প্রশাসনের ব্যাপক নজরদারী ও কড়াকড়ির মধ্যে দিয়ে কপিলমুনিতে ভক্তদের অশ্রুসজল নয়নে প্রতিমা বিসর্জন পর্ব শেষ হয়েছে। শারদীয় দুর্গাপূজার বিসর্জন টা ছিল এক হৃদয় বিদারক ঘটনা অষ্টমী পূজায় অত্র এলাকার এক কলেজ পড়ুয়া ছেলে অষ্টমী পুজায় পুজা দেখে বাড়ি ফিরার পথে মোটরসাইকেল এক্সিডেন্টে মারা যায়। তার আত্মার শান্তি কামনায় কালো কাপড়ে শোকাশত লেখা টানানো ছিল।
পাইকগাছা কয়রা উপজেলায় আইন শৃঙ্খলা যেন কোন ধরনের অবনতি না হয় তার জন্য খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিন খুলনা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইদুর রহমান পিপিএম সেবা অত্র এলাকার পুজা মন্দির পরিদর্শন করেন এবং পূজা মন্ডপের কমিটির নেতৃবৃন্দকে সার্বক্ষণিক প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ রাখতে বলেন। মঙ্গলবার ছিল বিজয়া দশমী। সকাল ১০টার মধ্যে এলাকার বিভিন্ন পুজামন্ডপে দশমী বিহিত পুজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিকাল ৩টার দিকে কপিলমুনি কেন্দ্রিক মন্ডপ থেকে দেবী দূর্গাসহ অন্যান্য দেবদেবীকে বের করে নেওয়া হয় কপিলেশ্বরী কালীবাড়ী সংলগ্ন কপোতাক্ষ নদের তীরে বিসর্জন ঘাটে। কপিলমুনি মিলন মন্দির, উত্তর নাছিরপুর পুজামন্দির, কপিলমুনি পূর্বপাড়া হরিসভা পুজামন্দির, সাহাপাড়া পুজামন্দির, নগশ্রীরামপুর মালোপাড়া পুজামন্দির, নোয়াকাটী মালোপাড়া পুজামন্দির, সিংহবাড়ী নাছিরপুর আমতলা পুজামন্দির, কাশিমনগর সাধুপাড়া পুজামন্দির ও কাশিমনগর মালোপাড়া পুজামন্দিরের প্রতিমা কালীঘাটে সারিবদ্ধ ভাবে সাজিয়ে রাখা হয়। এসময় আতশবাজির শব্দ ও ঝলকানিতে গোটা এলাকা মুখরিত হয়ে উঠে। ঘনিয়ে আশা সন্ধ্যায় শুরু হয় বিসর্জন পর্ব। এসময় দেবীদূর্গা ও অন্যান্য দেবদেবীকে কপোতাক্ষ নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। সেখানে ভক্তবৃন্দরা তাদের দূর্গাদেবীকে বিসর্জনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিদায় জানান। এভাবেই দেবী মর্ত্য লোক থেকে আবার স্বর্গলোকে ও মহাময়ী-মমতাময়ী মা দূর্গা তার স্বামীগৃহ কৈলাসে ফিরে গেলেন। সঙ্গে নিয়ে গেলেন ভক্তের আরাধনা, আর দিয়ে গেলেন আর্শীবাদ। দূর্গা এবার এসেছিলেন ঘোড়াই চড়ে। গেলেন ও ঘোড়ায় চড়ে। যাওয়ার সময় চোখের জলে ভাসলেন ভক্তরা। মায়ের প্রতিমা তারা বিসর্জন দেবেন ঠিকই। কিন্তু থেকে যাবে তার রেশ। আগামী এক বছরের জন্য তারা মায়ের বাণী অনুসরণ করে চলবেন।
দূর্গাদেবীকে বিদায় ও বিসর্জন পর্ব সম্পর্কে পাইকগাছা উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আনন্দ মোহন বিশ্বাস বলেন, শুক্রবার মহাষষ্ঠী পুজার আরধনা দিয়ে শুরু হওয়া দূর্গাপুজা মঙ্গলবার বিসর্জনের মধ্যে শেষ হয়েছে। তিনি প্রশাসন সহ পূজায় নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাসহ সকলকে ধন্যবাদ জানান। পাইকগাছা-কয়রা আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আকতারুজ্জামান বাবু ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু, নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আল- আমিন, থানা ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম সহ সকলের সহযোগীতার মাধ্যমে কোন প্রকার অনাকাঙ্খিত ঘটনা ছাড়াই শেষ হয়েছে পাইকগাছা উপজেলায় সনাতন সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপুজা। তবে প্রশাসনের নজরদারী ছিল কঠোর।
বিসর্জন পর্বে উপস্থিত ছিলেন, কয়রা পাইকগাছার সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার প্রেম কুমার মন্ডল, বি এম এর তথ্য গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ডঃ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ জেলা আ,লীগের সদস্য শেখ মনিরুল ইসলাম সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রশীদুজ্জামান মোড়ল, ইউপি চেয়ারম্যান কওছার আলী জোয়ার্দ্দার,কপিলমুনি ইউনিয়ন আ, লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সরদার বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন খোকন, প্রভাষক রেজাউল করিম খোকন, চম্পক কুমার পাল, সাধন চন্দ্র ভদ্র, হিমাদ্রী দে, কপিলমুনি ফাঁড়ি পুলিশের এস আই সাহাজুল ইসলাম বিধান চন্দ্র ভদ্র, কপিলমুনি প্রেসক্লাবের আহবায়ক গাজী আব্দুর রাজ্জাক রাজু, জগদীশ চন্দ্র দে, রামপ্রসাদ পাল, ইউপি সদস্য রবিন অধিকারী, মোড়ল, পবিত্র সাধু, কৃষ্ণেন্দু দত্তসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত অগণিত ভক্তবৃন্দ।