আমি নদীর কাছে গিয়েছিলাম
নদী বলল, তুমি আমার মত!
আমি নদীর পাশে পায়ে পায়ে
চলতে শুরু করলাম-
কখনো খরস্রোতা, কখনও গভীর।
তারপর একদিন মনে হল
আমি তো নদী নই,
তবে কেন আমার এই নদীর মত চলা!
আমি গেলাম পাহাড়ের কাছে
পাহাড় আমাকে আপন করে নিল।
বলল তুমি আমারই মত
স্থানু, অবিনশ্বর, অবিচল!
আমি ভাবলাম আরে তাইতো,
অবিচলতাই আমার ধর্ম এবং কর্ম
কেন যে শুধু শুধু নদীর মত চলে
বৃথা জীবন মাটি হল!
চলছিল বেশ অবিচল দিনযাপন!
তবু একদিন একদিন সব ধৈর্য
ভেঙে গেল!
আমি ধূলায় গুড়িয়ে গেলাম!
ছিলাম কিছুদিন ধূলায় মিশে।
তারপর বারবার যৌবন ফিরে পাওয়া
বৃক্ষরাজি আমায় আহ্বান করল!
বলল চলে এসো আমাদের দলে
দেখো আমরা তোমারই মত
বারবার মরি আবার
বারবার বেঁচে উঠি!
মনে হল ঠিক, আমি তো সত্যি বৃক্ষ।
শিকড় বিস্তৃত করা পত্রপল্লবিত!
হেমন্তে রঙীন, শীত এলে পাতা ঝরে যায়,
বসন্তে আবার শোভিত!
এই তো আমি, এইতো আমার জীবন।
তবু সইল না আমার বৃক্ষ জীবন।
মনে হল আমি নই, আমি নই
শিকড় গেড়ে থাকা গাছেদের মত!
ভাবলাম, হয়ত পাখি আমি উড়ে চলি
দেশ থেকে দেশান্তর!
আবার মনে হল, আমি আকাশ।
একসময় ভাবলাম আমি আকাশ কেন হব
আমি চাঁদ!
তারপর মনে হয় কোন গ্রহের
মাধ্যাকর্ষণে আবদ্ধ কোন উপগ্রহ
হবার মত ঘূর্ণন ক্ষমতা নেই আমার!
নই আকাশ কিংবা চাঁদ
গাছ কিংবা পাখি অথবা নদী, পাহাড়!
আমি এক অবাক সূর্যোদয়!
শুধুই সূর্যোদয়!
লেখক: সাংবাদিক নেতা, সংগঠক, সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ।।