চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা বধ্যভূমি পরিদর্শন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন, মাননীয় সাংসদ সদস্য, চুয়াডাঙ্গা-১, মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান, জেলা প্রশাসক, চুয়াডাঙ্গা এবং আবদুল্লাহ্ আল-মামুন, পুলিশ সুপার, চুয়াডাঙ্গা।
চুয়াডাঙ্গা জেলাধীন আলমডাঙ্গা বধ্যভূমি ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর নৃশংস গণহত্যার নিদর্শন হিসেবে পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিদের নির্মমভাবে হত্যা করে এই বধ্যভূমিতে পুঁতে রাখা হয়। দেশ স্বাধীন হবার পর এই বধ্যভূমিতে শত শত মানুষের মাথার খুলি ও হাড় পাওয়া যায়। ২০১২ সালে তরুণ প্রজন্মের কাছে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর নির্যাতনের ইতিহাস তুলে ধরার লক্ষ্যে আলমডাঙ্গা বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ ও কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়।
ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, ১৯৭১ সালে কুমার নদের উপর অবস্থিত লাল ব্রিজের দুই পাশে মিলিটারি ক্যাম্প ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রথমে চুয়াডাঙ্গাকে অস্থায়ী রাজধানী হিসেবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা পাকিস্তান সামরিক বাহিনী জেনে যায় এবং চুয়াডাঙ্গার সাধারণ জনগণের উপর অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
পরবর্তীতে মুজিবনগরে অস্থায়ী সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। সে সময় পাকবাহিনী লালব্রিজ দিয়ে যাতায়াতকারী ট্রেনগুলো আলমডাঙ্গায় এবং কালিদাসপুর প্রান্তে দাঁড় করিয়ে নিরাপরাধ যাত্রীদের ধরে ধরে নিয়ে যায় এবং শত শত নারী- পুরুষকে নির্যাতন করে হত্যা করে লাশ পুঁতে ফেলে। ১৯৭১ সালের জুন মাসের শেষ থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত নারকীয় নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। মুক্তিযুদ্ধকালীন পাক-ওয়াপদা ভবনের বাউন্ডারির কাছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের হলুদ খালাসি ঘর ছিল, যা ‘টর্চার সেল’ হিসেবে পরিচিত ছিল। এই স্থানটিতে বধ্যভূমি কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হয়।
আলমডাঙ্গা বধ্যভূমির দেয়াল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার ছাত্র-ছাত্রী দ্বারা নকশাকৃত। বধ্যভূমির ভেতরে শহীদদের ভাস্কর্য ও মিউজিয়ামে ১৭৫৭ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের পর্যায়ক্রমিক ইতিহাসের ছবি স্থান পেয়েছে। প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে অসংখ্য দর্শনার্থী মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এই স্থানে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন।