নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সভাপতি
মোঃ মহসিন ওরফে বাবু কবিরাজের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের নিয়োগ বানিজ্য সহ সীমাহীন অনিয়ম, দূর্নীতি, সেচ্ছচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে দূর্নীতি দমন কমিশন দুদক সহ বিভিন্ন দপ্তরে একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিগত সময়ে তুলারামপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে নৈশ প্রহরী হিসাবে কর্মরত ছিলেন এই মহসিন।নিজ এলাকায় বিদ্যালয় থাকায় শুরু থেকে প্রভাব বিস্তার করে আসছিল এই মহসিন। এক পর্যায়ে চাকরি ছেড়ে বিদ্যালয়ে দাদাগিরি করার লক্ষ্যে রাতরাতি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বনে যান ধুরন্ধর মহসিন। লেখাপড়ায় মাধ্যমিকের গন্ডি পার করতে পারিনি। অথচ,
সভাপতি হয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কা না করে খামখেয়ালি ভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা করেন। সহকারী শিক্ষকদের সাথে বিভিন্ন সময় অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।শিক্ষকরা মাসিক বেতন পেলে বিভিন্ন অজুহাত তাদের নিকট হতে টাকা ধার নেন। পরে আর দেন না। পাওনা টাকা ফেরত চাইলে তাকে নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এই সাবেক সভাপতি মহসিন। তার আপন ভাই টিপু সুলতান এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ায় সেই দাপটে যা খুশি তাই করেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, বিদ্যালয়ের নামে মোট ৭৫ শতক জায়গা থাকলে ও বিদ্যালয়ের দখলে আছে মাত্র ২৫ শতক জায়গা। বাকি জায়গা জবর দখল করে রেখেছেন এই সভাপতি । এমনকি বিদ্যালয়ের জমির পরিমান ও প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র কোন কিছু প্রধান শিক্ষকের নিকট নেই। সভাপতি নিকট রয়েছে সরকারি এই মূলবান কাগজপত্রগুলো। নতুন প্রজ্ঞাপনে সভাপতি বাতিল হলে ও তার বাহাদুরি কমেনি। খবর দারি চালিয়ে যাচ্ছেন রীতিমত। এ যাবৎকাল কোন শিক্ষক কর্মচারি এমনকি স্থানীয় বাসিন্দারা ভয়ে কেউ মুখ খোলোনি। এছাড়াও বিগত সময়ে জেলা পরিষদ ও বিভিন্ন দপ্তরের বরাদ্দকৃত অর্থ নামমাত্র কাজ করে সমুদয় টাকা আতসাৎ করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, নিয়োগে গ্রন্থগার পদে জেসমিন আরার কাছ থেকে ৬ লাখ, পরিছন্নতাকর্মী পদে শান্তা ইসলাম নিকট হতে থ ৭লাখ, আয়া পদে পাপিয়ার নিকট হতে ৭ লাখ এবং নিরাপত্তা কর্মী পদে অনুপ বিশ্বাসের নিকট হতে ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
সহকারী শিক্ষক ফজলুর রহমান বলেন,দীর্ঘ দিন ধরে বিদ্যালয়ে অনিয়ম, দূর্নীতি চলছে।কেউ তার অনিয়মের প্রতিবাদ করে না। এখন সরকার সভাপতি বাতিল করেছেন। আশা করি নতুন সভাপতি বিদ্যালয়ের সম্পত্তি পূর্ণউদ্ধার করবেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, মধু চৌধুরী বলেন, আমি হিন্দু মানুষ। কোন জামেলার ভিতর আমি নাই।
অভিযুক্ত বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি মহসিন ওরফে বাবু কবিরাজ বলেন, আমার নামে যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটি সঠিক না।
স্থানীয় বাসিন্দারা সাবেক এই সভাপতির দূর্ণীতি অনিয়ম, সেচ্ছাচারিতার সঠিক তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।