রাজধানীর রূপনগরে অটো রিক্সা চাঁদাবাজ সিন্ডেকেটের মূল হোতা রূপনগরের ত্রাস ভোলা ইলিশা চেয়ারম্যান বাজারের রাসেলকে গ্রেফতার করেছে রূপনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম। অবশ্য এই গ্রেফতারের খবর চাউড় হতেই গা ঢাকা দিয়েছে এই চাঁদাবাজ চক্রের ইন কমান্ড রাসেল-সেলিম চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের সেকেন্ড ইন কমান্ড সেলিম ও সাঙ্গপাঙ্গরা। তবে রাসেল গ্রেফতার হওয়ায় এলাকার সচেতন মহল ও রূপনগরের স্থানিয় মানুষজন সাধুবাদ জানিয়েছে ওসি সাইফুল ইসলাম সহ টিম রূপনগর থানাকে।
এর আগে রাজধানীর রূপনগর চাঁদাবাজীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে রাজধানীর রূপনগর থানায় রাসেল- সেলিম সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন অসহায় ভূক্তভোগী অটোচালক মো: গোলাম আজম।
মিরপুর পল্লবী বা রূপনগরে অটো চালাতে হলে চাঁদাবাজ চক্রের মূলহোতা ভোলার রাসেল ও কথিত সাংবাদিক সেলিমকে দিতে হবে মাসে ১৫শ টাকা করে। অন্যথায় কেউ অটো চালাতে পারবেনা বলেও স্বদলবলে মোটরসাইকেল যোগে হাজির হয়ে নিরীহ ওই অটোচালক গোলাম আজমকে হুমকি ধামকি দেয় ওই রাসেল ও সেলিম, শাহনাজ, আসাদ। ওই সময় রাসেল ও সেলিমের আচার ব্যবহারে অতিষ্ঠ অটোচালক কর্তব্যরত পুলিশের সাহায্যের জন্য পুলিশ পুলিশ বলে চিৎকার করলে চাঁদাবাজ রাসেল ও সেলিম গং “ পরে দেখে নেবো তোর কোন বাপ বাঁচায় ” বলে দ্রুত মোটর সাইকেল যোগে স্বদলবলে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
এদিকে চাঁদাবাজ রাসেল ও সেলিমের এই নগ্ন চাঁদাবাজীর খবর জনৈক ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে চারিদিকে ওঠে নিন্দার ঝড়।
আলোচিত এই ঘটনাটি ঘটে ৯ই অক্টোবর ২০২৩ ইং তারিখ বেলা ১১টা ২০ মিনিটের সময়। পরে হুমকি ধামকী ও চাঁদাবাজীতে ব্যর্থ হয়ে পুলিশের ভয়ে ওই রাসেল গং ও সেলিম ওই মূহুর্তে স্থান ত্যাগ করলেও এখনো পর্যন্ত নানাবিধ পন্থায় মো: গোলাম আজম সহ অসংখ্য অটোচালককে নাজেহাল করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অবশ্য অটোচালক গোলাম আজম ১১ই অক্টোবর আরও কিছু অটোচালক ও স্থানিয় সচেতন মহলের প্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে স্বশরীরে রূপনগর থানায় হাজির হয়ে চাঁদাবাজ রাসেল ও সেলিমের গং এর বিরুদ্ধে একটি এজাহার দায়ের করেন।
অভিযোগ দায়েরকারী ভূক্তভোগী অটোচালক দৈনিক খবরের আলোর এই প্রতিবেদককে বলেন ভোলা থেকে আগত চাঁদাবাজ রাসেল ও সেলিম অন্যান্য অটোচালকদের মতো আমার কাছ থেকেও পরপর তিন মাস ১৫শ টাকা করে আদায় করেছে। তবে আমার ব্যক্তিগত সমস্যা, আর্থিক অভাব অনটন ও একটি পুরাতন অটো ক্রয় করতে যেয়ে ৪র্থ মাসে আমি তাদের ওই ১৫শ টাকা দিতে না পারার কারণে ৯ ই অক্টোবর ২০২৩ ইং তারিখে ৪/৫টি মোটর সাইকেল যোগে দলবল নিয়ে সেলিম বেলা ১১টা ২০ মিনিটে রাজধানীর শিয়ালবাড়ী মোড়ে হাজির হয়ে অটোচালক মো: গোলাম আজমকে ওই হুমকি ধামকি দেয়। যা এখন টক অব দ্যা রাজধানীতে পরিণত হয়েছে।
ঘটনার দিন চাঁদাবাজ রাসেল ও সেলিমের পক্ষে এই চাঁদাবাজ গ্রুপে আরও উপস্থিত ছিলেন, দুয়ারিপাড়া বালু মাঠ এলাকার মঞ্জু মিয়ার ভাড়াটিয়া বরিশাল ভোলার মোজাম্মেল ও শাহনাজের ছেল কারেন্ট দুলাল ওরফে মো: মনোয়ার হোসেন দুলাল, ভোলা ইলিশা চেয়ারম্যান বাজারের বাসিন্দা বর্তমানে ইস্টার্ন হাউজিং এলাকা রূপনগরের ২০০ নম্বর বাসার বাসিন্দা মো: রাসেল (৩৫), মো: শাহজাহান ( ৪২), মো: আসাদ (৩৫) সহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজন।
প্রসঙ্গত উল্খ্যে যে, ভুক্তভোগী অটোচালক মো: গোলাম আজম এর স্থানিয় বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাহপাড়া উপজেলার কয়রা চরপাড়া গ্রামে। তিনি রাজধানীর রূপনগর থানার ২৭ নম্বর রোডের ১১ নং বাসায় থেকে ভাড়ায় অটো চালানোর পেশায় যুক্ত হন।
এ বিষয়ে স্থানিয় অটোচালক সমিতি ও সচেতন মহল কূখ্যাত চাঁদাবাজ রাসেল ও সাংবাদিক সেলিম সহ তার দলের সকলকে গ্রেপ্তার পূর্বক তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হওয়া মাত্রই এক সাড়াশি অভিযান চালিয়ে রূপনগর থানা ওসি সাইফুল ইসলাম সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সসহ ১১ই অক্টোবর রাত ১০টা সময় চাঁদাবাজ চক্রের মূল হোতা ভোলার রাসেলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। অবশ্য এ গ্রেফতারের খবর জানাজানি হতেই গা ঢাকা দিয়েছে রাসেল-সেলিম অটো রিক্সা চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের সেকেন্ড কমান্ড কথিত সাংবাদিক সেলিম, আসাদ, শাহাজাহানসহ এই চক্রের অন্যান্য সদস্যরা।
কূখ্যাত অটো চাঁদাবাজ রাসেল গ্রেফতারের পর রূপনগর থানা ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, ডিএমপি কমিশনার স্যারের নির্দেশে মাদক সন্ত্রাস চাঁদাবাজসহ সকল অসামাজিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমাদের চলমান অভিযান আরও বেগবান করা হয়েছে। অপরাধী যতবড় শক্তিশালিই হোকনা কেনো কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবেনা।