ঝিনাইদহের সীমান্তবর্তী উপজেলার মহেশপুরে অবস্থিত এশিয়ার বৃহত্তম শস্য বীজ উৎপাদন খামার দত্তনগর কৃষি ফার্ম। মহেশপুর উপজেলার এশিয়ার বৃহত্তম দত্তনগরের বীজ উৎপাদন পর থেকেই নানা অনিয়ম দুর্নীতিতে জর্জরিত। ভূয়া বিল ভাউচার, হাইব্রিড বীজ প্রেরণে অনিয়ম, শ্রমিকের টাকা আত্মাসাৎ, নারী নির্যাতন সহ নানা অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ থাকলেও এবার অভিযোগ উঠেছে দত্তনগর খামারের অতিরিক্ত দায়িত্বরত যুগ্ম পরিচালক কামরুজ্জামান শাহিনের বিরুদ্ধে। তিনি খামারের মাটি অসৎ উদ্দেশ্যে ভেকু ( এস্কেভেটর) দিয়ে কেটে ট্রাক্টরে করে মাটি বিক্রি করছেন বলে জানা গেছে।
বুধবার সকালে গোকুলনগর খামারের অভ্যন্তরে ভেকু দিয়ে ট্রাক্টরে মাটি ভর্তিকরে বিক্রি করার সময় জনতার বাঁধার মুখে তা বন্ধ করেন। জানাগেছে যুগ্ম পরিচালক কামরুজ্জামান শাহিনের বাড়ি দত্তনগর কুশাডাংগায় পাঁচটি বীজ উৎপাদন খামারের মধ্যে একটি খামার কুশাডাংগা বীজ উৎপাদন খামার্, খামারের ভিতরে বাড়ী হওয়ায় তিনি কাউকে তোয়াক্কা করেন না, নিজের খেয়াল খুশি মতো খামার পরিচালনা করে থাকেন তিনি।
গোকুলনগর গ্রামের হামিদ এ প্রতিবেদকে বলেন কামরুজ্জামান শাহিন এখানে যোগদানের পর থেকে তিনি বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়েছেন। তিনি সরকারি মাটি চুরি করে বিক্রি করছিলেন প্রায় ১২০ গাড়ি বিক্রি করেছেন ১৮০০ টাকা গাড়ী প্রতি দাম হিসেবে। এলাকার মানুষ বাঁধা দিলে তিনি হুমকি ধামকি দেন পরে জনতার বাঁধার মুখে তিনি আপাতত মাটি বিক্রি ও কাটা বন্ধ করেন।
স্থানীয় একজন জনপ্রতিনিধি বলেন, উনি খামারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে খামার গুলিতে রামরাজত্ব কায়েম করেছেন। উনার অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে থাকেন, স্হানীয় হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন উপ পরিচালক বলেন উনার কাছে সকল অনিয়মই নিয়ম। উনার গাড়ীতে প্রতি সপ্তাহে ৫০ লিটার তেল দিতে হবে এটা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি ইচ্ছা মতো শ্রমিক ছাঁটাই, শ্রমিকদের হাজিরা কর্তন করে থাকেন। এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করে থাকেন। শুধু হয়রানি নয় চরম ভাবে অপমান অপদস্ত করে থাকেন তিনি। এসব অপকর্মের সহযোগিতা করেন গোকুলনগর খামারের উপ পরিচালক জাহিদুর রহমান বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তিনি শ্রমিকদের হাজিরা নিজের ইচ্ছা মতো ভূয়া মাস্টাররোলে তৈরি করতে উপ পরিচালকদের বাধ্য করেন এবং নিজে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন বলেও অভিযোগ রয়েছে খামার পাড়ায়।
শতভাগ শ্রমিকের হাজিরা ব্যাংক একাউন্টে দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও তিনি বিভিন্ন অজুহাতে তা এখনো বাস্তবায়ন হতে দেননি বলে জনশ্রুতি আছে।
জানাগেছে যুগ্ম পরিচালক কামরুজ্জামান শাহিন কে বদলী করা হয় একটি পরিপত্রে এবং দত্তনগর খামারের যুগ্ম পরিচালক হিসেবে যোগদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় যশোরে দায়িত্ব প্রাপ্ত রোকনুজ্জামানকে। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির বলে তিনি রোকনুজ্জামান কে দায়িত্ব বুঝে না দিয়ে এখনো দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
যুগ্ম পরিচালক রোকনুজ্জামান এ প্রতিবেদনকে জানান তিনি দায়িত্ব নিতে গিয়েছিলেন তবে উনাকে দায়িত্ব বুঝে দেওয়া হয়নি।এমনকি এখনো পর্যন্ত দত্তনগর খামারের যুগ্ম পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব আছেন উনাকে নতুন করে কোন চিঠি দেওয়া হয়নি।
এসব বিষয়ে কথা হয় অভিযুক্ত যুগ্ম পরিচালক কামরুজ্জামান শাহিনের সাথে, তিনি বলেন আমি মাটি বিক্রি করিনি। আমার বাগানে মাটি ভরাট করছিলাম– পারলে নিউজ করেন।সরকারি মাটি নিজের বাগানে ভরাট করতে পারবেন কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন নিউজ করে কিছু করতে পারলে করে নেন।
এই খামারে দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত হওয়ার পর থেকেই দীর্ঘদিন অদৃশ্য ক্ষমতার দাপটে নিজস্ব বলয় তৈরী করে নিজের খেয়াল খুশি মতো চালাচ্ছেন দত্তনগর কৃষি খামার।
এ বিষয়ে কথা হয় জিএম সীড দেবদাস সাহার সাথে, তিনি বলেন আপনার কাছে বিষয়টি শুনলাম অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নেওয়া হবে।