মৌলভীবাজার জেলার লাখো মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। জেলার সবগুলো নদনদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এমন ঘটনা ঘটছে । ইতোমধ্যে জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা ছাড়া অপর ৬টি উপজেলার ৩৫টি ইউনিয়নের বেশিরভাগ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এ দিকে কুশিয়ারা নদীর তীররক্ষা বাঁধের ওপর দিয়ে পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে। এতে সদর উপজেলার খলিলপুর ও মনুমুখ ইউনিয়নসহ ৬টি ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যা উপদ্রুত এলাকায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুই হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট ও ৭ উপজেলায় ২১০ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রাম, নতুনবস্তি ও হামরকোণা গ্রামের কুশিয়ারা নদী তীররক্ষা বাঁধের ওপর দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে স্থানীয় শেরপুর বাজারসহ আরও ৪টি গ্রামের অন্তত হাজার খানেক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
এদিকে সদর উপজেলার মনুমুখ, আখাইলকুঁড়া, একাটুনা, কনকপুর, চাঁদনীঘাটের বিভিন্ন গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। একইভাবে রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার অসংখ্য গ্রামের হাজার হাজার মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ৯৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ১৫ হাজার মানুষ বসবাস করছেন। ৬০টি মেডিকেল টিম বন্যা উপদ্রুত এলাকায় কর্মরত রয়েছে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অর্ণব মালাকার।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, কমলগঞ্জ ছাড়া মৌলভীবাজারের ৭ উপজেলার মধ্যে ৬টি উপজেলার বেশির ভাগ ইউনিয়ন বন্যাকবলিত। বন্যাকবলিতদের সাহায্যার্থে বরাদ্দ দেয়া চাল ও শুকনো খাবার এরই মধ্যে উপজেলা দপ্তরের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে পৌঁছে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, জেলার প্রধানতম নদীগুলোর মধ্যে কুশিয়ারার পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া মনু ও ধলাই নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। প্রতি ঘণ্টায় এসব নদ-নদীতে ৫ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। তবে ২-১ দিনের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে মন্তব্য করেছেন মৌলভীবাজার পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান।