1. admin@crimenews24.net : cn24 :
  2. zpsakib@gmail.com : cnews24 :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সালের সময়ে আওয়ামী লীগ বধ্যভূমি তৈরি করেছিল: টুকু সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের উপর হামলা এবং ডিসি কর্তৃক গালাগাল করার প্রতিবাদে মানববন্ধন নিজের চেহারা একবার আয়না দিয়ে দেখুন: মৌলভীবাজারে জামায়াতের আমীর শ্রীমঙ্গলে শিশু ধর্ষণ মামলায় আটক ২ তানোরে দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রতারণায় প্রথম স্ত্রী নিঃস্ব সিরাজগঞ্জে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে সড়ক ও জনপদের জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণের অভিযোগ রাজশাহীতে হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে আটক- ৮ সাতক্ষীরা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কালো ব্যাজ ধারণ ও প্রতিবাদ সভা মাছের উৎপাদন বৃদ্বিতে সুন্দরবনে প্রকল্প হাতে নিয়েছে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্তে অর্ধকোটি টাকার ভারতীয় পণ্য আটক 

অনিয়ম ও দুর্নীতির আতুরঘর জাজিরা উপজেলা নির্বাচন অফিস

তাহমিদ রাজিব, শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৩
  • ৮৪ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় চরম হয়রানি ও অনিয়মের পাশাপাশি ঘুষ লেনদেনের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারী ও অনিয়মের নানা অভিযোগ রয়েছে। টাকা না দিলে পদে পদে ভোগান্তি পোহাতে হয়। সব মিলিয়ে অফিসটি এখন ঘুষ ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে।
জাতীয় পরিচয়পত্র-সংক্রান্ত কাজে গেলেই হতে হয় ভোগান্তির শিকার। এতে দূর-দূরান্তের লোকজন চরম ভোগান্তির শিকার হন। জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, হারানো বা স্থানান্তরের আবেদন মানেই টাকা। চাহিদামতো টাকা না দিলে হয়রানির শিকার হতে হয়।
তবে উপজেলা নির্বাচন অফিসে কর্মরত কামরুন নাহারের মাধ্যমে গেলে মুহূর্তেই মিলে সকল সমস্যার সমাধান। ভুল সংশোধন থেকে শুরু করে যেকোনো কাজেই তিনি করে দিতে পারেন। এজন্য কামরুন নাহারের হাতে তুলে দিতে হয় মোটা অংকের টাকা। এমন অভিযোগ করেছেন একাধিক সেবা নিতে আসা মানুষ।
জাজিরা উপজেলার একাধিক বাসিন্দা ও সেবাপ্রার্থীর অভিযোগ, নির্বাচন অফিসে সব ধরনের সেবা নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে নিতে হচ্ছে। ভোটার আইডি কার্ড স্থানান্তরের জন্য কোনো ফি না থাকলেও দিতে হচ্ছে টাকা। এর মধ্যে নাম এবং বয়সের ভুল সংশোধনে দিতে হয় দুই হাজার থেকে শুরু করে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। নতুন ভোটার হতে লাগে দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা। টাকা না দিলে মাসের পর মাস ঘুরতে হয়। দালালদের দ্বারস্থ হলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
অনেকেই নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, নির্বাচন কর্মকর্তার একক নিয়ন্ত্রণে চলে এ অফিস। এতে কর্মকর্তা- কর্মচারীরা তার ছত্রচ্ছায়ায় সাধারণ সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি করছেন। ঘুষ বাণিজ্যের কাজও চলে নিয়মিত। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা না দিলে এনআইডি কার্ড প্রণয়ন, সংশোধন, প্রদানসহ নানা কাজে জটিলতা সৃষ্টি করছেন তারা।
ভুক্তভোগী উজ্জ্বল মৃধা ও হানিফ মোল্লা বলেন, আমাদের আইডি কার্ডে পিতা মাতার নামের সাথে একটু অমিল থাকায় সংশোধনের জন্য আবেদন করি কিন্তু কাজ হয়না। পরে কামরুন নাহারের সাথে কথা হলে তিনি ১১ (এগারো) হাজার টাকা লাগবে বলে জানান। পরে টাকার বিনিময়ে কাজ করে দেন তিনি। টাকা ছাড়া কোনো ভাবেই কাজ করতে পারিনি। আমরা এই সকল সমস্যার সমাধান চাই।
উপজেলার নগর বাউলিয়া গ্রামের ভুক্তভোগী সোবাহান মাদবর বলেন,আমি গত আগষ্ট মাসে আমার ও পরিবারের তিন জনের ভোটার আইডি কার্ড স্থানান্তরের জন্য নির্বাচন অফিসে আসলে আবেদনের কথা বলে নির্বাচন অফিসের স্টাফ কামরুন নাহার ৯০০ টাকা রেখেছিলেন। ৩ মাস পরে আইডি কার্ড নেওয়ার জন্য আসলে আরও ১১০০ (এগারো শত) টাকা দাবী করেন কামরুন্নাহার। কিসের জন্য টাকা নিচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বিভিন্ন খরচের কথা বলে এবং আইডি কার্ড নিতে হলে বাড়তি ১১শত টাকা দিতে হবে।
জাজিরা ইউনিয়নের মেহের আলী মাদবর কান্দি গ্রামের বাসিন্দা সাফিয়া বেগম (৮২) তিনি সকাল থেকে এসে বসে আছেন নির্বাচন অফিসের সামনে। জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, জমির দলিল করতে আইডি কার্ডের প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু কার্ডের জন্য নির্বাচন অফিসে এসে নিজেকে দেখি মৃতের তালিকায়। তাই ঠিক করার জন্য বসে আছি।
বিকে নগর ইউনিয়নের পূর্ব কাজি কান্দির গ্রামের ভুক্তভোগী জাহিদ হাসান বলেন, আমার আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য আবেদন করে অফিসে গেলে আমার ফরমে একটি মোবাইল নাম্বার লিখে দিয়ে বলে রাতে যোগাযোগ কইরেন। আমি আর যোগাযোগ না করার ফলে আমার আবেদন বাতিল করে দেয়। পরে আমি দালালের মাধ্যমে পাচ হাজার টাকা দিয়ে আইডি কার্ড সংশোধন করি।
এবিষয়ে কামরুন নাহারের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি অফিস থেকে পালিয়ে যান। এর পরে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিলে তাকে পাওয়া যায়নি।
জাজিরা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান তালুকদারকে জিজ্ঞেস করতে গেলে তিনি সাংবাদিকদের দেখে দ্রুত পালিয়ে যান। পরবর্তিতে  কামরুন নাহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি টাকা নেওয়ার ব্যাপারে কিছু জানিনা। কেনো টাকা নিয়েছে সেটা তাকেই জিজ্ঞেস করুন। কামরুন নাহার অফিসের কোনো কর্মচারী না আমরা তাকে এখানে আর রাখবো না। আমাদের নতুন লোক চলে আসছে।
বিষয়টি নিয়ে শরীয়তপুর জেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন, কামরুন নাহারের টাকা নেওয়ার বিষয়ে আমি অবগত এবং ভুক্তভোগীকে তার টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। কামরুন নাহার আমাদের নিয়মিত স্টাফ না তাই তাকে অফিস থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তিনি কিভাবে সেখানে বসে সেবা দিয়ে আসছে এই বিষয়ে আমি উপজেলা নির্বাচন অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব ইনশাআল্লাহ।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

এ জাতীয় আরো খবর ....
© All rights reserved © 2022 crimenews24.net
Design & Developed By : Anamul Rasel