সাপটিকে দেখে অজগর মনে করে ভুল ভাবতেই পারেন। আবার সাধারন সাপও ভাবতে পারেন। আর এইটুকু ভুলেই চলে যেতে পারে একটি সুন্দর জীবন। এই সাপটি আগে রাজশাহী বিভাগের কয়েক টা জেলায় দেখা যেত। দ্রুত বংশ বিস্তার করা এই সাপটি এখন দেশের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক হারে দেখা মিলেছে। সাথে সাথে ঢাকা, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, বরিশাল, ভোলা, যশোর, খুলনা, কুষ্টিয়া, শরীয়তপুর, মাদারীপুর সহ পদ্মা তীরবর্তী অঞ্চল গুলোতে এই সাপের দেখা পাওয়া গেছে। আর এটাও অমুলক নয় যে ভারতে প্রচুর পরিমাণে এই সাপ রয়েছে হঠাৎ বন্যার কারনে বন্যার পানিতে স্রোতের সাথে ভেসে ভারত/নেপাল থেকেও এই সাপ গুলো আসতে পারে।
এবার সাপটি সম্পর্কে জানা যাকঃ-এই বিষধর সাপটির নাম রাসেল’স ভাইপার যেটা বাংলায় বলা হয় চন্দ্রবোড়া। সাপটি দেশের বিষধর সাপ গুলোর মধ্যে সবার উপরে থাকবে বলা যেতেই পারে। এই রাসেল’স ভাইপার সাপটি কামড় দেওয়ার ৩০-৬০ মিনিটের মধ্যে এভিএস দিতে না পারলে নিশ্চিত মৃত্যু। আবার শরীরে পচন ধরা থেকে শুরু করে কিডনী নষ্ট করে দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। বুঝতেই পারছেন কতটা বিষধর এই রাসেল’স ভাইপার সাপটি? সময় মতো এন্টিভেনম ভ্যাকসিন না দিতে পারলে ফলাফল নিশ্চিত মৃত্যু। দেশের সকল সরকারী হাসপাতালে এন্টিভেনম থাকার কথা থাকলেও সকল সরকারী হাসপাতালে এন্টিভেনম ভ্যাকসিন সাপ্লাই আছে কিনা আমার জানা নাই।
সর্তকতাঃ-মনে রাখবেন, কোন সাপের বিষই কোন ওঝা নামাতে পারে না তাই কোন রকম ওঝার কাছে গিয়ে সময় নষ্ট করবেন না। ওঝারা সাপের বিষ নামানোর ভুয়া অভিনয় করে শুধুমাত্র টাকা কামানোর জন্য। আক্রান্ত রোগীকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিন। বাংলাদেশে অনেক প্রজাতির সাপ আছে তার মধ্যে হাতে গোনা ৪/৫ টি সাপ আছে বিষধর। যে গুলো মানুষকে কামড় দিলে মানুষ মারা যেতে পারে। বাকী সাপ গুলো কামড় দিলে সেই সাপের বিষে মানুষকে তেমন কোন ক্ষতি করতে পারে না। তবে রাসেল’স ভাইপার বাংলাদেশের সকল সাপের থেকে অনেক বেশী বিষধর।
করনীয়ঃ-বাড়ীর আনাচে কোনাচে জঙ্গল পরিস্কার পরিছন্ন রাখুন। ঘরের আশপাশ ব্লিসিং পাউডার ছিটিয়ে রাখুন। রাতে ঘুমানোর আগে মশারী ও খাটের নিচে দেখে নিন। কৃষক ভাইয়েরা ধান কাটার আগে জোরেশোরে শব্দ করুন এবং বড় লাঠির সাহায্যে যতোটুকু পারেন ধানের গোড়ায় নাড়া দিয়ে নিন। সর্বশেষ পরামর্শ সাবধানতার সহিত চলাফেরা করুন। মনে রাখবেন, সচেতনতাই পারে একটি জীবন রক্ষা করতে….আপনাদের সকলে কে ধন্যবাদ।।