বল হাতে ব্যাটারদের জন্য কাজটা আগেই সহজ করে রেখেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। লাল-সবুজের বোলারদের আধিপত্যের দিনে মাত্র ১৫৬ রানের মধ্যেই গুঁটিয়ে যায় আফগানিস্তান। এরপর রয়েসয়েই বাকিটা সেরেছেন লাল-সবুজের ব্যাটাররা। মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাজমুল হোসেন শান্তর সাবলীল ব্যাটিংয়ে রশিদ-নবিদের বিপক্ষে ৯৯ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটের দাপুটে জয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করলো সাকিব আল হাসানের দল।
আফগানদের দেওয়া ১৫৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। লিটনের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে রান-আউটের ফাঁদে কাটা পড়েন তানজিদ। জাদরানের সরাসরি থ্রোয়ে বিদায়ের আগে ১২ বলে ৫ রান করেন তরুণ এই ওপেনার।
এরপর ক্রিজে আসেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তবে ইনিংসের সপ্তম ওভারে বোলিংয়ে এসে আফগানদের আবারও সাফল্য এনে দেন ফারুকি। দলীয় ২৭ রানে ১৮ বলে ১৩ রান করা লিটনকে আউট করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।
লিটনের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তৃতীয় উইকেট জুটিতে মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। সাবলীল ব্যাটিংয়ে ৫৮ বলে ফিফটি তুলে নেন মিরাজ। অন্যদিকে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন শান্ত। তবে প্রথমবারের মতো তিনে নেমে ব্যক্তিগত অর্ধশতক হাঁকানোর পরই ব্যক্তিগত ৫৭ রানে বিদায় নেন মিরাজ।
মিরাজের বিদায়ের পরপর ক্রিজে নেমে আগ্রাহী মেজাজে খেলতে থাকেন লাল-সবুজের দলপতি সাকিব। চতুর্থ উইকেটে শান্তর সঙ্গে ২২ রানের জুটি গড়ে ব্যক্তিগত ১৪ রানে ফেরেন সাকিব। অন্যপ্রান্ত ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে বাংলাদেশের নিশ্চিত জয়ের আভাস দেন শান্ত। আর শান্তর অপরাজিত ৫৯ রানের ইনিংসে ৩৪ দশমিক ৪ ওভারে ৬ উইকেটের বড় জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের।
এর আগে, ধর্মশালায় হিমাচল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করেন আফগানিস্তানের দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। তবে দলীয় পঞ্চাশে আগেই আফগানদের ওপেনিং জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। নবম ওভারে সাকিবের বলে তানজিদের হাতে ক্যাচে দিয়ে বসেন জাদরান। সাজঘরে ফেরার আগে ২২ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
এরপর রহমত শাহকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন গুরবাজ। কিন্তু আফগান শিবিরে আবারও আঘাত হানেন সাকিব। ১৬তম ওভারের প্রথম বলে কাভারে লিটনের হাতে ক্যাচ তুলে দেন রহমত। ২৫ বলে ১৮ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে গুরবাজের সঙ্গে আফগানদের টেনে নেওয়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক শহীদি। ৩৯ রানের জুটি গড়ে চাপ শামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন তারা। তবে এই জুটি ভাঙেন অফ-স্পিনার মিরাজ।
মিরাজের অফ-স্টাম্পের বাইরের বল টেনে মারতে চেয়েছিলেন শহীদি। তবে প্লেসমেন্টটা ঠিকঠাক না হওয়ায় ৩৮ বলে ১৮ রানে তাওহিদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আফগান দলপতি।
পরের ওভারেই আরেকটি সাফল্য পায় বাংলাদেশ। এবার ওপেনার গুরবাজকে ফেরান মুস্তাফিজ। অফ-স্টাম্পের বাইরে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন এই ব্যাটার। তবে ক্যাচ উঠে ডিপ-পয়েন্টে। আর তা তালুবন্দি করতে ভুল করেননি তানজিদ। ৪ চার ও এক ছক্কায় ৪৭ রানে ফেরেন এই ওপেনার।
এরপর দ্রুতই নাজিবুল্লাহ জাদরানকেও ফেরায় বাংলাদেশ। এরপর দায়িত্ব নিতে পারেননি নবিও। পরে আর প্রতিরোধ করতে পারেননি কোনো আফগান ব্যাটারই।
শেষ দিকে আজমতুল্লাহ ওমরজাইয়ের ৪ বাউন্ডারিতে ২২ এবং রশিদের ৯ রানের সুবাদে ৩৭ দশমিক ২ ওভারে ১৫৬ রানের পুঁজি পায় আফগানরা।
বাংলাদেশের হয়ে মিরাজ ও সাকিবের শিকার তিনটি করে উইকেট। এ ছাড়া শরিফুল দুটি এবং তাসকিন ও মুস্তাফিজ একটি করে উইকেট নিয়েছেন।