অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে করে সংসার জীবন শুরু করেন শেফালী আক্তার। কিন্তু লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহের কমতি ছিল না তার। এরপর সংসার নিয়েই কেটেছে ২২টি বছর। ২০২১ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামীর মৃত্যুর পর সংসারের দায়িত্ব পুরোটাই তার ঘাড়ে বর্তায়। ২০২৩ সালে ফের নিজের লেখাপড়া করার সুপ্ত বাসনা থেকে বড় মেয়ে সাবরিনার সঙ্গে ভর্তি হন নবম শ্রেণিতে।
এবার এসএসসি ভোকেশনাল নবম শ্রেণির বোর্ড ফাইনাল পরীক্ষায় মেয়ের সঙ্গে অংশ নিচ্ছেন তিনি। বুধবার (৮ নভেম্বর) শেফালী আক্তার কথা বলেন গণমাধ্যমের সঙ্গে।
তিনি জানান, প্রবল আগ্রহ থেকেই আবার পড়াশোনা শুরু করলাম। অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় আমার বিয়ে হয়েছিল। সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামীর মৃত্যুর পর মেয়েকে বিদ্যালয়ে আমাকেই নিয়ে যেতে হতো। পরে এক সময় সিদ্ধান্ত নিলাম মেয়ের সঙ্গে আমিও লেখাপড়া পুনরায় শুরু করব। নবম শ্রেণিতে মেয়ের সঙ্গে ভর্তি হলাম।
এ সময় এবারের এসএসসি ভোকেশনালে একই কেন্দ্রে ও একই কক্ষে মেয়ের পেছনের বেঞ্চে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন বলে জানান শেফালী।
এদিকে ভুয়াইদ টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ মেহেদী হাসান জানান, ইচ্ছা থাকলে লেখাপড়ায় বয়স কখনো বাধা হতে পারে না। শেফালী আক্তার তেমনই এক উদাহরণ। এ উদ্যোগ অনেককে অনুপ্রাণিত করবে। মা-মেয়ের সাফল্য কামনা করছি।
উল্লেখ্য, এই অধ্যবসায়ী নারী শেফালী আক্তার ও তার মেয়ে সাবরিনা টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার ভুয়াইদ টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট অ্যান্ড বিএম কলেজের ছাত্রী। একই প্রতিষ্ঠান থেকে তারা সখীপুরের সূর্য তরুণ শিক্ষাঙ্গন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। শেফালী সখীপুর উপজেলার বড়চওনা বিন্নাখাইরা গ্রামের মৃত আবদুস সবুর মিয়ার স্ত্রী।