আগে জেনে নেওয়া যাক, মফিজ কারা? উত্তরবঙ্গের মানুষ মফিজ হলো কিভাবে?
গাইবান্ধায় একজন গরিব ড্রাইভার ছিলেন, যিনি তাঁর সঞ্চিত পুঁজি এবং পৈত্রিক বসতবাড়ি বিক্রি করে ঢাকা-গাইবান্ধা-ঢাকা রোডে চলাচলের জন্য একটি পুরাতন বাস ক্রয় করেন এবং নিজেই ওই গাড়ির চালক ছিলেন। তিনি গাইবান্ধার মানুষ তথা উত্তরবঙ্গের দিনমজুর ও শ্রমজীবী তথা সকল মানুষকে স্বল্প ভাড়ায় ঢাকা-গাইবান্ধা-ঢাকা যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দেন।
কয়েক বছর পরে বয়সের ভারে উনি যখন ক্লান্ত তখন তিনি পুরাতন বাসটা বিক্রি করে একটা নতুন বাস কিনেন এবং চালক হিসেবে নতুন একজনকে নিয়োগ দেন। নতুন চালক সকল যাত্রীদের কাছ থেকে সমান ভাড়া আদায় করেন। তখন রংপুর, দিনাজপুর ও গাইবান্ধা অঞ্চলের মানুষ বৃদ্ধ ড্রাইভার এর কাছে অনুরোধ করেন ভাড়া কিছুটা কমিয়ে নেয়ার জন্য। তখন এই বৃদ্ধ ড্রাইভার অর্থাৎ গাড়ির মালিক একটা টোকেনের ব্যবস্থা করেন।
যাতে লেখা ছিল “মফিজ ”
মানে যার কাছে মফিজ লেখা টোকেন থাকতো, নতুন গাড়ির সুপারভাইজার তার ভাড়া কম নিতো। তাই মাঝে মাঝে গাড়ির ছাদে কয়জন মফিজ লেখা টোকেনধারী আছে তা জানার জন্য গাড়ির ভেতর থেকে সুপারভাইজার জোরে ডাক দিয়ে সংক্ষেপে জিজ্ঞেস করতেন,
“এই ছাদের উপর মফিজ কয়জন আছে?
আর এই কথাটা শুনে আমাদের মত সভ্য মানুষরা এটাকে ঠাট্টা মশকরা এবং নিচু তলার মানুষ হিসেবে উত্তরবঙ্গের মানুষদেরকে গণনা করি! ভাবা যায়! মফিজ ভাই কত সহজ-সরল, উদার, মানব দরদি সর্বোপরি পরোপকারী ছিলেন! কত নির্মল মনের মানুষ ছিলেন।এখন কি খুঁজে পাওয়া যায়- এমন মানব দরদি কোন মফিজ! আজকাল সত্যিকারের মফিজের বড় অভাব। সম্পত্তি আর প্রভাব-প্রতিপত্তির অসহনীয় প্রতিযোগিতার এই দিনে সত্যি মফিজদের বড্ড অভাব। অস্থির এই সমাজ ব্যবস্থার বিপরীতে তাই কিছু মফিজ চাই। ঘরে ঘরে মফিজ চাই। নিজে মফিজ হোন, অন্যকে মফিজ হতে উৎসাহিত করুন।
আর উত্তরবঙ্গের মানুষকে “মফিজ” বললে গর্ববোধ করুন।
হীনমন্যতায় না ভy‡M, মফিজদের গল্পটা বা এই মেসেজটা তাদের জানিয়ে দিন।