রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরইউজে) সভাপতি রফিকুল ইসলামের ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন পুঠিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমনউজ্জামান। শনিবার দুপুরে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে তিনি হাতজোড় করে ক্ষমা চান।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের পুননির্বাচিত মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের উপস্থিতিতে সেখানে সমঝোতা বৈঠক হয়। এ সময় যুবলীগ নেতা সুমনউজ্জামান সংগঠন থেকে বহিষ্কার করার সুপারিশ করা হবে বলে জানান আওয়ামী লীগের নেতারা।
বৈঠকে এ এইচ এম খায়রুজ্জামান বলেন, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। তাঁরা জাতির বিবেক। সমাজে তাঁরা যদি আক্রান্ত হন, তাহলে সেটি দেশ ও সমাজের জন্য মোটেও সুখকর বিষয় নয়। যুবলীগ-ছাত্রলীগ যেই হামলা চালাক না কেন, কেউ সংগঠনের ঊর্ধ্বে নয়। সাংবাদিক নেতা রফিকুলের ওপর মিছিল থেকে অত্যুৎসাহীরা হামলা চালিয়েছেন, তা স্পষ্ট। আমরা তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। ওই যুবলীগ নেতাকে বহিষ্কারের জন্যও কেন্দ্রে সুপারিশ করব। আর যেন কোনো রাজনৈতিক নেতা–কর্মীর দ্বারা কোনো সাংবাদিক আক্রান্ত না হন, সে বিষয়ও খেয়াল রাখতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য মনসুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হক, সহসভাপতি তৈয়বুর রহমান, সাবেক সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান খান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব রাশেদ ইবনে ওবায়েদ, রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী হাসান, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন রাজশাহী শাখার সভাপতি আসাদুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল হক, সুমনউজ্জামান সুমনের বাবা বেলপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান প্রমুখ।
রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আমার ওপর হামলা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। কারণ, হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া সুমনউজ্জামানের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি ও এক ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যাচেষ্টার বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছিলাম। শনিবার বহু লোকের মধ্যে হামলাকারী (সুমনউজ্জামান) পায়ে পড়ে মাফ চেয়েছেন। এরপর তাঁকে ক্ষমা করে দিয়েছি।
গত শুক্রবার বিকেলে পুঠিয়ার বানেশ্বর এলাকায় মিছিল থেকে আরইউজে সভাপতি রফিকুল ইসলামের ওপর হামলা হয়। এ সময় যুবলীগ নেতা সুমনউজ্জামানের নেতৃত্বে দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা করা হয় এবং রফিকুলের প্রাইভেট কারটি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্যরাসহ রাজশাহীতে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন।