শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের ফেদুল্লা বেপারীর কান্দি নদীর ওপর নির্মিত সাঁকোটি দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে ৫৩ বছর ধরে চলাচল করছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।
কারণ বাঁশ দিয়ে তৈরি প্রায় ৪শ মিটার লম্বা সাঁকোই তাদের একমাত্র ভরসা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে পারাপারের সময় পানিতে পড়ে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে অহরহ।
স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান মাদবর বলেন , সাঁকোতে ঝুঁকি থাকায় বয়স্ক ও নারীদের পারাপার আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। জরুরি প্রয়োজনে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য দীর্ঘ পথ ঘুরে সড়কে উঠতে হয়। তারপরও প্রতিদিন হাজারো মানুষের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম বাঁশের সাঁকো।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা তাইজুল ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, ‘নির্বাচন এলেই এলাকার জনপ্রতিনিধিরা এখানে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ভোটে পাস করার পর প্রতিশ্রুতির কথা আর মনে থাকে না। কত জনপ্রতিনিধি আসলো কিন্তু কেউ কথা রাখেনি।
জানা গেছে, প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ শাখা নদীর এক মাথা পদ্মার সঙ্গে যুক্ত হলেও আরেক মাথা জাজিরা এলাকায় গিয়ে প্রায় ভরাট হয়ে কৃষি জমিতে পরিণত হয়েছে। প্রায় আধা কিলোমিটার প্রসার হলেও নদীটি দিনে দিনে ভরাট হয়ে যাওয়ায় অনেকে কাছে এটি নিচু জলা ভূমি, অনেকে একে বাওর বলে থাকে। বর্ষীয় এই নদীতে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে। তবে শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে এলে এর বুকের বিভিন্ন স্থানে জেগে থাকা জমিতে চাষাবাদ করেন কৃষকেরা।
পদ্মার শাখা নদীটি রুপবাবুর হাট ও ফেদুল্লা বেপারীর কান্দি গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ায় দুই পাশের ১০টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে এবং জাজিরা সদরে আসতে হচ্ছে।
পূর্ব নাওডোবা ইইপি চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন খান বলেন, নদীতে একটি সেতু না থাকার বিষয়টি এ অঞ্চলের মানুষের জন্য এটা চরম দুর্ভোগের। সেতুটি নির্মাণ হলে পালেরচর, পূর্ব নাওডোবা, বড় কান্দি, কুন্ডেরচর, মাঝিরচর, বি কে নগর এলাকায় বড় ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা হবে। এ জন্য আমি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলব।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ইমন মোল্লা বলেন, আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করে পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের নদীর উপর সেতু নির্মানের ডিজাইন প্রস্তুত করেছি। আশা করি খুব দ্রুতই সেতুটি আমরা বাস্তবায়ন করতে পারবো।