বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে কিছুটা সাবলীলভাবেই খেলছিল আফগানিস্তান। উদ্বোধনী জুটিতে ৪৭ রানের জুটি গড়ে ভালো কিছুর ইঙ্গিতই দিচ্ছিল তারা। তবে ওপেনিং জুটি ভেঙেই গর্জে ওঠে টাইগার বোলাররা। দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে আফগানদের দুইশ’ রানের আগেই আটকে দিল সাকিব আল হাসানের দল। কোনোমতে দেড়শ’ রান পার করে আফগানরা।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৩৭.২ ওভারে ১৫৬ রান তুলে গুটিয়ে গেছে আফগানিস্তান। অর্থাৎ জিততে হলে ১৫৭ রান করতে হবে টাইগারদের। বোলিংয়ে বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত এটাই বাংলাদেশের সেরা পারফরম্যান্স। এর আগে ২০১১ সালে নেদারল্যান্ডসকে ১৬০ রানে অলআউট করেছিল টাইগাররা। অবশ্য ২০১৫ বিশ্বকাপে এই আফগানিস্তানকে ১৬২ রানে অলআউট করেছিল বাংলাদেশ।
শনিবার (৭ অক্টোবর) ধর্মশালায় হিমাচল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু করে আফগানিস্তানের দুই ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। এই দুই ব্যাটারের জুটিতে দলীয় পঞ্চাশের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল তারা।
তবে দলীয় ৪৭ রানে আফগানদের ওপেনিং জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। নবম ওভারে সাকিবের বলে তরুণ তানজিদ হাসান তামিমের হাতে ক্যাচে দিয়ে বসেন ইবরাহিম জাদরান। সাজঘরে ফেরার আগে ২২ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
এরপর রহমত শাহকে নিয়ে দলকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন গুরবাজ। কিন্তু আফগান শিবিরে আবারও আঘাত হানেন বিশ্বসেরা টাইগার অলরাউন্ডার সাকিব। ১৬তম ওভারের প্রথম বলে কাভারে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। রহমত ২৫ বলে ১৮ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন।
এরপর গুরবাজের সঙ্গে তৃতীয় উইকেট জুটিতে আফগানদের টেনে নেওয়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শহীদি। তৃতীয় উইকেটে তারা দুজনে মিলে ৩৯ রানের জুটি গড়ে চাপ শামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তবে এই জুটি ভাঙেন অফ স্পিনার মিরাজ।
২৫তম ওভারে মিরাজের অফ স্টাম্পের বাইরের বল টেনে মারার চেষ্টা ছিল শহীদির। তবে প্লেসমেন্টটা ঠিকঠাক হয়নি, ক্যাচ যায় তাওহিদ হৃদয়ের হাতে। ৩৮ বলে ১৮ রানে ফেরেন আফগান দলপতি। এর ঠিক পরের ওভারটিতেই আরেকটি সাফল্য পায় বাংলাদেশ।
এবার মুস্তাফিজ ফেরান ওপেনার গুরবাজকে। অফ স্টাম্পের বাইরে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন ব্যাটার। তবে ক্যাচ উঠে যায় ডিপ পয়েন্টে। তালুবন্দি করতে ভুল হয়নি তানজিদ হাসানের। ৪৭ রানে ফেরেন গুরবাজ। ৬২ বলে ৪টি চারের সঙ্গে ছয় ১টি মারেন আফগান ওপেনার।
এরপর দ্রুত নাজিবুল্লাহ জাদরানকেও ফেরায় বাংলাদেশ। তাকে ছাঁটাই করে নিজের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন সাকিব। তার বলে ফ্লিক করতে গিয়ে ফ্লিক করতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান নজিবুল্লাহ (৫)। নবিও দায়িত্ব নিতে পারেননি। তাসকিন আহমেদের অফস্টাম্পের বাইরে রাখা বলে কাট করতে গেলে ব্যাটের কানায় লেগে স্টাম্প ভাঙে নবির (৬)। ফলে লেজ বেরিয়ে যায় আফগানদের। বড় চাপে পড়ে যায় আফগানরা।
এরপর আর প্রতিরোধ করতে পারেনি কোনো ব্যাটারই। আজমতুল্লাহ ওমরজাই কিছুটা চেষ্টা করেছিলেন ৪টি বাউন্ডারি মেরে ২২ রান করেছিলেন তিনি। বড় ক্ষতি করার আগে তাকে বোল্ড করে দেন শরিফুল ইসলাম। ফলে দেড়শরা কাছেই থাকে বাংলাদেশের লক্ষ্য।
বোলিংয়ে বাংলাদেশের হয়ে ৩টি করে উইকেট শিকার করেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসান। ২টি উইকেট পান শরিফুল ইসলাম। এছাড়া একটি করে উইকেট পান তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান।