গুটি কয়েকজন শিক্ষক যখন হয় ভক্ষক, তখন শিক্ষার্থীরা বা জনগণ শিক্ষকের উপর তুলে আঙুল। শিক্ষকদের বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর, জ্ঞানের ফেরিওয়ালা। ত্যাগ ও নিষ্ঠার মাধ্যমে মেধা কাজে লাগিয়ে গড়ে তুলতে পারে ছাত্রের জীবনে সফলতা, দক্ষতা তিনি হচ্ছেন প্রকৃত শিক্ষক। সূর্যের মতো বিলিয়ে যান জ্ঞানের ভাণ্ডার।
এমনই এক ঘটনায় জন্ম দিয়েছেন, রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় “ধুরইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহরাব আলী খাঁন” স্কুল ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও হয়রানির অপরাধে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
২৮ জানুয়ারী ( রোববার) রাজশাহী নারী-শিশু নির্যাতন দমন আদালত। ওই শিক্ষকের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, রাজশাহী জেলার মোহনপুর থানার ধুরইল উচ্চ বিদ্যালয়ে বেশ কয়েকজন ছাত্রীর শরীরে হাত দেওয়াসহ নানাভাবে উত্ত্যক্ত করার অপরাধে গত বছর ১৫ই অক্টোবর প্রধান শিক্ষক আটক হয় থানা পুলিশের হাতে। পরে তিনি আদালত থেকে জামিন নেয়৷ থানা পুলিশ তদন্ত শেষে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দিলে রোববার আদালত তার জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দেয়। গত বছর ১৫ অক্টোবর (সোমবার) সকালে স্কুলে আসেন প্রধান শিক্ষক সোহরাব আলী খাঁন (৫৫)। তিনি জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। তার বিরুদ্ধে দেড় বছর যাবত স্কুল ফাঁকির অভিযোগ ছিলো। ঘটনার দিন প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন শ্রেণীর কয়েকজন ছাত্রীকে কাছে ডেকে নেয় এরপর ছাত্রীদের শারীরিক ও মানষিক খোঁজ খবর নেওয়ার ছলে ছাত্রীদের শরীরে হাত দেওয়াসহ নানাভাবে উত্ত্যক্ত করায় ছাত্রীরা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানায় এবং বিষয়টি অভিভাবকদের অবহিত করলে। ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা বিদ্যালয় ঘেরাও করেন, পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যায়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এসময় উত্তেজিত জনতা প্রধান শিক্ষককে বহিস্কার, তাকে গ্রেফতার ও বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করার জোরালো দাবি জানিয়েছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সহকারি কমিশনার (ভুমি) মিথিলা দাস, একাডেমিক সুপারভাইজার আ: মতিন ও ধুরইল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোওয়ার হেসেন। সহকারী কমিশনার ভুমি ভুক্তভোগী ছাত্রীদের থেকে ঘটনার বিবরণ শুনে তার সত্যতা খুঁজে পাওয়ায় জনগনের দাবি মেনে নেন এবং প্রধান শিক্ষককে আটক করা নির্দেশ দেন থানা পুলিশকে।
এঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিভাবক মোহনপুর থানায় ১০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। প্রধান শিক্ষক সোহরাব আলী খাঁনের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের সাথে অশালীন আচরণ, তাদের শরীরে হাত দেওয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তিনি বাকশিমইল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক থাকাকালে এক ছাত্রীর সাথে যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটে। সে নিয়মিত মদপান করে। প্রধান শিক্ষক সোহরাব ও স্কুল কমিটির সভাপতি সাবেক মেম্বার আক্কাস আলী নিয়োগ বানিজ্য ও স্কুলের সম্পদ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন বলেও অভিযোগ উঠে ওই সময়।