বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচির সঙ্গে পরিচিত থাকলেও অনেকেই হরতাল ও অবরোধের মধ্যে পার্থক্য ধরতে পারেন না। দুটি কর্মসূচিতেই প্রায় একই ধরনের রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কিছু পার্থক্য রয়েছে।
গতকাল রবিবার (২৯ অক্টোবর) সারা দেশে সকাল–সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছিল বিএনপি। সেই কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর সন্ধ্যায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আগামীকাল (৩০ অক্টোবর) থেকে তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে দলটি। স্বাভাবিকভাবেই হরতাল আর অবরোধের মধ্যে পার্থক্য কী- এ প্রশ্নটি এখন সবার মনে।
হরতালবিক্ষোভ প্রদর্শনে রাস্তাঘাট, কলকারখানা, দোকান, আদলত বন্ধ রাখা। হরতাল গুজরাটি শব্দ। ‘হর’ মানে সব জায়গায় আর ‘তাল’ মানে তালা। অর্থাৎ হরতাল মানে সব জায়গায় তালা। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সময় মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী হরতালের প্রবর্তন করেছিলেন। ১৯৪৮ সালে বাংলাদেশে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ‘তমুদ্দিন মজলিস’ প্রথম হরতাল ডাকার পর থেকে এ দেশের রাজনীতিতে হরতাল বেশ প্রচলিত একটি কর্মসূচি।
অবরোধকোনো নির্দিষ্ট স্থানে যাতায়াতে সহিংস বাঁধা প্রদান। অবরোধ হচ্ছে কর্মসূচি পালনে জনগণকে বাধ্য করা। রাজপথ, রেলপথ আর নৌপথ রুদ্ধ করা। তাতে জনগণ হরতালের মতো সাড়া দিক বা না দিক অবরোধ হবে। কর্মসূচি পালনে মানুষকে অনেক বাধ্য করা হয়। গ্রিক উপাখ্যানে ইলিয়াড ও ওডেসিতে ট্রয় নগরী অবরোধের কথা আছে। ১১৮৭ সালে সালাউদ্দিন আইয়ুবি জেরুজালেম অবরোধ করেন।
কোনটা বড়?রাজনীতিবিদরা মনে করেন হরতাল, অবরোধের চেয়ে বড় কর্মসূচি। এটা চূড়ান্ত ধাপের কর্মসূচি। কেননা দলের দাবির প্রতি যখন বেশির ভাগ মানুষ একমত পোষণ করে তখন এ ধরনের কর্মসূচি দেওয়া যায়। এটা না হলে হরতালে সফলতা পাওয়া যায় না। কেননা এখানে বেশিরভাগ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকতে হয়। না হলে কর্মসূচি সফল হয় না। অন্যদিকে অবরোধে যেহেতু বাধ্য করার বিষয় থাকে, তাই মানুষের সমর্থন সম্পর্কে বোঝা যায় না।