চলমান বিএনপির ডাকা হরতাল, অবরোধ ও অগ্নি সন্ত্রাসের প্রভাব পড়েছে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের সীমান্তঘেঁষা পাহাড়ি কন্যা চেল্লাখালী নদী সংশ্লিষ্ট বালু ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও ইজারাদার কর্তৃপক্ষের উপর। এ কারনে বালু ব্যবসায় নেমে এসেছে ধ্বস। বর্তমানে চেল্লাখালী নদীর বালু উত্তোলন ও পরিবহন করায় বিঘ্ন ঘটছে। এতে অভাব অনটনে পড়েছেন বালু উত্তোলন ও লোড আনলোড শ্রমিকসহ স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীরা। সবচেয়ে বেশি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন চলতি বাংলা সনের ইজারাদার কর্তৃপক্ষ জিলানী এন্টারপ্রাইজ।
জিলানী এন্টারপ্রাইজের সত্তাধীকারি আব্দুল কাদির জিলানী জানান, চেল্লাখালী নদিটি চলতি বাংলা সনের জন্য জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে বুরুঙ্গা ও আন্ধারুবাইগর পাড়া দুটি মৌজা ১ কোটি ৫০ লাখ টাকায় ইজারা নিয়েছেন। ইজারা পাওয়ার দেড়মাস পরে তাকে উপজেলা প্রশাসন থেকে ওই বালু মহালটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। বছরের ১২ মাসের মধ্যে এমনিতেই দেড়মাস চলে গেছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৮ মাস অতিবাহিত হলেও উত্তোলন করা যায়নি উল্লেখযোগ্য পরিমানের বালু।
তিনি আরো জানান, চলমান বিএনপির ডাকা হরতাল, অবরোধ ও অগ্নি সন্ত্রাসের কারনে গাড়ি পোড়ানোর ভয়ে দূর- দূরান্তের ক্রেতারা গাড়ি নিয়ে বালু কিনতে আসছেন না। এছাড়া চেল্লাখালী নদীর পশ্চিমপাড়ের বুরুঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে পোঁড়াবাড়ি ইসলাম মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় প্রায় ৬ মাস যাবত ওই সড়কে বালুর ট্রাক ঢোকানো যায়নি। নদীর পুর্ব পাড়ে খলচান্দা গ্রামের পাহাড়ি ঝর্ণার মিনি ব্রিজটি ধ্বসে পড়ায় সেখানেও প্রায় ৩ মাস যাবত ট্রাক ঢুকানো যাচ্ছে না। একই এলাকার বুরুঙ্গা ব্রিজ সংলগ্ন শান্তির মোড় ঝর্ণার ব্রিজটিও দীর্ঘদিন যাবত ধ্বসে পড়েছে। এছাড়া কিছু দিন পরপর ওই এলাকায় বন্যহাতির আক্রমণে এলাকাবাসীর স্বাভাবিক জীবন যাপনে বিঘ্ন ঘটায় বালু উত্তোলন ও পরিবহন করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। এমতাবস্থায় এক কঠিন সময় পাড় করেছেন চেল্লাখালী নদির বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতরা।
ইজারাদার কর্তৃপক্ষ জানান, ঋণ ধার করে ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা সরকারি খাতে জমা দেওয়া হলেও এখনো উল্লেখযোগ্য পরিমান বালু উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি। সময় মতো ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তাদের নানা ধরনের চাপও বাড়ছে। যদি ইজারার মেয়াদ বাড়ানো হয় তাহলে হয়তো আসল টাকা তুলতে পারবেন তারা। তাই এর মেয়াদ বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বরাবর আবেদন জানান।
ওই এলাকার বালু ব্যবসায়ী বাদশা মিয়া বলেন, হরতাল অবরোধের ভয়ে দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা ট্রাক নিয়ে বালু কিনতে না আসায় আমরা বালু বিক্রি করতে পারছি না। এতে আমরা এখন খুব কষ্টে আছি।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইলিশায় রিছিল বলেন, অফিসিয়াল কাগজপত্র দেখে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে এ বিষয়ে জানানো হবে।