রাজশাহীতে শুরু হয়েছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের হাওয়া। এ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য জেলার ৯টি উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে অর্ধশতাধিক প্রার্থী তৎপরতা শুরু করেছেন। অধিকাংশ প্রার্থীই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য দলের হাইকমান্ডকে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
তবে সোমবার দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক থাকবে না। ফলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি উন্মুক্ত হয়ে পড়েছে। এতে প্রার্থীর সংখ্যাও বাড়বে বলে মনে করছেন তারা।
২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি। ফলে নির্বাচনের মাঠে আলোচনায় নেই স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ কারণে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাই নির্বাচনে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রত্যেকটি উপজেলায় চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যান (নারী ও পুরুষ) পদে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকরা।
গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ:
গোদাগাড়ীতে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম এবারও প্রার্থী হচ্ছেন। এছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান বদি, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ, কাকনহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল মজিদ, গোদাগাড়ী পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি রবিউল আলম, ভাইস চেয়ারম্যান ও গোদাগাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক, দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা যুবলীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক বেলাল উদ্দিন সোহেল, গ্রোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মজিবুর রহমান, এবং সাবেক সরকারি কর্মকর্তা সুনন্দন দাস রতন আলোচনায় রয়েছেন।
তানোর উপজেলা পরিষদ:
তানোরে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না এবারও প্রার্থী হতে চান। তিনি ছাড়াও এ উপজেলায় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন বর্তমান নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোনিয়া সরদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাইনুল ইসলাম স্বপন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া শরিফুল ইসলাম। এদের মধ্যে শরিফুল ইসলাম স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী ও মুন্ডুমালা পৌরসভার সাবেক মেয়র গোলাম রাব্বানির ভাই।
পবা উপজেলা পরিষদ:
পবায় বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলী এবারও প্রার্থী হচ্ছেন। তিনি ছাড়াও এ উপজেলায় সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়ার আলোচনায় আছেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদ আলী খান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল, সদস্য ফারুক হোসেন ডাবলু, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি এমদাদুল হক এমদাদ, পারিলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল বারী ভুলু, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল হক তোতা।
মোহনপুর উপজেলা পরিষদ:
মোহনপুরে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম এবারও প্রার্থী হবে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। এছাড়াও এ উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে পারেন বলে আলোচনায় আছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মেহেবুব হাসান রাসেল, জেলা যুবলীগ নেতা মোর্শেদ হাসান রঞ্জু, ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন বকুল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সোহরাব আলী খান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সদস্য এনামুল হক।
বাগমারা উপজেলা পরিষদ:
বাগমারায় বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল কুমার সরকার এবারও প্রার্থী হতে চান। তিনি ছাড়াও সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়ার আলোচনায় রয়েছেন এ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাকিরুল ইসলাম সান্টু, রাজশাহী বারের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন মৃধা এবং সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা খাতুন।
দূর্গাপুর উপজেলা পরিষদ:
দুর্গাপুরে বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম এবারও প্রার্থী হতে আগ্রহী। তিনি ছাড়াও এবার সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়ার আলোচনায় আছেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ সরদার, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক প্রদ্যুৎ কুমার সরকার, দুর্গাপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান শরিফ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ইস্তাজুল ইসলাম বাপ্পী এবং দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম।
পুঠিয়া উপজেলা পরিষদ:
পুঠিয়ায় বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জিএম হীরা বাচ্চু এবারও নির্বাচন করতে আগ্রহী। তিনি ছাড়া এখানে সম্ভাব্য প্রার্থী হওয়ার আলোচনায় রয়েছেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মুকুল, জেলা পরিষদের বর্তমান সদস্য আসাদুজ্জামান মাসুদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার রহিম কনক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক।
চারঘাট উপজেলা পরিষদ:
চারঘাটে বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম এবারও প্রার্থী হতে চান। তিনি এছাড়াও এবার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া বিপ্লব ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি কাজী মাহমুদুল হাসান মামুন সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন।
বাঘা উপজেলা পরিষদ:
বাঘায় বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক লায়েব উদ্দিন লাভলু এবারও প্রার্থী হবেন। তিনি ছাড়াও এ উপজেলা সম্ভাব্য প্রার্থীর আলোচনায় আছেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদ আল মাসুদ হোসেন তুহিন।