আলমডাঙ্গা গবিন্দপুর খন্দকার পাড়া জামে মসজিতে শহীদ টগরের ৫২ তম শাহাদৎ বার্ষিকী পালন উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়েছে।গত ১৩ আগষ্ট বাদ আসর দোয়া ও আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মসজিদ কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার আলহাজ্ব ইসমাইল হোসেন।প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্হিত ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল কুদ্দুস।এ সময় তিনি বলেন আমি আর টগর একই সাথে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম,ট্রেনিং শেষ করে এক সাথে দেশকে শত্রু মুক্ত করতে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করি,টগর খুব শক্তিশালি ছিল বিধায় আমাদের গ্রুপে ১টি মেশিনগান ছিল, সেটা টগরের কাছে থাকত।৭১ এর আগষ্ট মাসে ১৩ তারিখ আমরা সুকচা বাজিতপুর গ্রামে খাবার জন্য আইনাল বিশ্বাসের বাড়ী প্রস্তুতি নিচ্ছিল,এমন সময় খবর আসে পাক সেনারা এদিকে এগিয়ে আসছে,আমরা খাওয়ার ফেলে রেখে সুকচা বাজিতপুর জিকে ক্যানেলের কাছে পজিশন নিলাম,ওখানে একটা পরিত্যাক্ত ইটভাটা ছিল,সেই ভাটাতে বসে আমরা অপেক্ষা করছিলাম,হটাৎ পাকসেনাদের আসতে দেখে তাদেরকে লক্ষ করে ব্রাশফায়ার করে টগর,এক, দুইবার ফায়ার করার পরে মেশিনগান জ্যাম করলে আর গুলি হয়না,ঘটনা বুঝতে পেরে পিছন থেকে অন্য যোদ্ধারা পিছু হটে,ততক্ষনে পাকসেনারাও বুঝতে পারে আমাদের অবস্হান।তখন তারা উপর্যপরি গুলি ছুড়তে থাকে, ঠিক এমন সময় টগর মাথা উঁচু করে পাকসেনাদের অবস্হান দেখতে গেলে কপালে গুলি লাগে।টগর ওখানে লুটিয়ে পড়ে।বাকিরা সকলে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিলাম,কিন্ত টগরের লাশ আমরা আনতে পারি নি,বলতে বলতে চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ে।বিশেষ বক্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব ইসমাইল হোসেন বলেন দীর্ঘ ৫১ বছর পার হয়ে গেছে,টগর ভাইকে আমরা হারিয়েছি,কিন্ত যারা সেদিন টগর ভাইকে বা সকল মুক্তিযোদ্ধাদের বিপদে ফেলতে পাক সেনাদের ডেকে নিয়ে গেছিল,সেই সব স্বাধীনতা বিরোধীরা, আজকে তারা সমাজে প্রতিষ্টিত,তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলা যায় না,তারা এখন নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবি করে,১৩ আগষ্ট টগর ভাই ভাত খেতে বসবে এমন সময় পাক সেনা আসার খবর পাই,টগর ভাইয়ের ভাত খাওয়া হয়নি,আমাদের প্রতিজ্ঞা করা উচিত ঐ সব লোকদেরকে আমরা এড়িয়ে চলব। এরপর ১২ নভেম্বর আলমডাঙ্গা শত্রু মুক্ত করতে পাকসেনাদের সাথে যুদ্ধে, শহীদ টগরের খালাত ভাই খন্দকার আশরাফ উদ্দিন আশু থানার সামনে পাকসেনাদের গুলিতে শহীদ হন।সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন,বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার,বীর মুক্তিযোদ্ধা সাজ্জাদ মাষ্টার,শহীদ টগরের সহদর বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার জামসেদ নূরী বকুল,প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক হামিদুল ইসলাম আজম,খন্দকার খাইরুল ইসলাম,মীর মনিরুজ্জামান,মীর হাকিম,রাকিবুল ইসলাম প্রমুখ।সভা শেষে শহীদ টগর ও শহীদ আশুর আত্বার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন মসজিদের ইমাম মওঃফজর আলী।