায়। ঘটনা সংক্রান্তে নিহত নজির উদ্দিন-ফরিদা খাতুন এর একমাত্র মেয়ে ডালিয়ারা পারভীন শিলা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের নামে আলমডাঙ্গা থানার মামলা নং-১১ তারিখ-২৫.০৯.২০২২ ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।
উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন, পুলিশ সুপার, চুয়াডাঙ্গা’র প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধায়নে এবং সার্বিক দিক-নির্দেশনায় দ্রুত মামলার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য ডিবি ও আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের একাধিক টিম একযোগে কার্যক্রম আরম্ভ করে। অবশেষে আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন, পুলিশ সুপার, চুয়াডাঙ্গা’র নেতৃত্বে আনিসুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল), চুয়াডাঙ্গা, মোঃ আলমগীর কবীর, অফিসার ইনচার্জ, জেলা গোয়েন্দা শাখা, চুয়াডাঙ্গাসহ ডিবি ও সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল, চুয়াডাঙ্গা’র চৌকস টিম এসআই(নিঃ) সোহেল রানা, এসআই(নিঃ) মোহাম্মদ শিহাব উদ্দিন, এসআই(নিঃ) মুহিদ হাসান, এএসআই(নিঃ) মোঃ রজিবুল হক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে, নিরলস প্রচেষ্ঠায় অভিযান পরিচালনা করে ষাটোর্ধ্ব দম্পত্তি (জোড়া খুন) হত্যা মামলার সাথে জড়িত প্রকৃত আসামীদের গ্রেফতার পূর্বক তাদের নিকট থেকে নগদ টাকা, রক্তমাখা জামা কাপড়, মোবাইল ফোনসহ মামলার বিভিন্ন ধরণের আলামত উদ্ধার করেন।
মামলাটি তদন্তকালে জানা যায় যে, আসামী শাহাবুল ইতোপূর্বে ভিকটিম নজির উদ্দিন এর ট্রলির ড্রাইভার ছিল। পূর্বসূত্রে পরিচিত হওয়ায় ঘটনার দিন অর্থাৎ গত ২৩.০৯.২০২২ খ্রিঃ সকালে ভিকটিম নজির উদ্দিন এর নিকট বালু ক্রয়ের প্রস্তাব প্রদান করে। পরবর্তীতে একই তারিখ রাত অনুমানিক ৮টা৪০ মিনিট আসামী শাহাবুল, রাজীব ও বিদ্যুৎ পরস্পর যোগসাজসে ভিকটিম নজির উদ্দিন এর বাড়ীর সামনে উপস্থিত হয়ে ডাকতে থাকে। ভিকটিম নজির উদ্দিন আসামীদের ডাকে সাড়া দিয়ে বাড়ীর মেইনগেট খুলে দিলে উল্লেখিত আসামীরা বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করে। ভিকটিম নজির উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রীকে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে নগদ টাকা পাবার আশায় আক্রমণ করলে ভিকটিমদ্বয় প্রতিরোধ করলে নজির উদ্দিনকে শৌচাগারের ভিতরে হাত-মুখ বেঁধে শ্বাসরোধ ও গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এবং তাঁর স্ত্রী ফরিদা খাতুন কে ঘরের মেঝেতে ফেলে গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মৃত্যু নিশ্চিত করে টাকা, মোবাইল ফোন, ভিকটিমের ব্যবহৃত কালো ব্যাগের মধ্যে নিয়ে বাড়ীর বাইরের গেটে তালাবদ্ধ করে পলিয়ে যায়। পরবর্তীতে শাকিল এর নিকট থেকে ভিকটিম নজির উদ্দিন এর ব্যবহৃত Nokia-230 মোবাইল ফোন এর সূত্র ধরে মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা হয়। মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
উদ্ধারঃ
ক) রাজীব এর নিকট থেকে ৩৫,০০০/-(পয়ত্রিশ হাজার)টাকা।
খ) বিদ্যুত এর নিকট থেকে ৮,০০০/-(আট হাজার) টাকা।
গ) শাকিল এর নিকট থেকে ভিকটিম নজির উদ্দিন এর ব্যবহৃত Nokia-230 মোবাইল ফোন।
গ) আসামীদের হেফাজতে থাকা পান বরজে পুতে রাখা ভিকটিম ফরিদার হ্যান্ডব্যাগ ও ভিকটিম নাজির উদ্দিন এর কালো অফিসিয়াল ব্যাগ।
ঘ) হত্যার সময় পরিধানকৃত আসামীদের রক্তমাখা জামা কাপড়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিবরণঃ
১। মোঃ শাহাবুল হক(২৪), পিতা- বজলুর রহমান, সাং-আসাননগর (মাঝেরপাড়া), থানা-আলমডাঙ্গা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা।
২। মোঃ রাজীব হোসেন(২৫), পিতা-পিন্টু রহমান, সাং-আসাননগর (শেষপাড়া),থানা-আলমডাঙ্গা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা।
৩। মোঃ বিদ্যুত আলী(২৩), পিতা-মাসুদ আলী, সাং-আসাননগর (মাঝেরপাড়া), থানা-আলমডাঙ্গা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা।
৪। মোঃ শাকিল হোসেন(২১), পিতা-মোঃ তাজ উদ্দিন, সাং-আসাননগর(স্কুলপাড়া), থানা-আলমডাঙ্গা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা।