রাজশাহীর দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারের উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে টেন্ডার নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। টেন্ডারপত্র আহ্বানের নির্ধারিত সময় ও নিয়ম মেনে টেন্ডারে অংশগ্রহণ করে যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সর্বনিম্ন দর দিয়ে প্রথম হয়েছে তাদেরকে কাজ না দিয়ে টপকে গিয়ে দ্বিতীয় দরদাতা ও ৬ষ্ঠ দরদাতাকে কাজ দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে করে সরকার প্রায় ৬৫ লক্ষ টাকার রাজস্ব হারাতে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস রজব অ্যান্ড ব্রাদার্সের প্রোপাইটার রজব আলী জানান, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলাধীন রাজাবাড়ীহাট দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারের গত ২০ এপ্রিল ২০২২ তারিখের টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পশু খাদ্য সরবরাহের জন্য অংশগ্রহণ করি।
একটি টেন্ডার যার নং- ৬৮২৯৯৮। এই টেন্ডারে গমের ভূষি সংগ্রহের জন্য দরপত্রে অংশগ্রহণ করে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে প্রথম স্থান অধিকার করি। তাদের কাগজপত্রেও আমাদের সিরিয়াল প্রথম রাখা হয়। তবে আমার প্রতিষ্ঠানকে কাজ না দিয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স করিম ট্রেডার্সকে কাজটি পাইয়ে দেয়।
এছাড়াও রজব আলী ও তার প্রতিনিধি জাকির হোসেন টুটুল আরও অভিযোগ করেন, টেন্ডার নং-৬৮৩১১০ তে সয়াবিন খাবার, ভূট্ট্রার ভিটামিন প্রিমিক্স, রকসল্ট ও চুনা পাথর সরবরাহের আহ্বান করা হয়। এতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আব্দুস সাফি সালেক প্রথম হলেও তাকে কাজটি না দিয়ে ৬ নং দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স করিম ট্রেডার্সকে কাজ পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করছেন।
এছাড়াও টেন্ডার নং-৬৮৩০৯৭ তে ধানের খড়, ডালের তুষ, ছোলা সংগ্রহ, ডাই-ক্যালসিয়াম ফসফেট ও লোডিন সল্ট সরবরাহের আহ্বান করলে সেই টেন্ডারেও মেসার্স আব্দুল সাফি সালেক প্রথম দরদাতা হিসেবে থাকলেও এখানেও ৬ নং দরদাতা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স করিম ট্রেডার্সকে খাদ্য সরবরাহের জন্য নির্ধারণ করে দেয়।
সকল কাজের জন্য মের্সাস করিম ট্রেডার্স কাজটি পাওয়াতে অন্যান্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাজশাহীর দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারের উপ-পারিচালক ডাঃ মো: আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছেন যে, মের্সাস করিম ট্রেডার্সের সাথে খামারের উপ-পরিচালকের সাথে গোপন সম্পর্ক থাকায় অবৈধভাবে তাকে কাজটি পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করছেন। ফলে এতে করে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাতে বসেছে।
এ বিষয়ে রাজশাহীর দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামার রাজাবাড়ীহাট উপ-পারিচালক ডাঃ মো: আতিকুর রহমানের যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, যারা অভিযোগ সঠিক নয়। ই-জিপি টেন্ডারে অসাধু অবলম্বনের কোন সুযোগ নাই। সর্বনিন্ম দরতাদা হলেই যে কাজ পাবে বিষয়টি এমন নয়। যারা কাজটি পাইনি তারা টেন্ডারের নিয়ম অনুযায়ী সকল কাগজপত্র দাখিল করতে পারেনি। তাই তারা কাজ পাইনি বলেও জানান তিনি।
একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তিনটি কাজই কিভাবে পেলো? এমন প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, হয়তো কাকতালীয়ভাবে তিনি পেয়ে গেছেন। তার কাগজ পত্র সঠিক আছে অন্যদের নাই তাই হয়তো তিনিই পেয়েছেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর কৃষি খামার বাড়ী পরিচালক (উৎপাদন) ড. রেয়াজুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এই বিষয়টি আমাদের জানা আছে এবং এটি নিয়ে কাজ করছি।