মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের সৈয়দপুরের ফুলহার ও চিত্রকোট ইউনিয়নের গোয়ালখালী ও সূর্যনগর গ্রামের মধ্যবর্তী ধলেশ্বরি নদীর পাড়ে সরকারী খাস জমির মাটি কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বেশ কয়েকটি মাটি খেকো সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরে সরকারী জমির মাটি বিক্রি করে চলেছে স্থানীয় বেশ কয়েকটি মাটি খেকো সিন্ডিকেট। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, রাজানগর ও চিত্রকোট ইউনিয়নের মধ্যবর্তী ধলেশ্বরী নদীর পাড়ের বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃত সরকারী খাস জমির মাটি ভেকু দিয়ে কেটে নদীর পাড়ে জমাট করছে স্থানীয় মাটি খেকো সিন্ডিকেটের সদস্যরা। প্রতিদিন ভোরে নদীর পাড়ে জমাট করা মাটি ট্রলার যোগে বিভিন্ন ইট ভাটার মালিকদের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। দিনের পর দিন সরকারী খাস জমির মাটি অবাধে বিক্রি করা হলেও প্রশাসনিক ভাবে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না মর্মে অভিযোগ স্থানীয়দের। এদিকে শেখরনগর তদন্ত কেন্দ্রের বেশ কয়েকজন অসাধু পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় দলীয় বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা মাটি খেকো সিন্ডিকেটের সদস্যদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসওয়ারা নিয়ে তাদের মাটি কেটে বিক্রিতে সহযোগীতা করছেন মর্মেও অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে স্থানীয় সাংবাদিকদের একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে প্রথম দিকের কিছুক্ষন মাটি কেটে বিক্রির কর্মযজ্ঞ চললেও খানিক পর একে একে মাটি খেকো সিন্ডিকেটের সদস্যরা মাটি কাটার যন্ত্র ভেকু রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকারী খাস জমির মাটি কেটে বিক্রির সিন্ডিকেটের প্রধান হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছে চিত্রকোট ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ হালিম ও রাজানগর ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ বাবুল ও একই গ্রামে মোঃ মহি নামের দুই ব্যক্তি। দীর্ঘদিন দিন ধরে মোঃ বাবুল, মোঃ মহি ও হালিম নামের ব্যক্তিদের সিন্ডিকেটসহ আরো বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট মাটি কেটে বিক্রির অবৈধ কর্মযজ্ঞের সাথে সরাসরি জড়িত থেকে অবাধে মাটি বিক্রি করে চলেছেন। দিনের পর দিন সরকারী খাস জমির মাটি বিক্রি করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেও প্রশাসনিক ভাবে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না মর্মে অভিযোগ তোলেন স্থানীয় এলাকাবাসী। সরকারী খাস জমির মাটি কেটে বিক্রি বন্ধে স্থানীয় লোকজন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামণা করেন। মাটি খেকো সিন্ডিকেটের প্রধান মোঃ মহির সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি পুলিশকে ম্যানেজ করে মাটি বিক্রির কথা স্বীকার করেন। কথোপকথনের এক পর্যায়ে তিনি প্রতিবেদককে চায়ের নিমন্ত্রণের মাধ্যমে সংবাদটি যাতে প্রকাশ না পায় সে জন্য ম্যানেজের চেষ্টা করে বর্থ হন।
চিত্রকোট ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল হুদা বাবুল মুঠোফোনে বলেন, এখানে বেশ কয়েকমাস ধরে চিত্রকোট ও রাজানগরের কয়েকটা সিন্ডিকেট মাটি কেটে বিক্রি করছে। গতকাল এসিলেন্ড মহোদয় এসেছিলেন কয়েকজন আনসার নিয়ে। এখানে এসে তাদেরকে পায়নি। সিন্ডিকেটের লোকজন পুলিশ ও স্থানীয় দু’একজন দলীয় নেতাকর্মীকে টাকা পয়সা দিয়ে ম্যানেজ করে মাটি কেটে যাচ্ছে। আমিও চাই সরকারী খাস জমির মাটি কাটা বন্ধে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
এ ব্যপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাবিবা ফারজানা মুঠোফোনে বলেন, কিছুদিন ধরে এখানে কয়েকটি চক্র ধলেশ্বরী নদীর মাটি কেটে বিক্রি করে দিচ্ছে এমন খবরে গতকাল রবিবার ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করি, আমাদের সেখানে যাওয়ার খবর পেয়ে আগেই তারা ছিটকে পড়ে। এ কারণে কাউকে ভ্রাম্যমান আদালতের আওতায় আনতে পারিনি। তবে সেখানে থাকা সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত করে এসেছি,আমরা ওই এলাকায় যারা মাটি বিক্রির সাথে জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করছি।