রাজশাহী জেলার বাঘায় ১০০ টাকা না পেয়ে বাইসাইকেল মেকানিক খাকছার আলী (৪০) নিহতের ১৯ দিন পর আবির হোসেন নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (৭-১০-২০২৩) বিকেলে আদালতে হাজিরের পর ১৬৪ ধারায় জিজ্ঞাসা বাদের সময় বিজ্ঞ ম্যাজিষ্টেটের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার (৬-১০-২০২৩) রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্ত আবির হোসেন উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের দিঘা গ্রামের আসাদুল ইসলামের ছেলে। নিহত খাকছার আলী দিঘা হিন্দুপাড়া গ্রামের মৃত আক্কাছ আলীর ছেলে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে দিঘা বাজারের নিজ দোকানে বাইসাইকেল মেকানিক খাকছার আলী (৪০) খুন হন । এ ঘটনায় নিহতের বড় মেয়ে খাদিজা খাতুন বাদি হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে বাঘা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহতের বড় ভাই কাইছার আলী জানান, খাকছার আলী দিঘা বাজারে বাই সাইকেল মেরামতের কাজ করতো। ঘটনার দিনও দিঘা বাজারে এসে কাজ করছিল। দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে অজ্ঞাত দুস্কৃতিকারিরা নিজ দোকানের ভেতরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।
নিহতের বড় মেয়ে খাদিজা খাতুন জানান, কারো সাথে তার বাবার কোন বিবাদ ছিলনা। নিহতের স্ত্রী চম্পা বেগম বলেন, এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। সাইকেল মেরামতের টাকায় চলতো ৫ সদস্যরে সংসার। উর্পাজনের একমাত্র মানুষটিকে হারিয়ে এখন দিশেহারা। আবির হোসেনের ফাঁসির দাবি করন তারা।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় আবির হোসেন (২৫) নেশার টাকার জন্য তার মাকে নির্যাতনের এক পর্যায় হাসুয়া নিয়ে খুন করতে যায়। বাড়ির লোকজনসহ প্রতিবেশীরা বাধা প্রদান করে। ওই সময় রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বাঘা থানা পরিদর্শক (তদন্ত) সবুজ রানা ও উপ-পরিদর্শক নুর আফসার সেই খবর পেয়ে ওই বাড়িতে প্রবেশ করেন । পরে সন্দেহমূলক খাকছারকে হত্যার বিষয়ে তার কাছে জানতে চান । এসময় আবির জানায়, আমি নেশা করার জন্য ওর কাছে একশ টাকা চেয়ে ছিলাম। সে টাকা না দেওয়ায় আমি তাকে মেরেছি। এরপর হত্যার আলামত ধারালো সেই হাসুয়াসহ তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয়।
এ বিষয়ে বাঘা থানার পরিদর্শক (ওসি) খায়রুল ইসলাম বলেন, বাইসাইকেল মেকানিক খাকছার আলী হত্যাকারী আবির হোসেনের সম্পর্কে প্রতিবেশি দাদা। দাদার কাছে মাত্র ১০০ টাকা চাই। এই টাকা দিতে না চাওয়ায় ক্ষোভে ধারালো হাসুয়া দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় সে। স্থানীয় লোকজন মুখ না খোলা এবং সিসি ফুটেজ না থাকায় কোনভাবেই খুনিকে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছিল না।
তাৎক্ষণকিভাবে এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কাউকে চিহৃত করতে না পারলেও ১৯ দিন পর আসামী চিহিৃত করে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। আবির হোসেন শনিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ১৬৪ ধারায় রাজশাহীর আমলী আদালতে নেওয়া হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে এ হত্যার কথা শিকার করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আসামী আরিব হোসেন একজন মাদকাসাক্ত। সে বাড়িতে, প্রতিবেশি ও নিকট আত্নীয়দের কাছে মাঝে মধ্যে টাকা চাই। টাকা দিতে না পারলে গালমন্দ করত।