সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জে ডিবি পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জোর করে টাকা ছিনিয়ে নেবার অভিযোগ উঠেছে তিনজন আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এঘটনায় বগুড়া জেলার ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সজিব আহমেদ (মনির) (২৫) সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ থানায় ও সিরাজগঞ্জ ডিবি কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করছেন।
গত ৮ মার্চ শুক্রবার রাতে রায়গঞ্জ উপজেলার ঢাকা টু বগুড়া মহাসড়কের অভি হাইওয়ে ভিলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে ঘটনার ১৬ দিন পার হলেও এখনো প্রশাসন ঘটনার কোন কিনারা করতে পারেনি।
ঘটনার সাথে নাম উল্লেখ তিন জন আসামি হলেন, রায়গঞ্জ আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মো: মাইকেল (৩৫), রায়গঞ্জ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো: ইলিয়াস (৩১) ও রায়গঞ্জ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: আলামীন (৩২) সহ আরো অঙ্গাত ছয়জন।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সজীব আহমেদ মনির উল্লেখ করেন, গত ৮ মার্চ রাত সাড়ে ১১টায় তিনিসহ ৪ জন প্রাইভেটকারযোগে বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে ‘অভি হাইওয়ে ভিলা’ নামে এক রেস্তোরাঁয় খাবার বিরতি দেন তারা। খাওয়া শেষে ওঠার সময় মাইকেল, ইলিয়াস ও আলামিনসহ আরও ৬ জন প্রাইভেটকার ও মোটর সাইকেলযোগে এসে তাদের পথরোধ করে। তারা ডিবি পরিচয় দিয়ে জোর করে গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নেয়। পরে দেশীয় অস্ত্র ধরে তাদের কাছে থাকা ব্যবসার ৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
সজীব আহমেদ মনির বলেন, আমি একজন ম্যানপাওয়ার ব্যবসায়ী। সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার সমেশপুর আমার দাদার বাড়ি। আমার মামা মকবুল হোসেন মুকুল সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। ঘটনার দিন রাতে আমি ব্যবসার টাকা নিয়ে দাদার বাড়ি যাচ্ছিলাম। রেস্তোরাঁর খাওয়া শেষ করে গাড়িতে ওঠার সময়ই হঠাৎ করে নিজেদের ডিবি পরিচয় দিয়ে আমাদের আটক করে কয়েকজন। আমাদের দুজনকে মারধরও করেন তারা। পরে জোর করে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন আজ ঘটনার ১৬ দিন পার হলেও এখন পর্যন্ত আসামীরা বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
রায়গঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. মাইকেল টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনের আগের দিন রাতে আমরা নির্বাচনী ওয়ার্ক করে এসে হাইওয়ে ভিলায় খাচ্ছিলাম। সেখানে কিছু অপরিচিত লোক দেখে সন্দেহ হয়। তখন তাদের প্রশ্ন করি আগামীকাল নির্বাচন, আজ আপনারা এখানে কেন? এ নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। এর থেকে বেশি কিছু নয়। নির্বাচন পরে শুনি এই অভিযোগ করেছেন।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. ইলিয়াস বলেন, বিষয়টি নির্বাচন কেন্দ্রিক। উপরের নেতাদের নির্দেশে গাড়িটি থামানো হয়েছিলো। ঘটনার সময় আমাদের সাথে তাদের বাকবিতণ্ড হয়। তবে টাকা নেওয়ার কথাটি ভিত্তিহীন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: আলামীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার মুঠোফোনটি রিসিভ করেনি।
এবিষয়ে রায়গঞ্জ থানার ওসি মো. হারুন-অর-রশিদ জানান, আমরা এ বিষয়ে একটি লিখিত পেয়েছি। অভিযোগটি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলহাজ উদ্দিন বলেন, প্রশাসনের পরিচয় বহন করা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। দ্রুত তদন্ত শেষে প্রকৃত সত্য উন্মোচন করা হবে।