ধর্ষণের ভিডিও ফাঁস করায় গৃহবধূর আত্মহত্যা
এমদাদুল হক, মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি:
ধর্ষণের ভিডিও ফাঁস করায় লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যা করেছেন এক গৃহবধূ (২৫)।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের মধ্যচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
গৃহবধূর ভাই জাগো নিউজকে বলেন, আমার বোনকে শামীম ধর্ষণ করেছে। পরে এ ঘটনার বিচার দেওয়া হয় শামীমের মা ও বাবার কাছে। তারা এ ব্যাপারে কিছুই করেননি। পরে আমার বোন বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শামীম ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ছড়িয়ে দেয়। আমার বোনের মৃত্যুর জন্য শামীমই দায়ী। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।
অভিযুক্ত শামীম খান (৪০) একই ইউনিয়নের খাসচর তালেরপুল গ্রামের আজিজুল খানের ছেলে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শামীমসহ তার পরিবারের লোকজন পলাতক বলে জানা যায়।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর ৩ আগস্ট রাতে বাড়ির বাইরে বের হলে গৃহবধূকে শামীম খান জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এ সময় কৌশলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করা হয়। পরে গৃহবধূর কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে শামীম। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে হুমকি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে শামীমের পরিবারের কাছে বিচার না পেয়ে আদালতে যান ভুক্তভোগী গৃহবধূ।
সোমবার ( ১৮ ডিসেম্বর) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে শামীমসহ তিনজনের নামে ধর্ষণ ও প্রতারণার মামলা করেন ওই গৃহবধূ। এ ঘটনায় আদালতের বিচারক ইসমাইল হোসেন শুনানি শেষে মামলাটি পুলিশকে রেকর্ড করতে নির্দেশ দেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণের ভিডিও তার স্বামী ও বিভিন্ন মানুষের মোবাইলে ছড়িয়ে দেয় অভিযুক্তরা। পরে লোকলজ্জার ভয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের মধ্যচর গ্রামে তার বাবার বাড়িতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই গৃহবধূ।
এ ঘটনার মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন শামীম খান, শামীমের বাবা আজিজুল খান ও শামীমের মা রহিমা বেগম।
গৃহবধূর এক আত্মীয় বলেন, আদালতে দায়ের করা মামলাটি ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে রেকর্ড করে আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে অভিযুক্ত শামীম খান বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, লোকমুখে শুনেছি গৃহবধূর আত্মহত্যার কথা। পরে পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।