রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ীর দূর্গম চর হনুমন্তনগর থেকে ৫ কেজি ২০০ গ্রাম হেরোইনসহ মাদক সম্রাট মোঃ কাজিম উদ্দিন তৈয়ব (৪৪) ও তার ছেলে জীবন আলী (১৭) কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৫।
২১ ডিসেম্বর ভোর ৪ টার দিকে গোদাগাড়ী চর-আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের চর হনুমন্তনগর নামক এলাকায় সিপিএসসি, র্যাব-৫ অপারেশন পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান র্যাব। গ্রেপ্তারকৃত কাজিম উদ্দিন তৈয়ব (৪৪) গোদাগাড়ীর চর-আষাড়িয়াদহ গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে ও জীবন আলী (১৭) চর-হনুমন্তনগর গ্রামে বাড়ি।
র্যাব জানান, রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও এর সংলগ্ন পদ্মার ওপারে প্রত্যন্ত চর অঞ্চলগুলো হেরোইন পাচারের একটি বড় রুট হিসেব ব্যবহৃত হয়। একারণে র্যাব-৫ এর গোয়েন্দা দল এই এলাকাগুলোতে সার্বক্ষণিক গোয়েন্দা নজরদারির আওতায় রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় সিপিএসসি, র্যাব-৫ এর গোয়েন্দা দল জানতে পারে গত ২০ ডিসেম্বর গোদাগাড়ীর চর-হনুমন্তনগরে হেরোইন এর একটি বড় চালান পাচার করবে মোঃ কাজিম উদ্দিন তৈয়ব নামের একজন ব্যক্তি।
আরও জানা যায়, মাদক কারবারিরা গত রাতে পদ্মা নদীর সীমন্তবর্তী এলাকায় অবস্থান করছিল এবং গত রাতে কোন এক সময়ে সীমান্তের ওপার হতে বিপুল পরিমাণ হেরোইন পাচারের উদ্দেশ্যে তার বাড়ীতে নিয়ে এসেছে। এই তথ্য ভিত্তিতে র্যাব-৫, সিপিএসসির আভিযানিক দল দুইটি ভাগে বিভক্ত হয়ে প্রায় দুই ঘন্টা নৌকাযোগে পদ্মা নদী পার হয়ে চর-হনুমন্তনগরে পৌছায়। পরবর্তীতে আভিযানিক দল প্রায় এক ঘন্টা পায়ে হেটে আটককৃত মোঃ কাজিম উদ্দিন তৈয়ব এর বাড়ীতে পৌছে তার বাড়ী সনাক্ত করে অভিযান চালায়। এসময় তৈয়ব ও তার ছেলে
জীবন আলীকে আটক করে হেরোইন এর চালান সর্ম্পকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আটককৃত ব্যক্তি, তার বসতবাড়ীর ভিতরে অবস্থিত বাথরুমের ভিতর গোখাদ্যসহ বিভিন্ন মালামাল রাখার আড়ালে কীটনাশক স্প্রে মেশিনের ভিতর অভিনব কায়দায় লুকায়িত অবস্থায় ২০০ গ্রাম হেরোইন বের করে দেয়। পরবর্তীতে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের সময় কাজিম উদ্দিন তৈয়ব তার বাড়ীর দক্ষিণে অবস্থিত তার খড়ের বড় স্তূপের নীচে অভিনব কায়দায় লুকায়িত অবস্থায় ৫ কেজি হেরোইন বের করে দেয়। এরই সাথে তার বাড়ী তল্লাশীর সময় তার একটি বাংলাদেশী পাসপোর্ট ও একটি ছোট ডায়েরী পাওয়া যায়, যার ভিতরে তার মাদকের বিভিন্ন চালান সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য লিখিত অবস্থায় সংরক্ষিত আছে।
আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে তারা সংঘবদ্ধ মাদক চক্রের সাথে জড়িত। এর আগেও বেশ কয়েকবার তারা এ পন্থায় বিপুল পরিমান মাদক সরবরাহ করেছে বলে তথ্য দেয়। আসামীর বিরুদ্ধে রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন।