ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের ধুকুরিয়া-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হরিপুর সদর ইউনিয়নের খোলড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দুটিতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান করানো হচ্ছে। এতে সব সময় আতংকে থাকে শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে শঙ্কিত অভিভাবকসহ সচেতন মহল।
জানা গেছে, উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের ধুকুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ১৭১ জন। ১৯৯২ সালে স্থাপিত হওয়া বিদ্যাপীঠটিতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের শ্রেণিকক্ষে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের ধুকুরিয়া-১ ওই বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দেয়ালের রং উঠে গেছে, পিলার ও দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। মেঝে ও ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে ছাদের রড বেরিয়ে গেছে। বৃষ্টি হলে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ব্যাহত হয়। পাঠ চলাকালে ঝুঁকিতে থাকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জীবন। স্থানীয়দের দাবি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় বিদ্যালয় ভবনের এই বেহাল দশা।
বর্তমানে ভবনের তিনটি কক্ষের মধ্যে একটি কক্ষ শিক্ষকদের জন্য এবং অন্য দুটি কক্ষে প্রাক্ প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম চলে। ফলে শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে নিজেদের ও শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পাঠদান করাতে বাধ্য হচ্ছেন বলে দাবি করেন শিক্ষকরা।
বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমন বলে, ‘আমাদের শ্রেণিকক্ষ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় ফ্যান ও পলেস্তারা খসে মাথায় পড়তে পারে। ক্লাস চলাকালে পুরোটা সময় আতঙ্কে থাকি আমরা।’
বকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের রেজা জানান, ‘বিদ্যালয় ভবনের যে অবস্থা যেকোনো মূহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ধুকুরিয়া-১ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেজারুল ইসলাম–য়া বলেন, ‘এই বিদ্যালয়ে প্রাক্ প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৭১ জন শিক্ষার্থী আছে। শ্রেণিকক্ষের সংকট থাকায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে প্রাক্ প্রাথমিক ও ৫ম শ্রেণির পাঠদান করাতে হচ্ছে। আমরা শীঘ্রই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন ও ওয়াশ ব্লক স্থাপনের জন্য আবেদন করবো।’
অপরদিকে খোলড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একই অবস্থা বিরাজমান। ঐই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা নুরজাহান বেগম জানান, অত্র বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণী থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত ১০৮ জন শিক্ষার্থী থাকলেও মাত্র দুইটি শ্রেণী কক্ষ রয়েছে। তাও আবার জরাজীর্ণ অবস্থা। যেকোন মূহুর্তে ছাদ ভেঙে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এ ব্যাপারে হরিপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম জাহিদ ইবনে সুলতান বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান বিষয়ে অবগত হয়েছি। উপজেলা প্রকৌশলীসহ আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করে নতুন ভবনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম বলেন, ‘শিশু শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস নিতে নিষেধ করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।