খোলা আকাশের নীচে রাস্তার এপার থেকে ওপারে দড়ি দিয়ে টানানো শুধুই পোস্টার আর পোস্টার। লাগানো হয়েছে দেয়ালে দেয়ালেও। রিক্সা মাইক্রোসহ বিভিন্ন বাহনে করে মাইকে মাইকে বাজানো হচ্ছে ভোটের প্রচার-প্রচারণা। বিলি করা হচ্ছে লিফলেট। দীর্ঘ ২০ বছর পর ভোটের এমন উচ্ছ্বাসের বিষয়টি ফুটে উঠেছে চুয়াডাঙ্গায়।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেয়ার কথা বলে যাচ্ছেন বারবার। কিন্তু চুয়াডাঙ্গায় নির্বাচনের শান্তিময় পরিবেশ নষ্ট করতে কিছু দুর্বৃত্তরা ফুঁসে উঠেছে। এরইঅংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের এমপি (ঈগল পাখি) মার্কার স্বতন্ত্রপ্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালার হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামী কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হাসানুজ্জামান মানিককে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
আজ রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) আদালতে পাঠানো হলে বিকেলে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (১ম) বিচারক লস্কর সোহেল রানা।
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত অর্থ্যাৎ আজ রবিবার রাত সোয়া ৩টার দিকে এ হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার। তবে এ হামলায় ঘটনাস্থল থেকে চেয়ারম্যান মানিকসহ ৫জনকে আটক করা হয়।
জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও নির্বাচনর অফিস উদ্বোধন করতে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বসুভান্ডারদহে যায়। সেসময় ১৯/২০ জনের একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসীদল ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর গাড়ীবহর থামিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও হামলা চালায়। এতে দিলীপ কুমার আগরওয়ালাসহ তার কয়েকজন সফরসঙ্গী কর্মী লাঞ্ছিত হন।
সেসময় দিলীপ কুমার আগরওয়ালা প্রাণ বাঁচাতে প্রশাসনকে ফোন দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে সদর থানার পুলিশের সদস্যরা।
পরে ঘটনার খবর শুনে ঘটনাস্থলে উপস্থিতি হন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও রিটার্ণিং অফিসার ড. কিসিঞ্জার চাকমা, পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমানসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সেসময় ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের আশ^াস দিয়েছিলেন।
এ হামলার ঘটনায় স্বতন্ত্রপ্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালা অভিযোগ করে বলেন, ‘আধা ঘণ্টা ধরে গাড়ি আটকে আমার নাম উল্লেখ করে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল স্লোগান দিতে থাকে। আমি গাড়ি থেকে নামলে তারা মারমুখী আচরণ করে হামলা চালানো হয় আমার কর্মীদের ওপর। তারা আমার সফরে থাকা কয়েকজন মহিলা কর্মীকেউ লাঞ্ছিত করে। শুধু তাই নয় তারা সাম্প্রদাায়িক উসকানিমূলক কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ঘটনা ঘটনার সময় ১৯ থেকে ২০ জনের অস্ত্রে শস্ত্রে সজ্জিত ২ গ্রুপের দল এই হামলার ঘটনা ঘটায়।
এ ঘটনায় গতকাল অর্থ্যাৎ আজ রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে ২০ জনকে এজাহার নামীয় ও ১০০-১২০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন ঈগল প্রতীকের সমর্থক অ্যাড. আব্দুল মালেক।
এ মামলার ৫ আসামীকে গ্রেফতার করা হলে রবিবার সকালে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়। এরমধ্যে প্রধান আসামী চেয়ারম্যান আলী হাসানুজ্জামান মানিকের জামিন নামঞ্জুর করে বিকেলে চৌকশ নিরাপত্তায় জেলা কারাগারে নেয়া হয় তাকে। এছাড়া বাকি ৪জনকে জামিন মঞ্জুর করে আদালত। জামিনপ্রাপ্তরা হলেন, আব্দুল্লাহ আল ফারুক, সুমন হোসেন, হাফিজুর রহমান ও জেহের আলী।
পুলিশ এ হামলার ঘটনায় এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) নাজিম উদ্দীন আল আজাদ জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের একাধিক দল সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের ধরতে পুলিশি অভিযান চলছে।