আলম চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীরা পার করছেন ব্যস্ত সময়। ভোট যতই এগিয়ে আসছে ভোটের মাঠে হচ্ছে নানা মেরুকরণ! তবে নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে নেই তেমন আগ্রহ। এবারের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতের কোন প্রার্থী না থাকায় লড়াই হবে আওয়ামী লীগের ৫ প্রার্থীর মধ্যে । উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে একাধিক মানুষ জানিয়েছন মূলত দু’তিন জন প্রার্থীর মধ্যে হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই।
সে ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত কে বসবেন উপজেলার কাঙ্খিত এ চেয়ারে এই মুহূূর্তে তার সঠিক হিসেব দিতে পারছেন না কেউ।
জেলার আলমডাঙ্গায় এবারের উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২১ মে। নির্বাচন তফসিল ঘোষনার আগে বিএনপি জামায়াত নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন শোনা গেলেও পরে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে নির্বাচনে আসেননি বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীরা। তবে আওয়ামী লীগের ৫ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন দোয়াত কলম, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক নির্বাহী সদস্য নুরুল ইসলাম কাপ পিরিচ,জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক জিল্লুর রহমান ঘোড়া প্রতিক ,সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মঞ্জিলুর রহমান মোটর সাইকেল ও ঢাকা উত্তর আওয়ামীলীগের দারুস সালাম থানা কমিটির যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মমিন চৌধুরী ডাবু আনারস প্রতিক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন । প্রতিক বরাদ্দের পর থেকেই প্রার্থীরা তাদের কর্মি সমর্থক নিয়ে নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন।
আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন নির্বাচনের মাঠে নেমেছেন অনেক আগে থেকেই । নির্বাচন নিয়ে পারিবারিক ভাবে প্রথম দিকে পিছিয়ে থাকলেও এখন অনেকটাই গোছালো অবস্থানে এসেছেন। সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মিরা তার সাথে যোগ দেওয়ায় তিনি হয়েছেন উজ্জীবিত।
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নির্বাহী সদস্য নুরুল ইসলাম রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক ও শিক্ষানুরাগী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তিনি হারদী ইউনিয়নের দুই বারের সাবেক চেয়ারম্যান। তার হাত দিয়ে হারদীতে গড়ে উঠেছে একটি বিশাল শিক্ষানগরী। উপজেলা জুড়েই মানুষের মাঝে তার একটা ভালো অবস্থান রয়েছে। সম্প্রতি জেলা যুবলীগের সিদ্ধান্তে আলমডাঙ্গার যুবলীগ নেতৃবৃন্দ নুরুল ইসলামের পক্ষে মাঠে নেমেছেন। এছাড়াও দলের অনেক নেতা কর্মি তার পক্ষে প্রকাশ্যে মাঠে না নামলেও তার প্রতিই অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেউ কেউ জানিয়েছেন।
আলমডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর আওয়াামী লীগ,ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সহযোগি সংগঠন এবারের নির্বাচনে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ঢাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হারদী গ্রামের মঞ্জিলুর রহমানের পক্ষে মাঠে নেমেছেন। বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরাও তার পক্ষে কাজ করছেন। ফলে উপজেলা জুড়ে একটা বিশাল কর্মি বাহিনী তিনি পেয়েছেন। প্রত্যেক ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে চলছে তার নির্বাচনী কার্যক্রম।
অন্যদিকে জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক জিল্লুর রহমান বিগত নির্বাচনে নৌকা প্রতিক নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেনের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। এবারও তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচনে তার পক্ষে মাঠে নেমেছেন বিগত সংসদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালার অধিকাংশ কর্মি সমর্থক। জিল্লুর রহমান পাচ্ছেন তাদের জোরালো সমর্থন। তিনি উপজেলার গ্রামে গ্রামে গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন।
আঃ মমিন চৌধুরী ডাবু ঢাকা উত্তর আওয়ামীলীগের দারুস সালাম কমিটির যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক। একাধিক মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে কুমারী গ্রামের সন্তান মমিন চৌধুরী ডাবু দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করে আসছেন। সাধারণ মানুষের সাথে রয়েছে তার সু-সম্পর্ক। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে রয়েছে আত্মীয়তার সুত্র। তিনি ঢাকায় অবস্থানকালে আলমডাঙ্গা উপজেলার মানুষের আপদ- বিপদে পাশে দাঁড়ান । এলাকার মানুষের পাশে আরও নিবিড় ভাকে থাকতেই তিনি নির্বাচনে প্রার্থী। গ্রামে গ্রামে তিনি কর্মি সমর্থক নিয়ে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন নির্বাচনে মূলত দু’তিন প্রার্থীর মধ্যেই হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই । সে ক্ষেত্রে কোন ইউনিয়নে যেমন মঞ্জিলুর রহমান আবার কোন ইউনিয়নে জিল্লুর রহমান এগিয়ে থাকবেন। প্রার্থীর এলাকা ভিত্তিক স্ব স্ব ইউনিয়ন যেমন আইয়ুব হোসেন,নুরুল ইসলাম,মমিন চৌধুরী ডাবু নিজ নিজ ইউনিয়নে এগিয়ে রয়েছেন বলে তাঁরা মনে করেন । এসব প্রার্থীদের মধ্যে যে প্রার্থী অন্য ১৪ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় অবস্থান ভালো করতে পারবেন তিনিই পরবেন জয়ের মালা।
অন্য ইউনিয়ন গুলোতে কোন প্রার্থী থাকবেন এগিয়ে? প্রত্যেক ইউনিয়ন প্রতি প্রার্থীরই কম বেশি ভোট রয়েছে। তবে সাংগঠনিক ভাবে আওয়ামীলীগ একটি শক্তিশালী সংগঠন। যেহেতু আওয়ামী লীগ কে,এম মনঞ্জিলুর রহমানের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন । ঐক্যবদ্ধভাবে যদি আওয়ামীলীগ মাঠে নামে সেক্ষেত্রে মঞ্জিলুর রহমানের অবস্থান হবে আর সুদৃঢ় এবং শক্তশালী । আর বিগত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দিলীপ কুমার আগরওয়ালার সমর্থকদের ঐক্যবদ্ধ করে মাঠে নামাতে পারলে জিল্লুর রহমানও কোন দিক থেকে পিছিয়ে থাকবে না।
শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে কোন প্রার্থী সবকিছু গুছিয়ে নিজেকে সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে গিয়ে বিজয়ের মালা গলায় পরে বিজয়ের হাসি হাসবেন তা দেখতে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে নির্বাচন ফল গণনার সময় পর্যন্ত।
এ জাতীয় আরো খবর ....