মাত্র আট বছর বয়সী একটি মাদরাসা ছাত্রকে নিয়ে সন্দেহজনক ঘুরাফেরাকালে এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে জনতা। সোমবার (৯ অক্টোবর) বেলা একটার দিকে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের ফাইলেরিয়া হাসপাতাল সংলগ্ন জসিম বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে।
আটক ব্যক্তির নাম গোলাম (৫৫)। সে সৈয়দপুর পৌরসভার ১৪ নং ওয়ার্ডের মিস্ত্রীপাড়া এলাকার বাসিন্দা এবং পৌরসভার সাবেক কর্মচারী। এই ঘটনায় ওই ব্যক্তির সাথে থাকা উদ্ধারকৃত শিশুটির নাম সাহাব (৮)। সে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার কৈমারী এলাকার জনৈক মাহতাবের ছেলে।
জানা যায়, জসিম বাজার মোড় হয়ে সামান্য ফাইলেরিয়া হাসপাতালের দিকে সামান্য এগিয়ে পথের পাশে একটি পরিত্যক্ত চালাঘর আছে। দুপুরের দিকে ওইপথে যাওয়ার সময় আটক ব্যক্তি ও শিশুটিকে নির্জন স্থানে বসে থাকতে দেখে এক ব্যক্তির সন্দেহ হয়। তিনি জিজ্ঞেসাবাদকালে গোলাম কে চিনতে পেরে আরেকজন পথিক এগিয়ে এসে জিজ্ঞেসা করলে গোলাম নিজের নাম নজরুল ইসলাম এবং বাড়ি রংপুরের তাঁরাগঞ্জ বলে। সাথের শিশুটি তার নাতি। তাকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছে। হাপিয়ে পড়ায় বিশ্রামের জন্য এখানে বসেছে।
এমতাবস্থায় তারা আটক গোলাম ও শিশুটিকে কে আলাদা করে জিজ্ঞাসা করে। এতে শিশুটি জানায়, তার বাড়ি জলঢাকায়। নীলফামারিতে দারুস সুন্নাত মাদরাসায় পড়ে। কয়েক সহপাঠী সহ সকালে ট্রেনে সৈয়দপুরে এসেছে। প্রস্রাব করতে যাওয়ায় ফিরতি ট্রেন মিস করায় পরবর্তী ট্রেনের অপেক্ষায় একাকী স্টেশনে বসে ছিল। এসময় লোকটি তাকে আদর করে হোটেলে নিয়ে সিঙ্গারা খাওয়ায়। পরে বিমান বন্দর দেখানোর কথা বলে এখানে নিয়ে এসেছে।
এমন সময় ধলাগাছ সুখী পাড়ার বাসিন্দা ও পৌরসভার পাম্প চালক জাবেদ বাড়ি যাওয়ার পথে গোলাম সহ সাংবাদিকদের দেখে দাঁড়ায়। সে বলে গোলাম পৌরসভায় চাকরি করতো। এখন কি করে জানিনা। তবে আজকে সকাল ৭ টায় নয়াটোলা এলাকায় এই শিশুটিকে নিয়ে বেড়াতে দেখেছি আর এখন এখানে কি করছে। তিনি আরও বলেন, এতো শিশু বলাৎকার করে। এজন্যই মনে হচ্ছে মাদরাসার ছাত্র কে ফুসলিয়ে নিয়ে আসছে।
পরে মুঠোফোনে পৌরসভার সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রুবিনা সাকিলকে কল দিলে তিনি জানান, গোলাম লোকটা খুব খারাপ। কিছু দিন আগে শহরের রাসুলপুর এলাকার এক এতিম প্রতিবন্ধী শিশুকে বলাৎকার করে। ১৫ নং ওয়ার্ডের মিস্ত্রীপাড়ায় ওই ছেলেটিকেসহ গোলাম কে এলাকার যুবকরা আটক করে। আমার কাছে নিয়ে আসলে উপস্থিত শত শত মানুষের সামনে ছেলেটা তার সাথে খারাপ কাজ (বলাৎকার) করার কথা বলে এবং গোলাম তা স্বীকার করে ক্ষমা চায়।
কিন্তু ছেলেটির মা জরিমানা দাবী করে। এসময় গোলাম কৌশলে সটকে পড়ে। পরে আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে উল্টো অপপ্রচার চালায়। বিষয়টি পরে ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মানিক সমাধানের দায়িত্ব নেয়। এরপর কি হয়েছে আর জানিনা। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই মাদ্রাসার ছাত্রটিকেও বলাৎকারের উদ্দেশ্যেই ফুসলিয়ে নিয়ে আসছে।
পরে উপস্থিত লোকজন পুলিশে খবর দিলে গোলাম কে আটক করে থানায় নেয়া হয়। থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মফিজুল হক বলেন, আটক ব্যক্তিকে নীলফামারী আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং ছেলেটির পরিবারে যোগাযোগ করা হয়েছে। তার বাবা আসতেছেন। এসে পৌঁছলে তার হাতে শিশুটিকে তুলে দেয়া হবে।