সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে সাধারণ মানুষকে মামলা দিয়ে হয়রানি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও ব্ল্যাকমেইল করে চাদাঁবাজির অভিযোগ উঠেছে তাহিরপুর সার্কেল এসএসপি মো. নাসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এই পুলিশ কর্মকর্তার অবৈধ সব কর্মকাণ্ডে সহযোগী হিসেবে রয়েছেন স্থানীয় এক সাংবাদিক। অভিযুক্ত সাংবাদিক উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের কামড়াবন্দ গ্রামের মৃত বৈদ মিয়ার ছেলে হাবিব সারোয়ার আজাদ।
এ দুজনের সকল অপকর্ম তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আজ ১৫ জুলাই (সোমবার) বিকেলে উপজেলার বাদাঘাট, আনোয়ার পুর, বড়ছড়া ও কলাগাঁও এলাকায় একযোগে প্রতিবাদ সভা ও মানবন্ধন করা হয়েছে। তাহিরপুর উপজেলাবাসীর ব্যানারে এসব মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্টিত হয়। এর আগেও গত ১৩ জুলাই শনিবার একই দাবিতে বাদাঘাট বাজারে আরেকটি মানববন্ধন করে এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তাহিরপুর সীমান্তের ভারতীয় বুঙ্গার কয়লা, চিনি, মাদক, গাঁজা ইয়াবার ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন ভারতীয় পণ্য চোরাচালানের গডফাদার এই হাবিব সারোয়ার আজাদের ও পুলিশের এই কর্মকর্তর নানা কুকর্মের ইতিহাস সাধারণ জনতার সামনে তুলে ধরেন।
বক্তরা বলেন, আজাদ সাংবাদিকতাকে পুঁজি করে সীমান্তের কালো ব্যাবসায়ীদের দ্বারা ও তাহিরপুর সার্কেল এএসপি মো. নাসিম উদ্দিনের সহযোগিতায় একটি সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ বাহীনী গড়ে তুলে। এ বাহিনী নিয়ে সীমান্ত এলাকার কালো ব্যবসার বিভিন্ন পয়েন্টসহ এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে চোরাচালান ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রন করতে শুরু করে। যা আজ অবধি বহাল রয়েছে। সাধারন মানুষ তার এসব কালোবাজারি ব্যাবসা ও অপকর্ম জানা স্বত্তেও ভয়ে মুখ খুলতে চাইনা।
তার আন্ডারগ্রাউন্ডের এসব অপকর্ম নিয়ে মুখ খুলতে চাইলে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়।
এ সময় কলাগাওঁ আওয়ামী লীগ নেতা আসমত আলী, কামাল হোসেন কাদরী, কয়লা ব্যবসায়ী
উজ্জ্বল মিয়া ও কয়লা শ্রমিক সামসুল হক বলেন, এসব মাদক ব্যবসা ও ভারতীয় কয়লা ও চিনির চোরাচালান করে গত কয়েক বছরে আজাদ কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। এছাড়াও হাবিব সারোয়ার আজাদ নিজেকে সাংবাদিক ও র্যাব,পুলিশ, বিজিবির সোর্স পরিচয় দিয়ে তার একান্ত সহযোগীদের নিয়ে সীমান্ত এলাকা দিয়ে মাদকদ্রব্য পাচাঁর করাসহ চাঁদাবাজি করতে গিয়ে দফায় দফায় গণধৌলাইয়ের শিকার হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আদালতে ও থানায় চাঁদাবাজি ও চোরাচালান ও শিশু বলৎকারসহ একাধিক মামলা হয়েছে। শুধু তাই নয় “হাবিব সারোয়ার আজাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর পোষ্টার পুরানো ও মূর্তি ভাংচুর মামলাও রয়েছে।
বড়ছড়া জয় বাংলা বাজারের মানববন্ধনে কয়লা ব্যবসায়ী মুসা মিয়া ও আলী হোসেন বলেন, মাদ, গাজাঁ, ইয়াবা ব্যবসায়ীসহ সীমান্তের চোরাচালানের গডফাদার হাবিব সারোয়ার আজাদের অত্যাচারে এলাকার সর্বস্তরের মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়েছি। আমরা আমরা সরকারকে টেক্স দিয়ে বৈধ ব্যবাসা করি। কিন্তু আজাদ আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে চাদাঁ দাবি করে। বৈধ কয়লা বেচলেও তাকে চাদাঁ দিতে হয়। আর অবৈধ হলেতো কথাই নেই। তার এইসব অপকর্মের সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক বিচারের আওতায় আনার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জোর দাবি করছি।
পাতারগাওঁ মানববন্ধনে বাদাঘাট ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন,হাবিব সারোয়ার আজাদ প্রশাসনের নাম ভাংগিয়ে ওপেন চাঁদাবাজি ও মাদকের ব্যবসা করছে,তার কারণে এলাকার ছোট বড় সকলেই অতিষ্ট, আমরা তার দৃষ্ঠান্ত মূলক শাস্তি দাবী করছি। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার এম এন মোর্শেদ( পিপিএম সেবা) এর সরকারি মোবাইল নাম্বারে ফোন দিলে তিনি রিসিভ না করায় উনার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ, গতকাল ২০১৮ সালে ইয়াবা বিক্রি শেষে চরগাঁও লতারকিত্তা নামকস্থানে যাওয়ার পর খবর পেয়ে এলাকাবাসী ৩৪৫পিছ ইয়াবাসহ হাবিব সারোয়ার আজাদকে হাতেনাতে আটক করে। এসময় আজাদ মাতাল অবস্থায় এলাকার লোকজনের সাথে খারাপ আচরণ করলে এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে তাকে গণধৌলাই দেয়। খবর পেয়ে বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন এসআই সাইদুর ও এএসআই পীযুষ ঘটনাস্থলে গিয়ে ইয়াবাসহ মাতাল অবস্থা তাকে গ্রেফতার করে। একই সালে পার্শ্ববর্তী বিন্নাকুলি বাজারে ইয়াবা বিক্রি করার সময় হাবিব সারোয়ার আজাদের ভাতিজা জুবায়ের শাহকে ৫০০পিছ ইয়াবাসহ র্যাব গ্রেফতার জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ।