যশোরের বেনাপোলে স্বামীর ঋণের দায়ে সর্বশান্ত হয়ে ৬ মাসের কন্যা সন্তানকে রেখে স্বামী ও স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে বেনাপোলের বাহাদুরপুরে তাদের ভাড়া নেয়া বাড়িতে গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে উভয়ে আত্মহত্যা করেন।
আত্মহত্যার শিকার স্বামী ইয়ামিন(২৮) ও তার স্ত্রী তনু বেগম (২৪) বেনাপোল বন্দর থানার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাদের ৬ মাসের মেয়ে সন্তান রয়েছে যার নাম খাদিজা খাতুন।
নিহত ইয়ামিনের মামাতো ভাই মামুন হোসেন জানান, ইয়ামিন পেশায় একজন পল্ট্রি ব্যবসায়ী। তবে সে সম্প্রতি মোবাইল ফোনে অনলাইন জুয়া খেলা করে অনেক ধার-দেনা করেছে। ধার-দেনা পরিশোধ করার জন্য তার একমাত্র সম্বল নিজ বসতবাড়ি বিক্রি করে দিয়েও সম্পূর্ন দেনা পরিশোধ হয়নি। বর্তমানে তারা বাহাদুরপুর বাজারের আব্দুর রহিমের বাসায় ৬ মাসের একটি মেয়ে সন্তান নিয়ে বসবাস করছিল। পরিবারের বারণ উপেক্ষা করে জুয়ার আসরে বসতো ইয়ামিন। ধারণা করছি পাওনাদারদের দেনা পরিশোধ নিয়ে মানসিক চাপ ও পারিবারিক অশান্তিতে শুক্রবার ভোরে কোনো একসময় স্বামী ও স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। সকালে শিশুর চিৎকারে প্রতিবেশীরা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তাদের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায়। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান জানান, এমন মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে। এ অপমৃত্যু আর শিশুটির ভবিষ্যৎ ভাবিয়ে তুলেছে পরিবারকে। জানা মতে, প্রতিবেশির পাল্লায় পড়ে জুয়ায় আসক্তের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষতি ও দেনার কারণে একটি পরিবার ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়ালো। এখান থেকে অন্যদের শিক্ষা আর সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান এ জনপ্রতিনিধি।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন ভক্ত জানান, ভাড়া বাসা থেকে স্বামীর-স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আত্মহত্যা এবং মৃত্যুর প্রাথমিক কারণ ঋণগ্রস্ত হয়ে মানসিক চাপ বলে জানা গেছে। তবে ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে জানান ওসি।।