সপ্তাহের একদিন প্রতি বুধবার বসে আলমডাঙ্গার পশুহাট। বৃহত্তর এই পশুহাটটি যেমন অত্র এলাকার ঐতিহ্য, তেমনি হাজারো মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের প্রাণকেন্দ্র এটি।
অপরদিকে শত শত পূর্বে স্থাপিত দোতালা স্টেশন ও উঁচু রেললাইনও আলমডাঙ্গাবাসীর আরেকটি ঐতিহ্য ও গর্বের কারন।
কিন্তু উভয় ঐতিহ্য এখন যেন এলাকাবাসীর গলার কাটা।
সচেতন মহলের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ ।
কারন আলমডাঙ্গা রেললাইনে বসছে অবৈধ মহিষের হাট।
যা প্রতিনিয়ত ঝুঁকি বাড়াচ্ছে সংশ্লিষ্ট সকলের। বার বার উঁচু লাইনে উঠানামায় মহিষের পায়ের (খুরের) আঘাতে লাইনে তোলা মাটির ক্ষয় হচ্ছে। ব্রিটিশ শাসনের সময় নিচু ভূমিতে মাটি তুলে রেললাইন স্থাপন করলে আজ অব্দি নষ্ট না হলেও, বর্তমানে লাইনের অস্তিত্ব সংকটাপন্ন।
ট্রেন চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকির পাশাপাশি যেকোন মুহুর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোন ধরনের অনুমোদন ছাড়াই এই রেললাইনের উপর হাট বসছে।
স্টেশন মাস্টারের নাজমুল ইসলাম বলেন অবৈধভাবে বাজারটি পরিচালনা করছে হাট মালিকরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনের সিনিয়র সাব এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সাইদুল ইসলাম বলেন” হাট বসার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন”, পরে প্রমাণ সাপেক্ষে বিষয়টি উপস্থাপন করলে ” বলেন হাটটি অবৈধ, এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান,” এটি একটি জন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হওয়ার সত্ত্বেও আজও কেন জানেন না এই প্রশ্ন করলে তড়িঘড়ি করে ফোন কেটে দেন, পরে যোগাযোগ করেও তাকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি।
পৌরসভার আওতাধীন থাকায় রেললাইন দখল করে বসছে পশুর হাট। রেললাইনের উপর অবৈধভাবে পশুর হাট বসিয়ে বছরের পর বছর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন কিছু ইজারাদার।
বিক্রেতারা সিগন্যাল, রেলের স্লিপার বা পয়েন্টের চাবির সঙ্গে মহিষ বেঁধে বিক্রি করছেন।
অনেকে পশু নিয়ে রেললাইনের ওপরেই বসে থাকেন।
এছাড়াও পশু মূত্র / গোবর ত্যাগের কারনে রেললাইন পিচ্ছিল হয়ে গেল যেকোনো সময় ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। হাটের কারণে অতিরিক্ত মানুষের আনাগোলায় ও মহিষের চলাচলে লাইনের পাথর হারিয়ে যাচ্ছে,ফলে ট্রেন চলার ক্ষেত্রে এটিও হতে পারে অন্যতম দুর্ঘটনা কারণ । আবার হুইসেল বাজিয়ে ট্রেন এলেও বাজার অতিরিক্ত শব্দের কারণে চলন্ত ট্রেন অস্তিত্ব বুঝতে পেরে নিরাপদে অবস্থান করার জন্য শুরু হয় এদিক সেদিক ছুটোছুটি। এতে করে যেকোন মুহুর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ট্রেন লাইনচ্যুত হলেই শত শত মানুষের প্রাণের সংশয় দেখা দিবে।
পাশাপাশি দুর্ঘটনার ফলে কোন একটি পশুর মৃত্যুতে একটি গরিব পরিবার হতে পারে অর্থনৈতিকভাবে সর্বস্বান্ত।
তাই এলাকাবাসী ও সচেতন মহলের দাবি রেললাইন দখলের কারণে ট্রেন চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে। অনতিবিলম্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে উভয়পক্ষের নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিত করবেন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসক ও নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মেহেদী ইসলাম বলেন, ” এ ব্যাপারে আরো অনেক অভিযোগ পেয়েছি, স্থান সংকলনের কারণে ব্যাপারটি ঘটছে।আলমডাঙ্গার পশু হাটটি অত্র এলাকার মধ্যে বৃহত্তর হাওয়ায় এর একটি ঐতিহ্য রয়েছে, তাই এই ঐতিহ্য রক্ষার্থে স্থানান্তরের জন্য এর চেয়ে বড় কোন জায়গা পাওয়া যাচ্ছেনা । তবে বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন দিন বলে জানান। “